ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিএসবিএ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে নবজাতকের মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৮:০৫, ২৯ মার্চ ২০২০

বিএসবিএ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে নবজাতকের মৃত্যু

নিজস্ব সংবাদদাতা, সীতাকুন্ড, চট্টগ্রাম ॥ চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের ভাটিয়ারি ষ্টেশন রোড এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ শীপ ব্রেকার্স এসোসিয়েশন(বিএসবিএ)হাসপাতালে সড়ক দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত নবজাতকের চিকিৎসা সেবা না পাওয়ায় মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তবে এ বিষয়ে জানতে হাসপাতালটির পরিচালক মুন্নার(০১৬১৯১৭১৬৯৬) মুটোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও ফোন রিসিভ না হওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। শনিবার দিবাগত রাত দুইটার সময় উপজেলার ভাটিয়ারি মাদামবিবিরহাট নামক এলাকায় এই দূর্ঘটনা ঘটে এবং রবিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চমেক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। একই ঘটনায় আহত হয়েছে নবজাতকের সাথে থাকা পিতা ও নানী। তবে তিনজনই আহত হওয়ায় নাম-ঠিকানা জানা সম্ভব হয়নি। জানা যায়,শনিবার রাতেই পাশবত্বী উপজেলা মীরশ্বরাই এলাকার বারৈয়ারহাট পৌরসভার একটি হাসপাতাল থেকে সদ্য একটি নবজাতককে উন্নত চিকিৎসার জন্য ডাক্তার প্রেরণ করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু ভাগ্যর নির্ন্মম পরিহাস সীতাকু- উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মাদামবিবিরহাট নামক এলাকা নবজাতককে আরোহনকারি অ্যাম্বুলেন্স অতিক্রমকালে একইমুখি একটি লরি গাড়ি সজোরে অ্যাম্বুলেন্সের পিছনে ধাক্কা দেয়। এতে অ্যাম্বুলেন্সের পিছনের অংশ দূমড়ে-মূচড়ে গিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা নবজাতকসহ আরো দুই আরোহি গুরুতর আহত হয়। গভীর রাতে মহাসড়কে নবজাতককে নিয়ে যখন সাথে থাকা নানী ও পিতা দিশা না পেয়ে দ্বি-বিদ্বিক ছুটাছুটি করছিল,ঠিক তখন বাজারের দারোয়ান থেকে খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিক মামুন ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সাহেদ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং গুরুতর আহত শিশুটিকে তাদেরই মোটর সাইকেল যোগে ভাটিয়ারি ষ্টেশন রোড এলাকায় অবস্থিত বিএসবিএ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু ডাক্তার,নার্স কেউই নবজাতককে ধরেও দেখলো না এবং তার সাথে থাকা আহতদেরও চিকিৎসা সেবা দিল না। এরপর স্থানীয় সাংবাদিক মামুন ও সাহেদ বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসকে অবগত করলে,উনার এসে নবজাতকসহ আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্ত অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরনের কারণে রবিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চমেক হাসপাতালে নবজাতকটি মত্যুবরণ করেন। হাইওয়ে পুলিশ ঘাতক লরি ও আম্বুলেন্সটি থানায় নিয়ে যান। দূর্ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ভাটিয়ারি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিদুল ইসলাম সাহেদ বলেন,‘স্থানীয় বিএসবিএ হাসপাতালে যদি কর্তব্যরত ডাক্তার নবজাতক শিশুটির চিকিৎসা সেবা অন্তত পক্ষে রক্তক্ষরণ বন্ধ করা যেত,তাহলে হয়তো শিশুটি বেঁচে যেত এবং তার মায়ের বুক খালি হতো না,উপজেলার মাদামবিবিরহাট থেকে দীর্ঘপথ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে সময় ক্ষেপন হওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শিশুটি রবিবার সকালে মৃত্যুবরণ করেন।’ সীতাকুন্ডের বার আউলিয়া হাইওয়ে পুলিশের এ.এস.আই জসিম বলেন,‘গভীর রাতেই স্থানীয় সাংবাদিক মামুন ও সাহেদ মেম্বার সড়ক দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত নবজাতকের পাশে দাঁড়িয়ে মানবতার পরিচয় দিয়ে ছিল। কিন্তু বিএসবিএ হাসপাতাল কৃতপক্ষের অপারগতায় রক্তক্ষরণে শিশুটি মৃত্যুর হতে পারে বলে আমি মনে করি।’
×