ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিলেট ফুটবল একাডেমি নিয়ে সালাউদ্দিনের স্বপ্ন

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১১ নভেম্বর ২০১৪

সিলেট ফুটবল একাডেমি নিয়ে সালাউদ্দিনের স্বপ্ন

রুমেল খান ॥ অনেক প্রতীক্ষা ও তিন বছর বিলম্বের পর অবশেষে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে সিলেট ফুটবল একাডেমি। আগামী ১৩ নবেম্বর উদ্বোধন করা হবে সিলেটে নির্মিত বাংলাদেশের প্রথম ফুটবল একাডেমিটি। একাডেমির উদ্বোধন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। থাকবেন ফিফার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট কর্মকর্তা শাজি প্রভাকরন বা ফিফা থেকে আগত অন্য কোন প্রতিনিধি। ‘এই ফুটবল একাডেমিটি নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন আছে। সেগুলো পূরণের পথে এগোতে চাই ধাপে ধাপে। এটা শুরু হতে অনেক দেরি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু শুরু তো হয়েছে! এটাই বড় কথা। এ জন্য আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে।’ কথাগুলো কাজী মোঃ সালাউদ্দিনের। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) এই সভাপতি নিজেও ছিলেন ফুটবলার। বলা হয়ে থাকে, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের সেরা ফুটবলার হচ্ছেন তিনি। কিন্তু ১৯৮৪ সালে সালাউদ্দিন ফুটবল থেকে অবসর নেয়ার পর এখন পর্যন্ত তাঁর মানের কোন ফুটবলার এখনও দেখা যায়নি। তবে সিলেট ফুটবল একাডেমি থেকে যেসব ফুটবলার প্রশিক্ষণ নেবে, তারা একসময় বাংলাদেশের ফুটবলকে অনেক উঁচু আসনে অধিষ্ঠিত করাবে বলে বিশ্বাস করেন দেশীয় ফুটবলের এই জীবন্তু কিংবদন্তি, ‘আগামী ১৩ নবেম্বর হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। ভবিষ্যতের ফুটবলারদের তৈরির লক্ষ্যে এগোনোর প্রথম ধাপটি সম্পন্ন হতে যাচ্ছে। এই একাডেমির জন্য সিলেটই হচ্ছে পারফেক্ট প্লেস!’ সালাউদ্দিন আরও জানান, এই ফুটবল একাডেমির বিস্তারিত কার্যক্রম ও পরিকল্পনা নিয়ে তিনি কয়েক সপ্তাহ পরেই বিস্তারিত সবকিছু জানাবেন। অনেকদিন ধরেই অর্থ সঙ্কটে ভুগছে বাফুফে। এই একাডেমি চলবে কিভাবে? ‘প্রতিমাসে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা দরকার একাডেমি চালাতে। এখনও অনেক ইক্যুইপমেন্টই কেনা হয়নি। আমার হাতে যদি ৫ কোটি টাকা থাকে, তাহলে একাডেমিটি অনেক উঁচু স্তরে নিয়ে যেতে পারতাম।’ সালাউদ্দিন আরও জানান, ‘শুরুতে অনেক ঝামেলা থাকবেই। এগুলো আস্তে আস্তে দূর হয়ে যাবে।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে বাফুফে সভাপতি বলেন, ঢাকা থেকে এটি দূরে হওয়ায় অনেকেই অনেক কথা বলেন। আসল কথা হলো মানুষের ইচ্ছে। ইচ্ছে থাকলে মানুষ যে কোন জায়গায় গিয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। এখানে দূরত্ব কোন বিষয় নয়। একাডেমির জমি নিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যে সমস্যা হয়েছিল, সেটাও মিটে গেছে। তিনি আরও বলেন, ‘ফুটবল উন্নয়নে ৩৯ কোটি টাকার প্রজেক্ট এনএসসি এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। এখন এটা পাস হওয়া না হওয়া তাদের ব্যাপার। আমি আমার কাজ করে দিয়েছি।’ বাফুফে সূত্রে জানা গেছে, একাডেমির অবকাঠামো তৈরি প্রায় শেষ। একাডেমির জন্য নির্বাচিত ৪০ ফুটবলার নিয়ে শুরু হচ্ছে একাডেমির কার্যক্রম। সোমবার তাদের নিয়ে সিলেটযাত্রা করেন বাফুফের চার কোচ আব্দুর রাজ্জাক, আবু রাহেল, সৈয়দ গোলাম জিলানী ও মাহবুব হোসেন রক্সি। এই ৪০ ফুটবলারের ২০ জন হচ্ছে অনুর্ধ-১৩ ও বাকি ২০ জন হচ্ছে অনুর্ধ-১৬ বয়সী। সিলেটে যেসব ক্ষুদে ফুটবলার গেছে, তাদের সম্পর্কে কোচ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বাচ্চাদের অভিভাবকরা আমাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে। তবে পিএসসি পরীক্ষা বা লেখাপড়া নিয়ে অনেক অভিভাবকই চিন্তিত ছিলেন, এ জন্য তাদের বোঝাতে হয়েছে। ওখানে প্লেয়ারদের লেখাপড়ার যেন ব্যাঘাত না ঘটে, সেজন্য একটি স্কুলে ওদের এ্যাডমিশনের ব্যবস্থা করা হবে।’
×