ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৩৫৩ কোটি টাকা

বিদ্যুত সঞ্চালন লাইন নির্মাণসহ সাত প্রকল্প একনেকে অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ১৯ নভেম্বর ২০১৪

বিদ্যুত সঞ্চালন লাইন নির্মাণসহ সাত প্রকল্প একনেকে অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিদ্যুত সঞ্চালন লাইন নির্মাণসহ ৭টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা। এ ছাড়া একটি প্রকল্পের শুধু নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, পরিকল্পনা সচিব ভুঁইয়া সফিকুল ইসলাম, পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আরাস্তু খান, কৃষি পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য শফিকুল আজমসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, ভুলতা-আশুগঞ্জ ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৮৫৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। তাঁত বস্ত্রের উন্নয়নে ফ্যাশন ডিজাইন, ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ও ১টি বেসিক সেন্টার স্থাপন প্রকল্প, বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৩৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। মদন-খালিয়াজুড়ি সাবমার্জিবল সড়ক নির্মাণ এবং নেত্রকোনা মদন খালিয়াজুড়ি সড়কে ৩৭তম কিলোমিটারে বালাই নদীর ওপর পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্প, মোট ব্যয় ১০৪ কোটি ১ লাখ টাকা। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ বিভাগের ৬০টি তদন্ত কেন্দ্র টাইপ প্ল্যানে নির্মাণ প্রকল্প, ব্যয় হবে ১৭৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি সংস্কার ও আধুনিকায়ন প্রকল্প, বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৫৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য হোস্টেল নির্মাণ প্রকল্প, ব্যয় হবে ৫৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকা এবং মর্ডানাইজেশন এ্যান্ড স্ট্রেংদেনিং দ্য ডিপার্টমেন্ট অব ইন্সপেকশন ফর ফ্যাক্টরিজ এ্যান্ড ইস্টাবলিশমেন্টস অব নাইন ডিস্ট্রিক্ট অফিস প্রকল্প, বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৭২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। উপকূলীয় শহর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পটির নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন,আশুগঞ্জ-ভুলতা ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন প্রস্তাব পাওয়ার পর প্রকল্পটির বিষয়ে গত ৪ আগস্ট পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিদ্যুত বিভাগ উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায়। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা শহরে যথেষ্ট পরিমাণে বিদ্যুত সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এ প্রেক্ষিতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগের প্রকল্পটির বিষয়ে বিস্তারিত সম্পর্কে জানা গেছে, আশুগঞ্জ থেকে ঢাকায় বিদ্যুত আনতে সঞ্চালন ব্যবস্থা শক্তিশালীর করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে আশুগঞ্জ থেকে ভুলতা পর্যন্ত ৪০০ কেভি এবং ভুলতা থেকে রামপুরা পর্যন্ত ২৩০ কেভি দ্বৈত সার্কিট লাাইন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ফলে আশুগঞ্জে স্থাপিতব্য ২ ী ৪৫০ মেগাওয়াট সাইকেল বিদ্যুত কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুত অবমুক্ত করা হবে এবং রামপুরা ২৩০/১২০ কেভি উপকেন্দ্রের মাধ্যমে ঢাকা শহরে যথেষ্ট পরিমাণে বিদ্যুত সরবরাহ করা হবে। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, আশুগঞ্জ গ্যাস সঞ্চালন ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এখানে বিশেষ করে বাখরাবাদ ও জিটিসিএলের স্থাপনায় কিছু পাইপলাইন একত্রিত হয়েছে। তাই আশুগঞ্জ গ্যাসের চাপ বেশি রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আশুগঞ্জে বিদ্যুত কেন্দ্র এলাকায় আরও কিছু গ্যাসচালিত বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২২৩ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং ২ গুণ ৪৫০ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনের কাজ পরিকল্পনাধীন রয়েছে। আশুগঞ্জ থেকে উৎপাদিত এ বিদ্যুত ইভাকুয়েট করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। উৎপাদিত এই বিপুল পরিমাণ বিদ্যুত বর্তমান সঞ্চালন কাঠামোর মাধ্যমে ইভাকুয়েট করা সম্ভব হবে না। ঢাকা শহরের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে অনেক বেশি। এ চাহিদা পূরণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ জন্য পিজিসিবির প্ল্যানিং দফতরে লোড ফ্ল স্টাডিতে বিভিন্ন কেস বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আশুগঞ্জ থেকে ভুলতা পর্যন্ত ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট লাইন এবং ৪০০/২৩০ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণ করে নতুন বিদ্যুত কেন্দ্রগুলোর বিদ্যুত ইভাকুয়েশন করা সম্ভব। তাছাড়া প্রস্তাবিত ভুলতা ৪০০/২৩০ কেভি উপকেন্দ্রে বিদ্যমান ঘোড়াশাল-রামপুরা ও হরিপুর-রামপুরা লাইনের ইন-আউটের মাধ্যমে রামপুরা ২৩০/১৩২ উপকেন্দ্রেও বিদ্যুত সরবরাহের মাধ্যমে ডাকা শহরে যথেষ্ট পরিমাণে বিদ্যুত সরবরাহ করা যাবে এবং নতুন করে ২ী৪৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুত ইভাকুয়েট করা সম্ভব। এ জন্য প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
×