ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

না’গঞ্জে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ গার্মেন্টস খোলা

প্রকাশিত: ১০:০৪, ৬ এপ্রিল ২০২০

 না’গঞ্জে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ  গার্মেন্টস খোলা

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ বিসিক শিল্পনগরীসহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গার্মেন্টস কারাখানায় কাজে যোগ দিতে দল বেঁধে হাজার হাজার শ্রমিক জড়ো হয়েছেন। তবে গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ ও বিজিএমইএ রাতের বেলায় নোটিস দিয়ে আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত গার্মেন্টস বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই নোটিসের তোয়াক্কা না করে বিসিক শিল্পনগরীসহ অনেক গার্মেন্টস কারাখানায় খোলা রেখেছেন মালিকরা। অনেক শ্রমিক কাজেও যোগ দিয়েছেন। এখানে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ গার্মেন্টস কারখানা খোলা রয়েছে। আবার অনেক কারাখানা বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। এদিকে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডের ৪টি কারখানা চালু রাখা হয়েছে। অন্য কারখানাগুলো বন্ধ রয়েছে। জানা গেছে, বালাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স এ্যান্ড এক্সপোর্টার এ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) ও বিজিএমইএ ২৯ মার্চ জরুরী সভা করে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত গার্মেন্টস বন্ধ ঘোষণা করেন। শ্রমিকরা তাদের কর্মস্থলে যোগ দেবার জন্য শ্রমিকরা ৪ এপ্রিল থেকে করোনার ঝুঁকি মাথায় নিয়েই দল বেঁধে হেঁটে, রিক্সা ভ্যান ও পণ্যবাহী ট্রাকে চড়ে হাজার হাজার শ্রমিক নারায়ণগঞ্জ চলে আসে। কিন্তু ৫ এপ্রিল কাজে যোগ দিতে গিয়ে দেখে নারায়ণগঞ্জের বেশিরভাগ গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ। মাত্র ১৫ থেকে ২০ শতাংশ গার্মেন্টস কারখানা খোলা রয়েছে। কিন্তু যেসব গার্মেন্টস খোলা রয়েছে সেখানে তেমন কোন কাজ নেই। সরেজমিনে ফতুল্লার বিসিক শিল্পনগরী ঘুরে দেখা গেছে, কাজে যোগ দিতে কয়েক হাজার শ্রমিক বিসিকে ভিড় করে। হাতে গোনা ২৫ থেকে ৩০ গার্মেন্টস খোলা রয়েছে। বাকি গার্মেন্টস বন্ধ। এমন সমন্বয়হীনতার কারণে শ্রমিকরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শ্রমিকরা জানিয়েছেন, গার্মেন্টস বন্ধ করার আগে গার্মেন্টস মালিকরা তাদের বেতন দেয়নি। পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রবিবার গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় আমারা কাজে যোগ দিতে এসেছি। গ্রাম থেকে কষ্ট করে এসে দেখি অধিকাংশ গার্মেন্টস বন্ধ। আর যেসব প্রতিষ্ঠানে অর্ডার আছে তারা ফ্যাক্টরি চালু রেখেছেন। শ্রমিক পারভেজ অভিযোগ করেন, আমাদের এখনও মার্চ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। কবে বেতন দেয়া হবে তা জানানো হয়নি। এখন যে আবার বাড়ি ফিরে যাব সেই ভাড়া নেই। তাই আমাদের বেতন খুব প্রয়োজন। ভাড়ি ভাড়া, দোকান বাকি পরিশোধ করতে হবে। তবে বিকেএমইএ’র নোটিস না মেনে অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিক তাদের কারাখানা খোলা রেখেছেন। শ্রমিকরাও কাজে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু এত শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা কী হবে তা নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ কোন গার্মেন্টস মালিককে নিতে দেখা যায়নি। এদিকে শ্রমিকরা জানান, পেটের দায়ে করোনার ঝুঁকি নিয়েই তারা কাজে এসেছেন। এ বিষয়ে বিকেএমইএ’র সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান এমপি সাংবাদিকদের বলেন, মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে বিকেএমইএ’র সদস্যভুক্ত সকল নীট পোশাক কারখানা আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার বিশেষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বিষয়টি রাতেই নোটিস দিয়ে গার্মেন্টস মালিকদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের প্রকোপ নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে বেড়ে যাওয়ায় এবং জনসমাগম ঠেকাতে এবং শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে গার্মেন্টস কারাখানা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজার) মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ বিভাগ) নাজমা বিনতে আলমগীর জানান, সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডের ৫০ কারখানার মধ্যে ৪টি কারখানা চালু আছে। এ ৪টি কারখানায় ৫ হাজার ৯শ’ শ্রমিকের মতো কাজ করছে। তারা মেডিক্যাল সংক্রান্ত জিনিসপত্র তৈরি করছে। আদমজী ইপিজেডের অন্য কারখানাগুলো বন্ধ রয়েছে। তবে ২০টি কারখানার মেইনটেনেন্সের (রক্ষণাবেক্ষণের) কাজ চলছে। আদমজী ইপিজেড অর্ধলক্ষ শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছে।
×