ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা আতঙ্কে মাস্কের রমরমা ব্যবসা

প্রকাশিত: ০৯:২১, ২৯ মার্চ ২০২০

করোনা আতঙ্কে মাস্কের রমরমা ব্যবসা

রিয়াদ হাসান ॥ করোনার প্রাদুর্ভাবে পুরো বিশ্বের অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থা। বাংলাদেশেও এর চিত্র ভিন্ন নয়। কিন্তু করোনা থেকে বাঁচতে আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রের চলছে রমরমা বাণিজ্য। পেশা পাল্টিয়ে অনেকেই নেমেছে মাস্ক ব্যবসায়। ১০-২০ টাকা দামের মাস্ক এখন দেদারসেই বিক্রি হচ্ছে ৫০-১০০ টাকায়। যদিও এসব মাস্কের কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ। আর যেসব মাস্ক ভাল মানের সেগুলো বিক্রি হচ্ছে ১৫০-২৫০ টাকায়। রাজধানীর চকবাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারি ও খুচরা হারে বিক্রি হচ্ছে এসব মাস্ক। ক্রেতারাও ভিড় জমিয়েছে এসব দোকানে। এসবের বেশিরভাগই আগে ছিল জন্মদিন এবং বিভিন্ন পার্টি অনুষ্ঠানের ডেকোরেশন জিনিসপত্রের দোকান। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে এসব দোকানের এখন মূল ব্যবসা মাস্ক বিক্রি। শফিক আহমেদ নামের এক মাস্ক বিক্রেতা বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের কারণে মাস্কের চাহিদা এখন সবচেয়ে বেশি। এইজন্য দোকানে এখন মূলত মাস্ক বিক্রি করছি। ক্রেতারাও এখান থেকে পাইকারি ও খুচরা হারে মাস্ক কিনে নিয়ে যাচ্ছে।’ আহমেদ শরীফ নামের আরেক বিক্রেতা জানান, প্রতিদিন দোকানভেদে খুচরা মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ২০০-৩০০ পিস। এবং পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১০০০ পিস। এসব মাস্কের বেশিরভাগই তৈরি হয় কালীগঞ্জ, উত্তরা, জিঞ্জিরাসহ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায়। চাহিদা আকাশচুম্বী হওয়ায় এখন এসব মাস্ক তৈরি হচ্ছে রাজধানীজুড়ে বিভিন্ন টেইলার্সে। এছাড়াও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে চাইনিজ, থাই এবং ইন্ডিয়ান মাস্ক। তবে এসব মাস্ক বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। ইন্ডিয়ান মাস্ক মানভেদে ১৫০-২৫০ টাকায়, চাইনিজ মাস্ক ১০০-৩০০ টাকায়, এবং থাই মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ৮০-২০০ টাকায়। আশিকুল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা বলেন, ‘যেসব মাস্ক আগে ১০-২০ টাকায় পাওয়া যেত সেগুলো এখন ৫০-১০০ টাকায় কিনছি। মানুষের বিপদের দিনে এ দেশের ব্যবসায়ীরা ওঁৎপেতে থাকে সর্বোচ্চ মুনাফা লাভের।’ এছাড়াও বিভিন্ন ফার্মেসি ঘুরে দেখা যায় মাস্ক, স্যানিটাইজার এবং হ্যান্ড গ্ল্যাভসের আকাল। অনেক দোকানে ‘মাস্ক নেই’ লেখা পোস্টার ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। এসব দোকানে কথা বলে জানা যায়, চাহিদার চেয়ে যোগান কম থাকায় মাস্কের এমন দুষ্প্রাপ্যতা। এছাড়াও হ্যান্ড গ্ল্যাভস এবং স্যানিটাইজারও পাওয়া যাচ্ছে প্রয়োজনের চেয়েও কম। নামী বেনামী বিভিন্ন কোম্পানির স্যানিটাইজার পাওয়া গেলেও দাম রাখা হচ্ছে বেশি। মোহাম্মদ হাছান নামের আরেক ক্রেতা জানান, বাজারে এখন যেসব মাস্ক বিক্রি হচ্ছে সেসবের কার্যকারিতা শূন্যের ঘরে। স্থানীয়ভাবে তৈরি এসব মাস্কের বেশিরভাগই সাধারণ কাপড় দিয়ে তৈরি। আর এতে যে ফিল্টার ব্যবহার করা হচ্ছে তাও অকার্যকর। তারপরেও উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়েই কিনতে হচ্ছে এসব মাস্ক। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস থেকে বাদ যায়নি বাংলাদেশও। ইতোমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। আক্রান্ত ৩৩ জন। সারাবিশ্বে মৃতের সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়েছে। হু হু করে বাড়ছে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। চীন, ইতালি, ইরানের পর স্পেনেও ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এই মহামারী।
×