ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পুলিশের আচরণ

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ২৬ অক্টোবর ২০১৪

পুলিশের আচরণ

পুলিশ জনগণের বন্ধু। জনগণকে পুলিশ সাহায্য করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে এই পুলিশই যদি সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তাহলে ব্যাপারটি অবশ্যই চিন্তার বিষয় হয়ে ওঠে। তাদের অপকর্মের কথা মাঝে মধ্যেই শোনা যায়। এসব কথা প্রকাশিত ও প্রচারিত হয় নানা মিডিয়ায়। অপরাধ দমন করা তথা অপরাধীকে আটক করা যাদের কাজ তাদেরই কেউ কেউ যদি অপরাধেই জড়িয়ে পড়ে তাহলে তার চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কি হতে পারে! পুলিশের নানা অপকর্মের কথা আগেও শোনা গেছে, এখনও শোনা যাচ্ছে। অতি সম্প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাজধানীর বিভিন্ন থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের কেউ কেউ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়ছে। কারও কারও মুখের ভাষাও অশালীন। প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, শেরে বাংলা নগর এলাকায় অটোরিকশা চালকের পরিবারের সঙ্গে অপরাধে জড়িয়ে মিথ্যা অজুহাতে সিএনজি চালক শাহ আলমকে পায়ে গুলি করে এক এসআই । পরে চালকের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়ে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা ঘটনা তদন্ত করে সত্যতা পেয়ে সেই এসআইকে গ্রেফতার করে। এর আগে চালকের পরিবার মামলা করলে উক্ত এসআই চালকের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা করে। পরে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর চিত্র। চালকের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক থাকায় কাল হয়ে দাঁড়ায় সিএনজি চালকের। ফলে আজ এই করুণ পরিণতি। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছরের গত ১০ মাসে শুধু রাজধানীতেই শতাধিক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কিন্তু সেই শাস্তি আসলে তেমন কঠিন নয়। সবই সাময়িক সাজা। অনেকে আবার সাজা শেষে তদ্বির করে পোস্টিং ও পদোন্নতি পায়। মাঠপর্যায়ের কোন কোন পুলিশ দুর্নীতিতে জড়িত। রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় কর্তব্যরত কোন কোন সার্জেন্টের বিরুদ্ধেও অভিযোগ ওঠে। তারা যানবাহন চালকদের কাছ থেকে বিভিন্ন অসৎ উপায়ে টাকা আদায় করে। আবার অনেক মানুষের সঙ্গেও অশ্লীল ভাষায় কথা বলে। দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন যাদের কর্তব্য তাদের কারও কাছ থেকে এ ধরনের কোন আচরণ মানুষ প্রত্যাশা করে না। পুলিশ জনগণের বন্ধু এ কথা সরকারের তরফ থেকে বারবারই বলা হয়। মানুষ পুলিশকে সেভাবেই দেখতে চায়। পুলিশ বাহিনীর বিরাট ঐতিহ্য রয়েছে। এই বাহিনীর বহু সদস্যই নিষ্ঠাবান, ত্যাগী এবং সৎ। কিছু কিছু পুলিশের অপকর্মের কারণে গোটা বাহিনীর সুনাম নষ্ট হয়। এ ধারাটিকে বন্ধ করতে হবে, পুলিশকে সত্যিকার অর্থে জনগণের বন্ধু হয়ে উঠতে হবে। কাউকে হয়রানি করা নয়, কারও সঙ্গে অশোভন আচরণ করা নয়, প্রত্যেক নাগরিককে প্রয়োজনে সহায়তা করা, সাহায্য করা পুলিশের দায়িত্ব। তাহলেই পুলিশ বাহিনীর দুর্নাম ঘুচবে, সুনাম বাড়বে এবং পুলিশ হয়ে উঠবে জনগণের প্রকৃত বন্ধু। তাদের আচরণ হতে হবে বন্ধুসুলভ।
×