ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

স্পেনে আরও ৮৪৯ মৃত্যু, যুক্তরাষ্ট্রে ৬ কংগ্রেস সদস্য আক্রান্ত

প্রকাশিত: ১০:২৫, ১ এপ্রিল ২০২০

স্পেনে আরও ৮৪৯ মৃত্যু, যুক্তরাষ্ট্রে ৬ কংগ্রেস সদস্য আক্রান্ত

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বিশ্বের ২০০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফোর হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা আট লাখ ৩৭ হাজার ২১১। এর মধ্যে ৪১ হাজার ২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছে এক লাখ ৭৬ হাজার ৫৮ জন। এদিকে করোনায় মঙ্গলবার আরও নতুন করে স্পেনে ৮৪৯, ইতালিতে ৮৩৭, যুক্তরাজ্যে ৩৯৩, যুক্তরাষ্ট্রে ৩৮০, বেলজিয়ামে ১৯২ ও ইরানে ১৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে ৬ কংগ্রেস সদস্য এবং ইতালিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৯৫৬ স্বাস্থ্যকর্মী। পাশাপাশি করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকার প্রিন্স চার্লস। খবর এএফপি, বিবিসি, এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, আল-জাজিরা, সিএনএন, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, ডেইলি মেইল, নিউইয়র্ক টাইমস, ডন, ইউরো নিউজ, ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফো ও ইয়াহু নিউজের। স্পেনে আরও ৮৪৯ জনের মৃত্যু ॥ স্পেনে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৮৪৯ জন মারা গেছেন। মঙ্গলবার এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন মোট ৮ হাজার ১৮৯ এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪ হাজার ৪১৭ জন। করোনাভাইরাসে প্রাণহানির এই তথ্য নিশ্চিত করে স্পেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, দেশে নতুন করে আরও ৯ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। যা আগের দিনের সংক্রমণের চেয়ে ৩ হাজার বেশি। ইতালিতে আরও ৮৩৭ জনের মৃত্যু ॥ ইতালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৮৩৭ জন। এনিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৪২৮ জন। মঙ্গলবার নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৫৩ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার ৭৯২ জন। ইতালির সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি জানিয়েছে, দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও গত দু’দিন ধরে নতুন রোগী শনাক্তের হার কিছুটা কমেছে। সোমবার ইতালিতে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন ৪ হাজার ৫০ জন, মারা গিয়েছিলেন ৮১২ জন। দেশটিতে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৭২৯ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। চিকিৎসাধীন এখনও ৭৭ হাজার ৬৩৫ জন। এদের মধ্যে অন্তত চার হাজার রোগীর অবস্থঅ সঙ্কটাপন্ন। যুক্তরাজ্যে আরও ৩৯৩ জনের মৃত্যু ॥ করোনাভাইরাস সংক্রমণে (কোভিড-১৯) যুক্তরাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় ৩৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশটিতে ভাইরাস সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ৮০৮ জন। মঙ্গলবার দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। সংবাদে জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ডে ৩৬৭ জন, স্কটল্যান্ডে ১৩ জন, ওয়েলসে ৭ জন এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডে ৬ জনের ভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত ২২ হাজারের বেশি রোগী কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ১৩৫ জন সুস্থ হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে আরও ৩৮০ জনের মৃত্যু ॥ যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে একদিনে নতুন করে আরও ৩৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো ৩ হাজার ৪০ জনের। আক্রান্তের দিক দিয়ে অন্য দেশকে ছাড়িয়ে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৫৯ হাজার ৬৮৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। একদিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজারের বেশি মানুষ। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ও আক্রান্ত নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ছয় কংগ্রেস সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে ৩০ কংগ্রেস সদস্য স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে চলে গেছেন। তাদের মাধ্যমে যাতে করোনাভাইরাস ছড়াতে না পারে সেজন্য তারা নিজেরাই এ ব্যবস্থা নিয়েছেন। অন্যদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথমবারের মতো মার্কিন সেনা সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ওই সেনা ছিলেন নিউজার্সি আর্মি ন্যাশনাল গার্ডসম্যানের সদস্য। কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে ২১ মার্চ তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বেলজিয়ামে আরও ১৯২ জনের মৃত্যু ॥ মৃত্যের সংখ্যা বাড়ছে বেলজিয়ামে। মঙ্গলবার একদিনেই মারা গেছে ১৯২ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০৫ জনে। নতুন করে আরও আক্রান্ত হয়েছে ৮৭৬ জন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৭৭৫ জন। ইরানে আরও ১৪১ জনের মৃত্যু ॥ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ইরানে আরও ১৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮৯৮। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ হাজার ১১০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ হাজার ৬০৫ জন। ইতালিতে আক্রান্ত ৮ হাজার ৯৫৬ স্বাস্থ্যকর্মী ॥ করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছেন ইউরোপের দেশ ইতালিতে। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, আক্রান্তদের সেবা দিতে গিয়ে দেশটির ৬৩ চিকিৎসকও প্রাণ হারিয়েছেন। দেশটির চিকিৎসকদের সর্ববৃহৎ সংগঠন ইতালিয়ান এ্যাসোসিয়েশন অব ডক্টরস’ এর পক্ষ থেকে সোমবার বিকেলে এক আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় এ তথ্য দেয়া হয়। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, যে ৬৩ চিকিৎসক করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন তাদের মধ্যে ৪১ জনই দেশটির উত্তরের লোম্বার্ডি অঞ্চলের। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ এক বিবৃতিতে বলেছে, দেশে মোট ৮ হাজার ৯৫৬ স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ভারতে মৃত বেড়ে ৩৫ ॥ ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪০০। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫। সারাদেশে আক্রান্তের সংখ্যায় শীর্ষ স্থানে রয়েছে কেরল। সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ২০২ জন। এরপরেই রয়েছে মহারাষ্ট্র। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯৮। তবে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে মহারাষ্ট্রে। ওই রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ৮। অন্যদিকে, কর্নাটকে ৮৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উত্তরপ্রদেশে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৭৫ জন। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে তিনজন করোনা আক্রান্ত হন। এর মধ্যে একজন আলিপুরে সেনার কম্যান্ড হাসপাতালের চিকিৎসক। এ ছাড়াও বরাহনগর ও শেওড়াফুলির দুই ব্যক্তির রিপোর্টও পজিটিভ এসেছে। এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট ২২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। পাকিস্তানে মৃত বেড়ে ২৫ ॥ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পাকিস্তানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ জনে। এছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৮৭৬ জনে। আর সুস্থ হয়েছেন ৫৮ জন। এদিকের দেশটির হায়দারাবাদে তাবলীগ জামাতের ৩৬ সদস্যের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে সিন্ধু প্রদেশের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। আক্রান্তরা সবাই স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে তারা। এ নিয়ে হায়দরাবাদ শহরে কোভিড-১৯ আক্রান্ত মোট ৪৩ জন শনাক্ত হলো বলে সিন্ধুর স্বাস্থ্য ও জনকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের গণমাধ্যম সমন্বয়ক মীরন ইউসুফ জানিয়েছেন। সুস্থ হয়ে উঠলেন প্রিন্স চার্লস ॥ ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের ছেলে ও ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকার প্রিন্স চার্লস করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তার শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়ার পর সেলফ-আইসোলেশনে ছিলেন প্রিন্স অব ওয়েলস। তবে তিনি এখন সেলফ আইসোলেশন থেকে বের হয়েছেন। ৭১ বছর বয়সী প্রিন্স চার্লসের শরীরের করোনাভাইরাস ধরা পড়ার পর এবং হালকা কিছু লক্ষণ দেখা দেয়ায় তিনি স্কটল্যান্ডে সাতদিনের জন্য সেলফ আইসোলেশনে ছিলেন। তবে চার্লসের স্ত্রী ক্যামেলিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি। কিন্তু ৭২ বছর বয়সী ডাচেস অব কর্নওয়েলও এক সপ্তাহের জন্য সেলফ আইসোলেশনে থাকবেন। মিয়ানমারে প্রথম মৃত্যু ॥ করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে প্রথম মৃত্যুর খবর দিয়েছেন মিয়ানমারের কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালে ইয়াঙ্গনের ওয়েবাগি বিশেষায়িত হাসপাতালে কোভিড-১৯ এর এক রোগীর মৃত্যু হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির বয়স ছিল ৬৯ বছর, জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
×