ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পার্কেও মানুষের তেমন দেখা মিলছে না

প্রকাশিত: ০৮:৩১, ২৮ মার্চ ২০২০

 পার্কেও মানুষের  তেমন দেখা  মিলছে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নোভেল করোনাভাইরাস আতঙ্ক মানুষের স্বাভাবিক জীবনের রংও শুষে নিয়েছে। কিছুদিন আগেও সকাল-বিকাল দলবেঁধে হাঁটা, ব্যায়াম, আড্ডায় রাজধানীর পার্কগুলো মুখরিত থাকলেও ভাইরাস আতঙ্কে বেশিরভাগ স্বাস্থ্য সচেতন মানুষই নিজেদের খোলসবন্দি করে ফেলেছেন। রমনা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, গুলশানের বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ পার্ক- কোথাও এখন তেমনটা দেখা মেলেনা এসব মানুষের। রবিবার রমনা পার্কের গেটে ঝুলতে দেখা গেল করোনাভাইরাস বিষয়ক সতর্কবার্তা। সুনসান রমনা পার্ক আগে রমনা পার্ক সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকলেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে পার্ক কর্তৃপক্ষ সকাল ৬টা থেকে ১০টা এবং বিকেল ৪টা থেকে ৭টা পর্যন্ত প্রবেশের সময় বেঁধে দিয়েছে। বেলা ১১টায় হাঁটতে এসে পার্কের গেটে এমন নোটিস দেখে মনোক্ষুণœ হন কয়েকজন। বাধ্য হয়ে তারা পার্কের বাইরের ফুটপাথেই হাঁটার কাজটি সেরে নেন। সিদ্ধেশ্বরীর বাসিন্দা মমতা আহমেদ বলেন, ভোর বেলা হাঁটতে পারি না। সেজন্য ১০/১১টা দিকে নিয়মিত রমনা পার্কে আসি। এই নোটিসের কারণে এখন পার্কের বাইরে ফুটপাথে ওয়ার্কিং করছি। কিছু করার নেই। কারণ হাঁটা আমরা রেগুলার প্র্যাকটিস। তবে পার্কে কর্তৃপক্ষের এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থার প্রশংসা করেন বেইলি রোডের সরকারী কোয়ার্টারের বাসিন্দা নাসরিন সুলতানা। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সতর্কতামূলক এই ব্যবস্থা আমি মনে করি জরুরী ছিল। কারণ এই পার্কে সকাল থেকে নানা শ্রেণীর মানুষজন আসেন। অনেকে ব্যায়াম করতে আসেন। আবার অনেকে আসেন সময় কাটাতে। কেউ আসেন সবুজ আঙিনায় বিশ্রাম নিতে, ভবঘুরের মানুষজনও কম আসেন না। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এলাকাটি ভীষণ রিস্কি জোন বলে আমি মনে করি। রমনা পার্কের ঝাড়ুদার শেফালী জানান, করোনাভাইরাসের ভয়ে পার্কে আগের মতো মানুষজন আসে না। অনেক কইমা গেছে। মানুষজন কইমা গেলেও গাছ-গাছড়ার পাতা-টাতা পড়া ভইরা গেছে। খালি পার্কে ঝাড়ু দিয়া সময় কাটাই। গুলশানে বিচারপতি সাহাবুদ্দিন পার্কেও একই অবস্থাও। অভিজাত এলাকার এই পার্কের কর্মী ফজলু জানান, এক সপ্তাহ ধরে পার্কে মানুষজনের আনাগোনা কমে গেছে। যেসব স্যাররা নিয়মিত আসতেন, তারা এখন কিছুটা গ্যাপ দিয়ে আসেন। এই পার্কে বিদেশী কূটনীতিক, সরকারী-সামরিক-বেসামরিক উর্ধতন কর্মকর্তা, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বিত্তবান মানুষরাই সকাল-সন্ধ্যায় শরীরচর্চা করতে আসেন। এই পার্কে পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও বেশ ভাল। প্রতিদিন এই পার্কে সকালে হাঁটেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা তোজাম্মেল হোসেন। তিনি বলেন, ওয়ার্কিং করতে আসি শরীরটা ঠিক রাখার জন্য। এটা আমরা ডেইলি রুটিন। কারণ আমি ডায়াবেটিসের রোগী। এই পার্কে যে কেউ প্রবেশ করতে পারে না, কিছুটা ব্যারিয়ার আছে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে মানুষজনের মুভমেন্ট এমনিতেই সীমিত হয়ে গেছে। এর প্রভাব পার্কেও পড়েছে, এটাই স্বাভাবিক। গুলশান ৮৯ নম্বর সড়কে একটি ভবনের নিরাপত্তাকর্মী জানান, করোনাভাইরাসের কারণে এলাকার ‘সাহেব’রা ঘরেই থাকেন। খুব একটা প্রয়োজন না হলে তারা বের হন না। শুধু তাই নয়, গুলশানের অনেক বাসায় বিদেশী নানা জাতের কুকুর পোষা হয়।
×