ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা আতঙ্কে গোটা বরিশাল হোম কোয়ারেন্টাইনে

প্রকাশিত: ০২:৩৮, ৩১ মার্চ ২০২০

করোনা আতঙ্কে গোটা বরিশাল হোম কোয়ারেন্টাইনে

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ রাস্তাঘাট জনমানব শুন্য। যানবাহন ও পথচারীদের কোলাহল নেই। এ যেন ‘ভূতুড়ে শহর’ এ পরিণত হয়েছে একসময়ের ব্যস্ততম ও কোলাহলের বরিশাল শহর। করোনাভাইরাসের আতঙ্কে নিশ্চুপ হয়ে গেছে শহরসহ গোটা বরিশাল জেলা। অনেকেই শহর ছেড়েছেন। যারা আছেন তারা শহরে ঘরবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। বিশেষ কোন প্রয়োজন ছাড়া তারা কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। তবে জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন কাউকে কাউকে বাসা থেকে বের হতে হচ্ছে। তবে অলিগলিতে কোথাও কোথাও কিশোর-তরুণদের আড্ডা দেখা গেছে। করোনাভাইরাস বিস্তার ঠেকাতে নগরীর স্কুল-কলেজ, দোকানপাট, শপিংমলের অধিকাংশই বন্ধ রয়েছে। বিভাগীয় শহর বরিশাল থেকে প্রকাশিত প্রায় ৩৬টি দৈনিক পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ রাখা হয়েছে। মূল সড়কগুলোতে র‌্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল চলছে। এদিকে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ২২৫টি মহল্লার ৫৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা ও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের তিনটি থানা নিয়ে সিটি কর্পোরেশন গঠিত। ২০১১ সালের আদমশুমারি বলছে প্রশাসনিক এই এলাকায় ৩ লাখ ২৮ হাজার ২৭৮ জন মানুষ বসবাস করেন। আর কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, বিগত ৯ বছরে জনসংখ্যা বেড়ে পাঁচ লাখ ছাড়িয়েছে। এতো মানুষের এ শহরে আজ আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। কোভিড-১৯ এর বিস্তার ঠেকাতে কার্যত অবরুদ্ধ নগরীর বাসিন্দাদের জীবন-যাপন বদলে যাচ্ছে। পরিবর্তন এসেছে প্রাত্যহিক কাজেও। অনেকেই ঘরে বসে কাজ করার পদ্ধতিতে খুশিও হতে পারছেন না। নিত্যপণ্যের বাজারের জন্য অনেকে ঝুঁকেছেন অনলাইন শপের দিকে। পাড়ায়-পাড়ায় মাইকে চলছে করোনা সতর্কতার বার্তা প্রচার। করোনাভাইরাসের ছোবলে সারাবিশ্ব যখন কাঁপছিল, তখনও বাংলাদেশের জনজীবন ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু মাত্র কয়েকদিনেই পাল্টে গেছে চিত্র। স্তব্ধ জীবনে এখন নানা শঙ্কা আর অস্বস্তির উঁকিঝুঁকি। বিশ্বের অন্যতম ঘণবসতিপূর্ণ এই দেশে অতি সংক্রামক এই ব্যাধি বাংলাদেশে ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পরলে কী পরিণতি ঘটবে-তা নিয়ে সবার মধ্যে রয়েছে উদ্বেগ-আতঙ্ক। জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, সকলের সচেতনতার মাঝে করোনা প্রতিরোধে ঘরে বন্দি দিনমজুর, দুঃস্থ ও অসহায় পরিবারের কেউ না খেয়ে থাকবেন না। এ জন্য জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার খাদ্যসামগ্রী ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে না আসা পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
×