ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

এক ডাক্তার ও নার্স সর্বক্ষণিক চিকিৎসায় নিয়োজিত

খালেদার ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন শেষ হচ্ছে আজ

প্রকাশিত: ০৯:৪৫, ৮ এপ্রিল ২০২০

খালেদার ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন শেষ হচ্ছে আজ

শরীফুল ইসলাম ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন শেষ হচ্ছে আজ। ২৫ মার্চ মুক্তি পেয়ে গুলশানের বাসা ফিরোজায় অবস্থান নেয়ার একদিন পর ২৬ মার্চ থেকে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন শুরু করেন তিনি। অসুস্থ থাকায় একজন ডাক্তার ও একজন নার্স সর্বক্ষণিক তাঁর চিকিৎসায় নিয়োজিত রয়েছেন। ৬ সদস্যের চিকিৎসক বোর্ডের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রমের সমন্বয় করছেন লন্ডনপ্রবাসী পুত্রবধূ ডাঃ জোবায়দা রহমান। জানা যায়, মুক্তির শর্তের কথা মাথায় রেখে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এখন দলীয় রাজনীতি নিয়ে কারও সঙ্গে কোন কথা বলেন না। এমনকি লন্ডনে অবস্থান করা নিজের বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে নিয়মিত কথা হলেও দলের রাজনীতি নিয়ে তিনি কথা বলেন না। এ ছাড়া দলের অন্য নেতাদের সঙ্গেও আপাতত যোগাযোগ বন্ধ রেখেছেন তিনি। মুক্তি পেয়ে গুলশানের বাসায় অবস্থান করার পর দেশ-বিদেশ থেকে কোন কোন বিএনপি নেতা টেলিফোনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও তাদের সে সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত ৬ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। এই বোর্ডের সদস্যরা হলেন প্রফেসর ডাঃ এফ এফ রহমান, প্রফেসর ডাঃ রজিবুল ইসলাম, প্রফেসর ডাঃ আব্দুল কুদ্দুস, প্রফেসর ডাঃ হাবিবুর রহমান, প্রফেসর ডাঃ সিরাজ উদ্দিন ও প্রফেসর ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তাদের পরামর্শে বাসায় একজন ডাক্তার ও একজন নার্স সর্বক্ষণিক খালেদা জিয়ার চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন। আর তার চিকিৎসার প্রয়োজনে গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর রোডের ১ নম্বর বাড়ির দ্বিতীয় তলায় হাসপাতালের পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। স্বজনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মানবিক বিবেচনায় সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দ-াদেশ স্থগিত রেখে তাঁকে ছয় মাসের জন্য ভাই শামীম ইস্কান্দারের জিম্মায় মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তির ২ শর্তের মধ্যে রয়েছে এই ৬ মাস বাসায় অবস্থান করেই চিকিসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। মুক্তির আগের দিন ২৪ মার্চ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংবাদ সম্মেলন করে সরকার বয়স বিবেচনায় ও মানবিক কারণে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায়। বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারীর প্রেক্ষিতে এবং বয়স ও মানবিক বিবেচনায় ৪০১ ধারায় শর্তসাপেক্ষে তাকে মুক্তির কথা জানান তিনি। অবশ্য এর আগেই খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার, বোন সেলিমা ইসলাম ও বোনের জামাই রফিকুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার অনুরোধ করেন। জানা যায়, ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে থেকেই দিনভর ফোনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লন্ডনপ্রবাসী ছেলে তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডাঃ জোবায়দা রহমান, প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান, নাতনি জায়মা রহমান, জাহিয়া রহমান ও জাসিয়া রহমান, ভাই শামীম ইস্কান্দার ও বোন সেলিমা ইসলামসহ স্বজনদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন খালেদা জিয়া। আর কারাগারের বদ্ধ পরিবেশ থেকে খোলামেলা পরিবেশে থেকে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে নিয়মিত কুশল বিনিময় করতে পেরে এবং নিজের পছন্দ মতো ঘরে রান্না করা খাবার খেয়ে স্বস্তিতেই গুলশানের বাসায় সময় পার করছেন।
×