ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্যাংক কর্মীদের নিরাপত্তায় ১১ দফা দাবি স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের

প্রকাশিত: ০৭:২৮, ৭ এপ্রিল ২০২০

ব্যাংক কর্মীদের নিরাপত্তায় ১১ দফা দাবি স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবে মধ্যে ব্যাংক খোলা রাখায় ব্যাংক কর্মীদের নিরাপত্তায় ১১ দফা দাবি জানিয়ে স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদ সোনালী ব্যাংক লিমিটেড। মঙ্গলবার সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি আলাউদ্দিন তুষারের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সীমিত পরিসরে ব্যাংক খোলা রাখার নির্দেশনা থাকলেও বর্তমানে প্রায় প্রতিদিন ব্যাংকিং সেবার পরিসর বিস্তৃত হচ্ছে। প্রতিদিন ব্যাংক গ্রাউন্ডে শতশত গ্রাহক জড়ো হচ্ছেন সেবা নিতে। তদের কেউই মানছেন না সামাজিক দূরত্বের নিয়মাবলী। ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন লাখ লাখ সাধারণ গ্রাহক ও কয়েক লাখ ব্যাংককর্মী। তাই সহকর্মীদের নিরাপত্তার স্বার্থে সরকারের কাছে ১১টি দাবি ও পরামর্শ তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে-১. সামাজিক দূরত্ব যথাযথভাবে পরিপালনে সহায়তা দানে খোলা রাখা ব্যাংক শাখাগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত করা। ২. সীমিত পরিসরে অর্থাৎ শুধুমাত্র নগদ টাকা উত্তোলন, জমা ও বৈদেশিক রেমিটেন্সের মধ্যেই ব্যাংকিং সেবা সীমিত রাখা। ৩. সেবা নিতে আসা অপেক্ষারত গ্রাহকদের শাখার ভেতরে অযথা ঘোরাফেরা/অপেক্ষা না করে শাখার বাইরে অপেক্ষার ব্যবস্থা করা। মানুষ ব্যাংকমুখী হয়ে জনসমাগম এড়ানোর লক্ষ্যে এক মাসে একবারের বেশি টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেয়া আপাতত রদ করা যেতে পারে। ৪. এটিএম কার্ডধারী গ্রাহকদের চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের সুযোগ বন্ধ করে অনলাইনমুখী সেবার প্রতি উৎসাহিত করা যেতে পারে। ব্যাংকমূহকে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের ই-ব্যাংকিং সুবিধার বাধাসমূহ দূর করে এসব সেবা আরও জনপ্রিয় করতে প্রচার চারণা চালানোর প্রতি মনোযোগী করা। একইভাবে ওয়ালেট ব্যাংকিং, অ্যাপস নির্ভর ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে এটিএম বুথ হতে নগদ অর্থ উত্তোলনের সুবিধা যুক্ত করা যেতে পারে। ৫. লকডাউনকৃত এলাকায় (যেমন, মিরপুর, বাসাবো, আজিমপুর, মাদারীপুর, নারায়ণগঞ্জ) ব্যাংক শাখাগুলোকে তাদের কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হোক এবং এসব এলাকায় বসবাসরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসে আসার উপর স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তাদের বাসায় থাকা নিশ্চিত করতে হবে। ৬. দূরত্ব বিবেচনায় কোনো একটি ব্যাংকের নির্দিষ্ট সংখ্যক শাখা খোলা রেখে অন্য সব শাখার কার্যক্রম বন্ধ করা হোক। দূরবর্তী শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে ব্যাংকের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা চালু করা হোক। ৭. সাপ্তাহিক ব্যাংকিং কর্মদিবসের সংখ্যা কমিয়ে আনা হোক। ২৬ মার্চ থেকে অদ্যাবধি সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যতীত একটানা কাজ করায় ব্যাংকারদের মানসিক ও শারীরিক প্রশান্তির লক্ষ্যে আগামী ১২ ও ১৩ এপ্রিল (রোববার ও সোমবার) সারাদেশে ব্যাংকিং সেক্টরে পূর্ণ দিবস বন্ধ ঘোষণার অনুরোধ করছি। ৮. সাধারণ ছুটিকালীন সময়ে কর্মরতদের জন্য কোনোরূপ ঝুঁকিভাতা/সম্মানীর ঘোষণা নেই ব্যাংকগুলোর নির্দেশনার মধ্যে। ছুটির দিনে কাজ করার জন্য উপযুক্ত প্রনোদনা প্রদান করা হোক। ৯. দায়িত্ব পালনকারী কোনো ব্যাংককর্মী করোনায় আক্রান্ত হলে তার জন্য ব্যাংকের পক্ষ হতে চিকিৎসাসেবাসহ আর্থিক ক্ষতিপূরণ ঘোষণার জোর দাবি রাখছি। এজন্য বীমা সুবিধাও ঘোষণা করা যায়। ১০. বেশিরভাগ সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরতদের কোনো পেনশন সুবিধা নেই। ২০০৮ সালে প্রধান চারটি সরকারি ব্যাংক কোম্পানিতে রূপান্তর করার পর একমাত্র রূপালী ব্যাংক ব্যতীত অন্য তিনটি ব্যাংকে ২০০৮ পরবর্তী নিয়োগকৃতদের জন্য পেনশন সুবিধা বাতিল করা হয়। তাই দায়িত্বপালনকারী কোনো কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে তার দায়, ক্ষতিপূরণ, মৃতের পরিবারের দায়িত্ব কে নেবে ব্যাংক কর্তৃক তা এখনই নির্ধারণ জরুরি। কেউ মারা গেলে তার পরিবারের একজনকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দেয়া হোক। ১১. সর্বোপরি ব্যাংকারদের প্রতি সরকারকে মানবিক বিষয়সমূহ চলমান রাখার প্রার্থনা করছি।
×