ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাহাজ শিল্পে দক্ষ জনবল তৈরির উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১০ নভেম্বর ২০১৪

জাহাজ শিল্পে দক্ষ জনবল তৈরির উদ্যোগ

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ জাহাজ নির্মাণ শিল্পের দক্ষ জনবল তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য মেরিন টেকনোলজি ইনস্টিটিউট সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে ক্রমবর্ধমান দক্ষ জনশক্তির চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫ কোটি ৪৭ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। প্রক্রিয়ারকণ শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে বলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে মতামত দিতে গিয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য হুমায়ুন খালেদ জানান, মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে দেশ ও বিদেশে ক্রমবর্ধমান জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি একনেক অনুমোদন যোগ্য। প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, নির্মাণ ও সংস্কার কাজ, ফার্নিচার ক্রয়, প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি ও মালামাল ক্রয়, দুটি ডিপ্লোমা কোর্স এবং চারটি ট্রেড কোর্স চালুকরণ এবং প্রশিক্ষণার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য দেশে ও বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ক্রমাগত জনসংখ্যা এবং বেকারত্ব বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হলো, নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণ, দারিদ্র্য বিমোচন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা। প্রস্তাবিত এ প্রকল্পের মাধ্যমে উৎপাদনক্ষম ও কর্মমুখী জনশক্তি তৈরি করা হবে। যাতে তারা আয় করে দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহ করতে পারে। বলা হয়েছে বাংলাদেশ একটি শ্রমিক উদ্বৃত্ত দেশ হলেও বিভিন্ন খাতে দক্ষ ও ম্যানেজারিয়াল পর্যায়ের জনশক্তির অভাব রয়েছে। দক্ষ জনশক্তির ঘাটতির ফলে উৎপাদন ও উন্নয়নে প্রতিবদ্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। চাহিদার তুলনায় প্রতিবছর স্বল্প সংখ্যক দক্ষ জনশক্তিকে বিভিন্ন ট্রেনিং ইনস্টিটিউট থেকে গ্র্যাজুয়েটকরা সম্ভব হচ্ছে। শিল্প কারখানায় কর্মরতদের অতি অল্প সংখ্যককে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। বহির্বিশ্বে কাজের জন্য কিছু জনশক্তি চলে যাচ্ছে। কিন্তু চাহিদা এবং যোগানের সঙ্গে সমন্বয় রেখে জনশক্তি তৈরি করা হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে ক্ষুদ্র পরিসরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি দক্ষ জনশক্তির চাহিদা মিটিয়ে থাকে। এ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা দেশে ও বিদেশে চাকরির সুযোগ পাচ্ছে এবং চাকরি প্রাপ্তির হার শতভাগ। বাংলাদেশের উদীয়মান জাহাজ নির্মাণ শিল্পের চাহিদা মেটাতে ইনস্টিটিউটটি দক্ষভাবে পরিচালনার কোন বিকল্প নেই। এটি তৈরি হয়েছিল ১৯৫৮ সালে। দীর্ঘদিন পার হওয়ায় অনেক স্থাপনা সংস্কার ও কিছু কিছু যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এসব কারণে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটি প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম জানান, দক্ষশক্তি তৈরির লক্ষ্যে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। আশা করা যায় এখান থেকে প্রশিক্ষিত জনবল প্রায় সকলেরই দেশে ও বিদেশে কর্মসংস্থান হবে। সুতরাং প্রকল্পটি চলমান ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বছরভিত্তিক অর্থ বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১১ কোটি ৬০ লাখ ৪২ হাজার টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য ১৭ কোটি ৯ লাখ ৪২ হাজার টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য ১৭ কোটি ১৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৯ কোটি ৬৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা।
×