ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

করোনায় শুভেচ্ছাবাণীতে সীমাবদ্ধ নাট্যদিবসের আনুষ্ঠানিকতা

প্রকাশিত: ০৯:৫৪, ২৮ মার্চ ২০২০

  করোনায় শুভেচ্ছাবাণীতে সীমাবদ্ধ  নাট্যদিবসের আনুষ্ঠানিকতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শুক্রবার ছিল বিশ্ব নাট্যদিবস। থিয়েটার বা নাট্যকর্মীদের জন্য আনন্দ ও প্রেরণাময় এক দিন। তাই প্রতিবছর সাড়ম্বরে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী সাড়ম্বরে উদ্্যাপিত হয় দিবসটি। বিগত বছরগুলোয় নাট্যদিবসের আয়োজনে রঙিলা রূপ পেয়েছে রাজধানীর সংস্কৃতি ভুবন। দিনভর থাকতো নাট্যকর্মীদের আড্ডামুখর প্রীতি সম্মিলনী। বিকেলে নেচে-গেয়ে নানা অনুষঙ্গকে সঙ্গী করে থিয়েটার অন্তঃপ্রাণরা বের করত আনন্দ শোভাযাত্রা। সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় থাকত বর্ণিল অনুষ্ঠান। সে অনুষ্ঠানে নাটকের জন্য নিবেদিত প্রাণ ব্যক্তিকে প্রদান করা হতো সম্মাননা। বিশ্ব নাট্যদিবসের বাণী পাঠ, স্মারক বক্তৃতার সঙ্গে পরিবেশিত হতো বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কিন্তু ভয়ঙ্কর ভাইরাস করোনার প্রভাবে এ বছর উধাও হয়ে গেছে সেই সুন্দরতম দিন। সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশেও অনুষ্ঠিত হয়নি বিশ্ব নাট্য দিবসের কোন অনুষ্ঠান। পত্রিকায় শুভেচ্ছাবাণী প্রকাশের মাধ্যমে সীমাবদ্ধ ছিল আনুষ্ঠানিকতা। প্রতিবছর যৌথভাবে নাট্যদিবসের আয়োজন করে ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট (আইটিআই), বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান ও পথনাটক পরিষদ। বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও বিশ্ব নাট্যদিবস উদ্যাপনে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল বলে জানান গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজিদ। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, দিবসটি উদ্্যাপনে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এবার সম্মাননাপ্রাপ্ত দুজন নাট্যজনকে নির্বাচিতও করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন চট্টগ্রামের মিলন চৌধুরী। তিনি দেশের প্রথম পথনাটকের রচয়িতা। অপরজন হলেন জ্যেষ্ঠ নাট্যব্যক্তিত্ব পরেশ আচার্য। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে তাদের হাতে এই সম্মাননা তুলে দেয়া হবে। এ বিষয়ে বিশ্ব আইটিআইয়ের সাম্মানিক সভাপতি নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার জনকণ্ঠকে বলেন, প্রতিবছরেরর মতো এবারও আমরা সাড়ম্বরে বিশ্ব নাট্যদিবস উদ্যাপনের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। দিবসটি উদ্্যাপনে নানা পকিল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল হয়েছিল। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে সেই আয়োজন স্থগিত করা হয়েছে। করোনার কারণে এখন সারা বিশ্বে নতুন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছি। গভীর সঙ্কটে আছে মানবজাতি। আর আমরা শিল্পচর্চা করি মানুষের জন্য। তাই সবার আগে ভাবতে হবে মানুষের নিরাপত্তার কথা। অনুষ্ঠান-আয়োজন থেকে বিরত থেকে জনসমাগম পরিহার করে জনগণের স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলা করতে হবে। পরবর্তীতে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে সব নাট্য ও সংস্কৃতিকর্মী ঐক্যবদ্ধ হয়ে শিল্পের শক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করব। শিল্পের সেই শক্তি দিয়েই জীবন জয়ের স্বপ্ন নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াবো। তখন হয়তো ছোট্ট আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে হলেও নাট্যদিবস উদ্যাপনের উদ্যোগ নেয়া হবে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৬২ সালে ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকিতে প্রথম বিশ্ব নাট্যদিবস উদ্যাপিত হয়। বিশ্বের দেশে দেশে নাটকের উন্নয়ন সাধন এবং সব নাট্যকর্মীর মাঝে ঐক্য স্থাপন এবং সম্প্রীতি ও উদ্দীপনা সৃষ্টির লক্ষ্যে দিবসটির প্রবর্তন করে ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট। সেই ধারাবাহিকতায় আইটিআই বাংলাদেশ শাখার উদ্যোগে ১৯৮২ সালে শহর ঢাকায় প্রথম দিবসটি উদ্যাপনের রেওয়াজ শুরু হয়। ১৯৮৬ সালে যৌথভাবে দিবসটি উদ্যাপন করে আইটিআই বাংলাদেশ কেন্দ্র ও বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন। মূলত ১৯৯১ সাল থেকে এদেশে জমে ওঠে বিশ্ব নাট্যদিবসের উদ্্যাপনের আনুষ্ঠানিকতা।
×