ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যেকোন রোগীকে চিকিৎসা দিতে প্রস্তুত বেসরকারি মেডিকেল

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ৯ এপ্রিল ২০২০

যেকোন  রোগীকে চিকিৎসা দিতে প্রস্তুত বেসরকারি মেডিকেল

অনলাইন রিপোর্টার ॥ বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো সব ধরনের রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা জানিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, “স্বাস্থ্য ও রোগ সংক্রান্ত বিষয়ে আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। আমাদের ৬৯টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আছে সেগুলো ২৪ ঘণ্টা খোলা। সব ধরনের রোগের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য তারা প্রস্তুত আছে। “যে কোনো রোগে, যে কোনো অসুবিধায় আপনারা প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাবেন, চিকিৎসার নিশ্চয়তা আপনাদের আমরা দিচ্ছি।” সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মালিক ডা. এনামুর বলেন, “এখন দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চলছে। আমরা এখনও জানি না, এটা কোন পর্যায়ে যাবে। তবে জাতিকে আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, সরকারের পাশাপাশি করোনাভাইরাস সংক্রান্ত যে কোনো দুর্যোগে, যে কোনো মহামারী বা ক্রাইসিসে আমরা এই ৬৯টি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সরকারের পাশে থেকে জনগণকে সেবা দেওয়ার জন্য বদ্ধপরিকর।” প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মবিন খান বলেন, “জাতির এই দুঃসমযে আমরা সরকারের পাশে আছি, আমরা থাকব। অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ৬৯টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল খোলা আছে, আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। “জাতির প্রয়োজনে যা করা দরকার তা করতে আমরা প্রস্তুত। আমাদের ২০ হাজার ডাক্তার সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছেন।” বিভ্রান্ত না হয়ে চিকিৎসার জন্য বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ আসছে। অনেক রোগী কয়েক হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন- এমন ঘটনা প্রায়ই আসছে গণমাধ্যমে। রোগী রেখে চিকিৎসকদের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ক্যান্সারে আক্রান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর তার পরিবার অভিযোগ করেছে, ঢাকা মেডিকেল, মুগদা হাসপাতাল ও আইইডিসিআরে গিয়ে কোনো চিকিৎসা পায়নি ছেলেটি। এই ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র কেন মারা যাবে? এই রোগী যখন যেখানে যেখানে গিয়েছে, সেখানে কোন কোন ডাক্তারের দায়িত্ব ছিল, আমি তাদের নামটাও জানতে চাই। তাদের ডাক্তারি করবার মতো বা চাকরি করবার মতো সক্ষমতা নাই। তাদের বের করে দেওয়া উচিত চাকরি থেকে, এটা আমি মনে করি।” বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও প্রাইভেট চেম্বারগুলো থেকে রোগীরা সেবা না পেয়ে ফিরে গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এরপর এগিয়ে আসা বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোর জোটের নেতারা করোনাভাইরাসের চিকিৎসায়ও প্রয়োজনে তাদের কয়েকটি হাসপাতাল ‘ডেডিকেট’ করার ঘোষণা দিয়েছেন। মবিন খান বলেন, “করোনাভাইরাসের জন্য আলাদাভাবে সাতটি ডেডিকেটেড হসপিটাল (সরকারি) রয়েছে। প্রয়োজন যদি হয় তাহলে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মহোদয়ের সাথে মিটিং করে আসছি। “প্রয়োজনে আমাদের কিছু হসপিটাল ডেডিকেট করার কথা বলে আসছি। আরও যদি লাগে, ইভেন ঢাকায় কয়েকটি হাসপাতালের কথা মাননীয় মুখ্য সচিব মহোদয় বলেছেন। আমরা আশ্বাস দিয়ে আসছি, প্রয়োজনে যা কিছু করা দরকার, আমরা সব কিছু করব। আমাদের ডাক্তার, নার্স জাতির দুঃসময়ে সেবা দিতে প্রস্তুত আছেন।” নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের দুই নেতা। বৈশ্বিক মহামারীতে রূপ নেওয়া অতি সংক্রামক নভেল করোনাভাইরাসে বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এক মাস আগে দেশে প্রথম এই রোগ দেওয়ার পর এতদিন দিনে দুই-তিন জন করে রোগী বাড়লেও গত পাঁচ দিন এই সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় ১১২ জন নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন। কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য রাজধানীর ফুলবাড়িয়া এলাকার রেলওয়ে হাসপাতাল ও নয়াবাজারের মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, রাজধানীর উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে। রাজধানীর বাইরে চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিকাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজেস-বিআইটিএডিতেও করোনাভাইরাস আক্রান্তদের ভর্তি করা হচ্ছে।
×