ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্যোগে কৃষকদের পাশে আছে কৃষিবিভাগ

প্রকাশিত: ০৮:১৩, ৫ এপ্রিল ২০২০

দুর্যোগে কৃষকদের পাশে আছে কৃষিবিভাগ

অনলাইন রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে সরকার। কেবল জরুরি প্রয়োজনে সাবধানতা অবলম্বন করে কাজে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কৃষকের এখন ব্যস্ত সময়। মাঠের ফসল তুলে বিক্রির সময় এটা। সরকারের দেওয়া নিয়ম মেনেই কাজ করছেন কুষ্টিয়ার কৃষকেরা। তবে পণ্য পরিবহন ও ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। গত মাসের শেষদিকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক ছিল না। এ কারণে কুষ্টিয়ার কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ফসলের এর যথাযথ দাম পায়নি। রাজধানীতে এর যথেষ্ট দাম থাকলেও স্থানীয় বাজারে দাম তাঁদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তবে দুর্যোগে কৃষকদের পাশে থাকার জন্য কৃষিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ নাসিরুজ্জামান সাক্ষরিত একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির সময়ে কৃষিজাত পণ্য/উপকরণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের পণ্য পরিবহন ও ক্রয়-বিক্রয় জরুরি বিবেচনায় যথারীতি অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়। আর এই দুর্যোগের সময় কৃষকেরা যেন ন্যায্যমূল্য পান সেদিকে দৃষ্টি রাখছে কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন। ভেড়ামারা এলাকার বাসিন্দা আব্দল হাকিম। জমিতে গমের চাষ করেছেন। আর তিনি জমি বর্গানিয়ে এবং সার বীজ এবং সেচের কাজ সবই করেছেন বাকিতে, ফসল তুলে শোধ করতে হবে সব, তিনি জানালেন, এরকম পরিস্থিতে বাজারে পণ্য নিয়ে গিয়ে হয়রানির শিকার হতে হয়। কম দামে বিক্রি করে ফিরতে হয়। এতে লাভ তো দুরের কথা আসলও থাকে না। বরং দেনা পরিষোধ করার জন্য বিক্রি না করেও কোন উপায় থাকে না তাই কম দামে ছেড়ে দিতে হয়। এতে কৃষকদের ক্ষতি হয়। তিনি বলেন, ‘সরকার যদি এদিকটা দেখে তাহলে আমরা বেঁচে যাই।’ একই কথা বলেন মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া গ্রামের কৃষক হারুন মন্ডল। এ বছর তিনি প্রায় ৭ বিঘা জমিতে বিভিন্ন রবিশস্য আবাদ করেছেন। তিনি জানান, বন্যা, ঝড়-বৃষ্টি, করোনার মত প্রাকৃতিক দুর্যোগেও সুযোগ নেয় একদল মানুষ। তখন কোনোমতে দাম নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের এ অবস্থার কথা জানালেন মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ। তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ এলেই কৃষকরা সবার আগে বিপদে পড়ে। আর এই সময়টাকে কাজে লাগায় ফড়িয়া বা মধ্যস্বত্তভুগীর দল। তারা কৃষদের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে নিজেরা লাভবান হয়। তবে কৃষকরা যাতে কোন ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন না হয় এজন্য আমরা যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। আমরা বাজারে নজরদারি করছি। পণ্য বিক্রয়ে কৃষক যেন কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে খেয়াল রাখছি আমরা। এই দুর্যোগেও যেন কৃষকরা সময় মত তাদের পণ্য যথাযথ জায়গায় বিক্রি বা পৌঁছাতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখা সহ তাদেরকে সঠিক পরামর্শ প্রদান করছি। এবং তারা যাতে দালাল বা ফড়িয়াদের খপ্পরে না পড়ে এ ব্যাপারে সচেতন থাকার জন্যও কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি আমরা।’ এ ব্যাপারে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোঃ আসলাম হোসেন বলেন, ‘দুর্যোগের সময় কৃষকদের কাজও জরুরি কাজের পর্যায়ে পড়ে। এরকম একটা সময়ে কৃষক যেন যথাযথ দাম পায় সেদিকে আমরা নজর রাখছি। এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে যেন বাংলাদের কোথাও একটি আবাদী জমিও যেন পতিত পড়ে না থাকে, সেই মোতাবেক কৃষকদের ফসল আবাদে এবং তাদের আবাদকৃত ফসল বিক্রয়ের ক্ষেত্রে যাতে কোন ধরনের বিগ্ন না ঘটে সে ব্যাপারে আমরা সজাগ আছি এবং কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে সমন্ময় করে কাজ করছি। কৃষকরা যেন নিজেদের কাজ ঠিকমত করতে পারে সেজন্য আমরা তাদের সহযোগিতা করছি।’
×