ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আসছে সাবিনা লাকীর দ্বিতীয় এ্যালবাম

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ৯ নভেম্বর ২০১৪

আসছে সাবিনা লাকীর দ্বিতীয় এ্যালবাম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এই সময়ে অন্যতম প্রতিশ্রুতিশীল সঙ্গীতশিল্পী সাবিনা লাকী। প্রথম একক এ্যালবামের সাফল্যের পর সম্প্রতি নিজের দ্বিতীয় একক এ্যালবামের কাজ শুরু করেছেন। তাঁর দ্বিতীয় একক এ্যালবামের বিভিন্ন গানের কম্পোজিশন করছেন আরেক তরুণ সঙ্গীত পরিচালক রবীন। এ্যালবামটি খুব শীঘ্রই প্রকাশ পাবে বলে জানিয়েছেন শিল্পী। সাবিনা লাকীর প্রথম একক এ্যালবাম ‘পরদেশী বাবু’ ২০১১ সালে বাজারে আসে সঙ্গীতার ব্যানারে। এ্যালবামে গান ছিল মোট দশটি। ভিন্ন আঙ্গীকে সাজানো ‘পরদেশী বাবু’ এ্যালবামের গানগুলোর সুর ও সঙ্গীত পরিচালনা করেন শরীফ শাহ। এ্যালবামের গানগুলোর কথা লিখেছেন যথাক্রমে নানা সেলিম, বাঁশার খান, জিএম খলিল ও ডিএম হাবিব প্রমুখ। ভিন্ন স্বাদের হওয়ায় এ্যালবামের গানগুলো শ্রোতার বেশ পছন্দ করেন। এরই ধারাবিকতায় সাবিনা তাঁর নিজের এ্যালবামের পাঁচটি গানের মিউজিক ভিডিওর কাজও সম্পন্ন করেছেন। শিল্পী সাবিনা বর্তমানে নিয়মিতভাবে স্টেজ শো করছেন। বেতার ও টেলিভিশনেও নিয়মিত গান করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের আধুনিক গানের শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত সাবিনা লাকী। তবে নজরুল ও রবীন্দ্রসঙ্গীত ছাড়াও আধুনিক ও ফোক ঘরানার গানও করেন। গানের প্রতি তাঁর নেশা এত প্রবল যে একসঙ্গে প্রায় শতাধিক গান গাইতে পারেন। গানের পাশাপাশি ক্ল্যাসিক্যাল নৃত্যেও সমান পারদর্শী। ছোটবেলায় তিনি নাচ করেও অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। তবে গানকেই পেশা হিসেবে নিয়েছেন তিনি। গানের সঙ্গে সেই ছোট বেলা থেকেই বসবাস সাবিনার। চার-পাঁচ বছর বয়সেই বাবার উৎসাহে গানের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি হয় তাঁর। চিকিৎসক বাবা ডা. একেএম সামসুদ্দীন আহমেদ গানের চর্চাও করতেন। তাই ছোট বেলায় বাবার কাছে গানে হাতেখড়ি সাবিনার। ওই সময় থেকেই বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ওস্তাদ শ্রী বিলেশ্বর সাহা, গৌরাঙ্গ চন্দ্র কর্মকার, সুকলাল সঙ্গীত বিদ্যাপীঠে ওস্তাদ বিনয় পাল ও সন্ধ্যা পালের কাছে গানের তালিম নেন। স্কুল জীবনে একাডেমিক পুরস্কার এবং নতুন কুঁড়িসহ কয়েকটি জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার পান। এতে সঙ্গীত সাধনায় উৎসাহ বেড়ে যায় সাবিনার। কলেজে পড়াকালীন খুলনা বেতারে আধুনিক ও রবীন্দ্রসঙ্গীতের শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। সেখানে ওস্তাদ শেখ আলী আহমেদের কাছে সঙ্গীতে প্রশিক্ষণ নেন। পরবর্তীতে দেশের প্রথিতযশা সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান ছায়ানটে নজরুলসঙ্গীতের ওপর বিশেষ কোর্স সম্পন্ন করেন। একই ধারাবাহিকতায় হিন্দোল থেকে ওস্তাদ জাকির হোসাইন ও খালিদ হোসাইনের কাছে নজরুল ও ধ্রুপদি সঙ্গতে দীক্ষা নিয়ে নিজের মেধাকে আরও শাণিত করেন। তবে সঙ্গীত চর্চার ক্ষেত্রে জীবন সঙ্গী জাকির হোসাইন তাঁকে যারপরনাই উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। নিয়মিত সঙ্গীত চর্চার পাশাপাশি শিল্পী সাবিনা লাকী সমাজ সচেতন মানুষ হিসেবে কয়েকটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছেন। এর মধ্যে সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন শুভজন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ ওমেন বিজনেস ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সদস্য, কুক এ্যান্ড ফুড ক্যাটারিং সার্ভিস ও মুর্ভাস এন শর্পাস জিমের স্বত্বাধিকারী এবং ওয়েস্টার্ন মিউজিক একাডেমির শিক্ষক তিনি। নিজের সঙ্গীত চর্চা প্রসঙ্গে সাবিনা বলেন, আমার বাবা ছিলেন একজন সঙ্গীতপ্রিয় মানুষ। মূলত তাঁর অনুপ্রেরণা ও উৎসাহেই আমার গানের পথে আসা। এছাড়াও আমার মা খাদিজা সামসুদ্দীন এবং বড় বোন তামান্না জেসমিনও আমাকে গানের প্রতি প্রেরণা যুগিয়েছেন। তিনি বলেন, বোন তামান্না জেসমিনও শিল্পী এবং সে খুব ভাল গানও লেখে। আর গানতো মানুষের জীবনে অনেক বড় একটি মাধ্যম ও পরিবহন। সে পরিবহনের মাধ্যমে একজন শিল্পী সঙ্গীত ভালবাসা মানুষ এবং শ্রোতাদের জীবনে অনেক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। গানের মাধ্যমে আমার শ্রোতাদের কিছুটা হলেও আনন্দ দিতে পারলে সেটিই আমার সঙ্গীত জীবনের সার্থকতা। বাগেরহাটের মেয়ে সাবিনা লাকী গার্হস্থ্য অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর। রান্না করতে ভাল বাসেন। এছাড়া বিদেশ ভ্রমণও তাঁর শখ। ইতোমধ্যে থাইল্যান্ড, প্যারিস, দার্জিলিং ঘুরে এসেছেন। তাঁর প্রিয় শিল্পী দেশে সাবিনা ইয়াসমিন, সামিনা চৌধুরী, বাইরে লতা মুঙ্গেশকর, মান্না দে। সঙ্গীতে অনন্য প্রতিভা সাবিনা লাকীর জন্মদিন আজ। তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। সঙ্গীত জগতে শিল্পীর পথচলা আরও সুদৃঢ় ও মসৃণ হোক এই প্রত্যাশা।
×