ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা পরবর্তী বাংলাদেশ কেমন হতে পারে?

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ৩১ মার্চ ২০২০

করোনা পরবর্তী বাংলাদেশ কেমন হতে পারে?

অনলাইন ডেস্ক ॥ চীনের উহান থেকে শুরু হওয়া করোনার সংক্রমণে আজ মানবজাতি দিশেহারা। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা থেকে শুরু করে পুরো বিশ্বব্যবস্থা প্রায় অচল। পৃথিবীর চতুর্দিকে হতাশা আর আতংকের চিত্র। ধনী থেকে গরীব, রাজা থেকে প্রজা, গ্রাম থেকে শহর, প্রত্যেকের প্রশান্তির ঘুম আজ কেড়ে নিছে এই মরণঘাতী ভাইরাস। উন্নত দেশগুলোতে অর্থের অভাব না থাকলেও বাজারে পর্যাপ্ত পন্যের যোগান ও পরীক্ষার কীট সরবরাহের অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়ছে। আর উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অর্থ, সামর্থ্য ও অবকাঠামোসহ সবকিছুর অভাব দৃশ্যমান। পৃথিবীর সমস্ত জ্ঞান-বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি আজ করোনার কাছে হার মানছে। নাগরিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা দিতে পৃথিবীর প্রায় সকল দেশ ব্যর্থ । বিশ্বব্যাপী করোনার সংক্রমণ দিন দিন জ্যামিতির হারে বাড়ছে এবং তীব্র হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১৭৬ টি দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৭ লাখ। ১৭৮,৫৩৫ টি ক্লোজড কেইসের মারা গেছে ৩২,১৩৯ জন (১৮%) জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৪৬,৩৯৬ জন (৮২%) । চীন, উত্তর কোরিয়া ও সিঙ্গাপুর ছাড়া প্রায় সকল দেশে নতুন সংক্রমণ ও মৃতুর হার উভয়টি লাগামহীন। ইউরোপের দেশগুলোর পর আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রেও নতুন করে পরাস্ত করোনার কাছে এবং এই মুহুর্তে সেখানে এক লাখ ২৩ হাজারের ও বেশি আক্রান্ত যা অন্য যেকোন দেশের তুলনায় বেশি । চীনের তীব্রতা বন্ধ হলেও ইরান, ইতালি, স্পেন ও জার্মানিতে মৃত্যুর মিছিল বন্ধের আপাতত কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছেনা। বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ এখনো তীব্র মনে না হলেও অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, দেশে কমিউনিটি পর্যায়ে এর সংক্রমণ শুরু হয়েছে যা পর্যাপ্ত পরীক্ষার অভাবে চিহ্নিত হচ্ছেনা। গত ২৬ মার্চ থেকে সরকার কর্তৃক ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর দেশ কার্যত অচল। স্বাধীনতার পরবর্তী কোন মহামারী, প্রাকৃতিক দূর্যোগ বা রাজনৈতিক দলের হরতালও দেশের মানুষকে এত ভীত সন্ত্রস্ত ও গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত অচল হতে দেখা যায়নি। বাংলাদেশে করোনার আঘাত সবেমাত্র শুরু, এর শেষ কোথায় এখনো বলা যায় না। তবে ইতোমধ্যে এটি বিশ্বের বিদ্যমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে ওলট-পালট করে দিয়েছে। পাল্টে দিচ্ছে ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে পুরো বিশ্বব্যবস্থার। বিভিন্ন দেশের গবেষকেরা ইতোমধ্যে এ নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে। আমি স্বল্পজ্ঞানে বাংলাদেশে সম্ভাব্য করোনা পরবর্তী চিত্রাঙ্কন করার চেষ্টা করছি। চিত্রের ক্যানভাসের আকার, রং ও ধরণ নির্ভর করছে বিশ্বের অন্যান্য দেশের চিত্রের উপর। অনুঘটকগুলো এখনো স্থির হয়নি। করোনা এখনো একটি অজ্ঞাত ও অজানা শত্রু। এর পরিপূর্ণ প্রকোপ ও স্বরুপ এখনো উন্মোচিত হয়নি। আমরা সবাই শুধু যুক্তি নির্ভর অনুমান করছি। ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি করোনার মত মহামারীর ভবিষ্যৎবাণী অনেক আগেই করেছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০১৫ সালের ৩ এপ্রিল একটি টেডটকে মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস, ইবোলা ভাইরাসের পর করোনার মত মহামারীর আক্রমণ বিষয়ে সতর্ক করে গেছেন। ‘দ্যা নেক্সট আউটব্রেক? উই আর নট রেডি’ শিরোনামে ইউটিউবে ভিডিওটি এখনো বিদ্যমান। বনাঞ্চল ধ্বংস ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সামনের দিনগুলোতে করোনার মত আরো অনেক নতুন নতুন ভাইরাসের আক্রমণ হবে। এছাড়াও তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে এ ধরণের ভাইরাসের জন্ম দেবে। উপকারী ভাইরাস বানিয়ে কৃষি ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে পরিবর্তন আমাদের সবার জানা তবে এর বিপরীত অপব্যবহারও হয়। কিছু গবেষক মনে করে, করোনা ভাইরাস যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কাদা ছোটাছুটি হচ্ছে। তবে যাই হোক, আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এ যুদ্ধে হেরে গেছে। করোনা আঘাতে ইউরোপ-আমেরিকার রাজত্ব শেষ হওয়ার পথে। যার ফলশ্রুতিতে কিছু গবেষকরা মনে করেন, 'করোনা পরবর্তী বিশ্ব’ চীনের নেতৃত্বে এশিয়ার হাতে। আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে চীনের প্রভাব বেড়ে যেতে পারে ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় চীন, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় চীনের অনলাইন ব্যবসায়ী আলীবাবা ইতোমধ্যে বাংলাদেশেসহ এশিয়া-আফ্রিকার দেশেগুলোতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে নিজেদের পক্ষ ভারী করেছে। আপাতত মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও সমাজব্যবস্থা চীনের দেয়া মডেলে হবে। আস্তে আস্তে ইউরোপ-আমেরিকার বিদ্যমান মিত্রদের নিয়ন্ত্রণ কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, করোনার মত দূর্যোগ মোকাবেলায় উদার ব্যক্তিস্বাধীনতার চেয়ে নিয়ন্ত্রিত ব্যক্তিস্বাধীনতা বেশি কার্যকর। তাদের মতে, চীন, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া এই জন্যই সফল। এছাড়াও করোনার মত ছোঁয়াচে মহামারী নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রের ভুমিকা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। করোনার প্রভাবে বৈশ্বিক পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগবে দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরের রন্দ্রে রন্দ্রে। অনলাইনভিত্তিক শিক্ষার প্রসার বেড়ে যাবে বহুদিন চেষ্টা করেও ইউজিসিকে যেখানে অনলাইনে কোর্সের ডিগ্রি প্রদানের জন্য রাজী করা যায়নি, করোনা ভাইরাস সেই সুযোগটি খুব সহজে এনে দিল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এখন অনলাইনে ক্লাস নেয়ার অনুমতি দেওয়স। খুব শীঘ্রই হয়তো পৃথিবীর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে যৌথ ডিগ্রি দেওয়ার অনুমতিও দিয়ে দেবে। সংসদ টিভিতে ক্লাস ৬-১০ পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদান শুরু হয়েছে। বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আজ অনলাইনে কোর্স শুরু করে ক্লাসে পাঠদান অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে । আস্তে আস্তে বাংলাদেশেও কোর্স ইরা, উদেমী, খান একাডেমি, টেন মিনিট স্কুল, মুক্তপথ ইত্যাদি অনলাইন লার্নিং সাইটগুলো জনপ্রিয় হবে এবং শিক্ষাব্যবস্থা ‘আইইএলটিএস’ পরীক্ষার মত অনলাইন নির্ভর হয়ে যাবে। লোকজন ঘরে বসে পৃথিবীর বিভিন্ন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নেবে । ইউটিউবে বড় বড় প্রফেসরদের লেকচার শুনবে। ভাষা বোঝার সমস্যাটা দ্রুত উঠে যাবে । ধীরে ধীরে স্কুল কলেজে গিয়ে শিক্ষা নেয়াটা কোচিং সেন্টারে যাওয়ার মত মনে হবে। করোনার ভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে এক পর্যায়ে মানুষ ক্লাসে যাওয়াকে সময় নষ্ট, অর্থের অপচয় ও অযৌক্তিক মনে করবে। তখন অনেকে শিক্ষাক্ষেত্রে অবকাঠামো ও বেতন ভাতা বাবদ ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলবে। অবাক হওয়ার কিছুই থাকবেনা যদি এভাবে বর্তমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো একদিন জাদুঘর হয়ে যায়। ই-কমার্স জনপ্রিয় হবে বিদ্যমান ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য করোনা নিয়ে এসেছে দুঃসংবাদ । করোনার আঘাতের ফলে বাংলাদেশে দারাজ, চালডাল, পাঠাও, উবার ইত্যাদি অনলাইন ব্যবসাগুলো আরো বেশি জনপ্রিয় হবে। আলীবাবার মত বিশ্বের বড় বড় অনলাইন প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের বাজার দখল এবং ছোট ছোট ই-কমার্স সাইটগুলো কিনে নিতে পারে । একই সাথে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো অনান্য দেশে ব্যবসা করার সুযোগ পেতে পারে। সরকার কর আদায় বৃদ্ধি ও সহজ করার জন্যে এ কাজে উৎসাহিত করবে । কাস্টমার সার্ভিস দেওয়ার জন্যে রোবট ও মেশিনের প্রচলন বেড়ে যাবে। দেশের ট্রাফিক জ্যাম থেকে মুক্তি পেতে ও দ্রুত সাপ্লাই দিতে একপর্যায়ে ড্রোনের সাহায্যে পণ্য ডেলিভারি সিস্টেম চালু হয়ে যেতে পারে। গভীর রাতে মানুষের প্রয়োজন মেটানোর সুবিধার্তে উন্নত দেশগুলোতে দেখেছি, বিভিন্ন বাস ও ট্রেন স্টেশনগুলোতে ছোট ছোট এটিএমবুথের মতো স্বয়ংক্রিয় দোকান রয়েছে যেখানে যে কেউ নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ দিয়ে প্রয়োজনীয় যে কোন পণ্য ক্রয় করতে পারে । এছাড়াও বিভিন্ন বিমান বন্দরে অটোমেটেড পেইড লকার সিস্টেম রয়েছে । ভবিষ্যতে করোনার মত দূর্যোগ ও ঝুঁকি মোকাবেলায় বাংলাদেশেও আস্তে আস্তে এ ধরণেরর স্বয়ংক্রিয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে যাবে। একই সাথে করোনার ফলে হাইজিন মেইন্টেইন করতে গিয়ে নিত্যপণ্য ও সেবাখাতে ব্যয় বাড়বে। বেকারত্ব দিন দিন বাড়তে থাকবে করোনার ধাক্কায় ইতিমধ্যে হাজার হাজার মানুষ বেকার হয়ে গেছে। অনেক কল-কারখানা, ক্ষুদ্র ব্যবসা ও উদ্যোগ পুঁজি হারিয়ে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার ও অনলাইনভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিক্ষা, স্বয়ংক্রিয় সেবা, ডিজিটাল মেশিন ব্যবহারের ফলে হাজার হাজার মানুষ চাকরি হারাবে। প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও স্পেশালাইজড জ্ঞানের অধিকারী ব্যক্তিদের কদর বাড়তে থাকবে এবং অল্প শিক্ষিত ও অদক্ষ শ্রমিকের চাহিদা আস্তে আস্তে কমে যাবে । অটোমেটেড মেশিনে কাপড় সেলাই হলে গার্মেন্টস শিল্প দ্রুত বিলীন হয়ে যাবে। এছাড়াও ভবিষ্যতে 'ব্যাংকিং সেক্টর' কাস্টমার সার্ভিস ও টপ ম্যনেজমেন্ট ছাড়া বাকি কাজগুলো দ্রুত স্বয়ংক্রিয় হয়ে যাবে । ইতোমধ্যে টাকা জমা দেয়া ও নেয়া দুটি পদ্ধতিই চালু হয়ে গেছে । এক পর্যায়ে সরকার অনেকগুলো ব্যাংক না রেখে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে সব অপারেশন পরিচালনা করতে পারে। সকালে ঘুম থেকে হতে উঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সংসারের যাবতীয় কাজ যেমন রান্না-বান্না, কাপড় ধোয়া ও পরিষ্কার ইত্যাদি সব মেশিন নির্ভর হয়ে যাবে । অনেকে ফুডপান্ডার মতো অ্যাপসে অনলাইনে অর্ডার দিয়ে নিয়মিত বাসায় খাবে, যার ফলে বাসায় রান্না করার প্রবণতা কমবে। এভাবে করোনার মত ঝুঁকি কমাতে ও সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে বিদেশের মত বাংলাদেশের মানুষও বাসায় আর কাজের লোক রাখবেনা । বাংলাদেশে যদি কখনো মনুষ্যবিহীন গাড়ীর ড্রাইভিং চালু হয়, অনেক ড্রাইবারের চাকরিও থাকবেনা । প্রত্যেকটি দেশের প্রতিরক্ষা ও যুদ্ধের কৌশলে ইতিমধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে । প্রতিরক্ষার প্রধান কাজ হবে করোনার মত বিভিন্ন ভাইরাস প্রতিরোধ, ড্রোন, ক্ষেপনাস্ত্র, যুদ্ধবিমান ইত্যাদি পরিচালনা করা। এর ফলে রাষ্ট্র দক্ষ কিছু সৈনিক রেখে বাকি সাধারণ সৈনিকদের সংখ্যা কমিয়ে ফেলবে । এভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মাধ্যম অটোমেটেড মেশিন, রোবট, বিগ ডাটার ব্যবহার করে প্রত্যেক সেক্টরে মানুষের কর্মক্ষেত্র ছোট হয়ে আসবে আর বেকারত্বের হার লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকবে । রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে করোনায় পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে, বাংলাদেশের কক্সবাজারে অবস্থিত পৃথিবীর বৃহত্তম রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবির যেখানে বর্তমানে ১১ লাখেরও অধিক মায়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত নাগরিক বসবাস করছে। রোহিঙ্গাদের এই সংখ্যা কক্সবাজারের স্থানীয়দের তুলনায় প্রায় দিগুন এবং ভুটান, মালদ্বীপেরে জনসংখ্যার থেকে বেশি। উন্নত দেশগুলো যেখানে নিজেদের নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে যেখানে হিমশিম খাচ্ছে সেখানে বাংলাদেশের মত জনবহুল ও উন্নয়নশীল একটি দেশের করোনার আঘাত মোকাবেলার মত অর্থ, সামর্থ্য ও অবকাঠামোসহ নানা ভিদ সীমাদ্ধতা রয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে ইউরোপ-আমেরিয়াকায় করোনার ফলে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের জন্যে অর্থের বরাদ্ধ কমে যেতে পারে। এমতবস্থায়, সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের জন্যে এই বিশাল জনগোষ্ঠীর অন্ন, বস্ত্র, স্বাস্থ্য ও বাসস্থানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক কঠিন হয়ে পড়বে এছাড়াও ‘করোনা পরবর্তী বিশ্বে’ চীনের নেতৃত্বে আসলে বাংলাদেশ থেকে তাদের মায়ানমারে ফিরে যাওয়া ও আন্তর্জাতিক সুবিচার প্রাপ্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে। এভাবে বাংলাদেশে করোনার আগের চেয়ে পরের সংকট তীব্র হবে। বিশ্বমন্দার প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নাটকীয় পরিবর্তন আসতে পারে। বিদেশী অনুদানসহ প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স কমে যেতে পারে। সরকাররে কোষাগারে সবকিছুতে টান পড়বে। রাষ্ট্র একশ্রেণিকে বাঁচাতে গেলে অন্য শ্রেণী বঞ্চিত হবে । সামাজিক দুরত্ব ও আস্তিরতা বেড়ে যেতে পারে। আইন শৃংখলার অবনতি হওয়ার পাশপাশি রাজনীতির মাঠ ও প্ররিবর্তন হয়ে যেতে পারে। এই জন্যে সরকার কে এখন থেকে বিভিন্ন অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ সদূর প্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে আঘাতে হবে। জিয়া উদ্দীন, প্রকল্প ব্যবস্থাপক, সেন্টার ফর পিস এন্ড জাস্টিস, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। Email: [email protected]
×