ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

টানা চার জয়ে শেষ ষোলোতে চ্যাম্পিয়ন রিয়াল

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৬ নভেম্বর ২০১৪

টানা চার জয়ে শেষ ষোলোতে চ্যাম্পিয়ন রিয়াল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অপ্রতিরোধ্য ছন্দ ধরে রেখে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলে শেষ ষোলো (নকআউট পর্ব) নিশ্চিত করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। মঙ্গলবার ‘বি’ গ্রুপের ফিরতি ম্যাচে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা ১-০ গোলে পরাজিত করে ইংলিশ ক্লাব লিভারপুলকে। গ্যালাক্টিকোদের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন ফ্রান্সের তারকা স্ট্রাইকার করিম বেনজেমা। টানা চার জয়ে শিরোপা ধরে রাখার পথে একধাপ এগিয়ে গেল রিয়াল মাদ্রিদ। এটি সব ধরনের প্রতিযোগিতায় তাদের টানা ১২তম জয়। দ্য রেডসদের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলে গৌরবময় মাইলফলক স্পর্শ করেছেন রিয়াল অধিনায়ক ও গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াস। এখন চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ১৪৪ ম্যাচ খেলার কৃতিত্ব তাঁর। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড থেকে এক গোল দূরে রোনাল্ডো। বর্তমানে শীর্ষে থাকা রাউল গঞ্জালেসের গোলসংখ্যা ৭১। আর রোনাল্ডোর ৭০। পরশু গোল না পাওয়ায় তাই অপেক্ষা বেড়েছে ফিফা সেরা ফুটবলারের। দারুণ ধারাবাহিক পারফরমেন্স প্রদর্শন করা বেনজেমা দুঃসময় পেরিয়ে ‘বার্নাব্যু‘ জয় করতে পেরেছেন। ম্যাচে জয়সূচক গোল করার পর কোচ শেষদিকে তাঁকে উঠিয়ে নিলে সে সময় স্টেডিয়ামের দর্শকরা উঠে দাড়িয়ে বেনজেমাকে সম্মান জানান। দুই ম্যাচ হাতে রেখে নকআউট পর্বের টিকেট নিশ্চিত করলেও দলের পারফর্মেন্সে সন্তুষ্ট হতে পারেননি রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলোত্তি। অন্যদিকে বেহাল লিভারপুল আগেই যেন হাল ছেড়ে দিয়েছে! রিয়ালের বিরুদ্ধে ম্যাচের একাদশেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। গ্রুপের আরেক ম্যাচে বুলগেরিয়ার ক্লাব লুডোগোরেটস রাজগ্রাডকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে শেষ ষোলোর স্বপ্ন দেখছে সুইস ক্লাব এফসি বাসেল। ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষে থাকা রিয়ালের ১২ পয়েন্টের পর দুইয়ে থাকা বাসেলের পয়েন্ট ৬। ‘সি’ গ্রুপ থেকে নকআউট পর্বের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে জার্মান ক্লাব বেয়ার লেভারকুসেন। পরশু এ্যাওয়ে ম্যাচে লেভারকুসেন ২-১ গোলে হারায় স্বাগতিক রাশিয়ার ক্লাব জেনিট সেইন্ট পিটার্সবার্গকে। গ্রুপের আরেক ম্যাচে পর্তুগালের বেনফিকা ১-০ গোলে পরাজিত করে ফরাসী ক্লাব মোনাকোকে। এই গ্রুপে শীর্ষে থাকা লেভারকুসেনের পয়েন্ট ৯। ৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে মোনাকো। আগের ম্যাচেই এ্যানফিন্ড থেকে অধরা জয় পায় রিয়াল। খরা ঘোচানো গোল পান ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। সবমিলিয়ে পরশুর ম্যাচে আগে টানা ১১ জয়ে প্রতিপক্ষের জালে ৪৬ বার বল পাঠিয়েছিলেন রিয়ালের তারকারা। এসব কারণে ঘরের মাঠ সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে আরও একটি বড় জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নেমেছিল আনচেলোত্তির দল। কিন্তু লিভারপুল গোলরক্ষক সিমোন মিগনোলেটের দৃঢ়তায় এবার বড় ব্যবধানে জয় পায়নি চ্যাম্পিয়নরা। অবশ্য ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আধিপত্য বিস্তার করে খেলে লস ব্লাঙ্কোসরা। চতুর্থ মিনিটে জেমস রড্রিগুয়েজের প্রচেষ্টা রুখে দেন দ্য রেডস গোলরক্ষক। ১১ মিনিটে রোনাল্ডোর রেকর্ডের অপেক্ষায় থাকা গোলপ্রচেষ্টা নস্যাত করে দেন সিমোন। সি আর সেভেনের ক্ষিপ্রগতির শট ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিহত করেন তিনি। ম্যাচের ২৭ মিনিটে তুখোড় ফর্মে থাকা বেনজেমার গোলে এগিয়ে যায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। প্রতিপক্ষের ডি বক্সের সামনে ধীর গতির খেলায় মুহূর্তের মধ্যে গতির সঞ্চার করে রিয়াল। ইস্কোর বাড়ানো বল পেয়ে দ্রুত ডি বক্সে ঢুকে গোল মুখে ক্রস দেন ব্রাজিলের লেফট ব্যাক মার্সেলো। দ্রুতগতিতে এসে পা ছুঁইয়ে গোল করেন বেনজেমা। এরপর আরও বেশ কয়েকটা সহজ সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি রোনাল্ডো, রড্রিগুয়েজরা। যে কারণে ন্যূনতম ব্যবধানে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় রিয়ালকে। আগামী শনিবার চেলসির বিরুদ্ধে প্রিমিয়ার লীগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচকে সামনে রেখে লিভারপুল কোচ ব্রেন্ডন রজার্স মূল একাদশের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে বাইরে রেখেই দল সাজান। বাদ পড়াদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন অধিনায়ক স্টিভেন জেরার্ড ও মারিও বালোতেল্লি। দুই সপ্তাহ আগে এ্যানফিল্ডে মাদ্রিদের কাছে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পরও রজার্স যেন এই ম্যাচে ফিরে আসার কোন তাগিদ অনুভব করেননি! ম্যাচ শেষে দল নির্বাচন নিয়ে সমালোচনাকে উড়িয়ে দিয়ে রজার্স বলেন, ভাল পারফর্মেন্স সত্ত্বেও ম্যাচের ফলাফলে আমরা সত্যিই হতাশ। বিশ্বের সেরা দলের বিরুদ্ধে নিজেদের রক্ষা করার ক্ষেত্রে এবার আমরা এগিয়ে ছিলাম। যে দলটি প্রতিটি ম্যাচেই পাঁচ থেকে ছয়টি গোল করে তাদের আটকে রাখা সত্যিকার অর্থেই কঠিন। আমি মনে করি এই ম্যাচ থেকে পয়েন্ট না পাওয়াটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যের। এখানে এমন অনেক দলই এসেছে যাদের জন্য প্রথম ২০ মিনিটেই ম্যাচ শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের কৌশল ও পরিকল্পনায় অন্তত ড্র পাওয়া উচিত ছিল। রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলোত্তি বলেন, আমি মনে করি আমরা ভালই খেলেছি। যদিও ম্যাচের গতি ততটা ভাল ছিল না। প্রথমার্ধেই আমরা গোল পেয়েছি। তারপর থেকে কোন ঝুঁকি ছাড়াই আমরা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছিলাম।
×