ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

লকডাউনের মাসুল গুনতে হবে ভারতসহ বহু দেশকে

প্রকাশিত: ০৭:২৬, ২৮ মার্চ ২০২০

 লকডাউনের মাসুল গুনতে  হবে ভারতসহ বহু দেশকে

করোনাভাইরাস রুখতে অনেক দেশ সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। নাগরিকদের কোয়ারেন্টাইন করে রেখেছে। ফলে উন্নয়নশীল ভারতসহ প্রতিবেশী অনেক দেশের সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। এসব দেশের বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠী দেশের বাইরে থাকে। পড়াশোনা অথবা কাজের জন্য তারা দীর্ঘদিন বিদেশে আছে। এরা তড়িঘড়ি করে দেশে ফিরেছে। ফলে এ রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অপরদিকে যারা আসতে পারেননি তারা তাদের পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতে পারছেন না। ফলে দেশের অর্থ প্রবাহ কমে গেছে। এ অঞ্চলের অনেক দেশের অর্থনীতি প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। এসব দেশের অনেক নাগরিক পরিবারের কথা ভেবে দেশে ফেরেনি। ফলে তারা যে দেশে অবস্থান করছেন সেখানেও একটা বোঝায় পরিণত হতে যাচ্ছে। কারণ সে সব দেশের প্রকৃত নাগরিকরাই চিকিৎসা পেতে হিমশিম খাচ্ছে। ভারতের এক কোটি ৭০ লাখ লোক বিদেশে কাজ করে। দেশটির সরকার বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের দেশে না ফেরার পরামর্শ দেয়। ভারতের ইনফ্লুয়েঞ্জা বিভাগের প্রধান ললিত কান্ত বলেন, বিদেশে অবস্থানরতরা এই সময় দেশে ফিরলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হতে পারত। আমাদের সমগ্র স্বাস্থ্য পরিস্থিতির ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ত। ভারত ইরান ও ইতালিতে করোনা চিকিৎসার জন্য ইতোমধ্যে একাধিক মেডিক্যাল টিম পাঠিয়েছে। আবার চীনে এই পরিস্থিতি শুরুর পর থেকে দেশটিতে বসবাসরত বহু ভারতীয় দেশে ফিরে আসেন। সম্প্রতি ইরান ও ইতালি থেকেও অনেকে ফিরেছেন। দুবাইতে বসবাসরত ৫১ বছর বয়সী কৃষ্ণকুমার নায়ার বলেন, এখানে বসবাসরত অনেক ভারতীয় দেশে ফেরেনি। কারণ তাদের মধ্যে আশঙ্কা রয়েছে যে, তারা দেশে ফিরলে আর এখানে ফিরতে নাও পারেন। আবার ভারতে ফিরে গেলে তারা প্রত্যাশিত চাকরি আর ফিরে পেতে নাও পারেন। আবার বিমানে যেতেও অনেকে ভয় পেয়েছেন। ওদিকে ভারতে পা রাখা মাত্র তাদের বাধ্যতামূলক অন্তত ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। কৃষ্ণকুমার নায়ার আরও বলেন, আমি যে কোম্পানিতে কাজ করি এখানে আমার মতো অন্তত এক হাজার ভারতীয় কাজ করেন। এ রকম অনেক কারণ ভেবে আমি ভারতে ফিরে যাইনি। ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, ফিলিপিন্স ও মেক্সিকোর একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জনতা কাজের জন্য বাইরে অবস্থান করেন। এসব দেশের অর্থনীতি প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের ওপর নির্ভরশীল। এ জন্য নেপাল ও ফিলিপিন্স তাদের শ্রমিকের দেশের বাইরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। গত সপ্তাহে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইউরোপ, তুরস্ক ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। চলতি মাসের শেষ নাগাদ পর্যন্ত এ বিধিনিষেধ বলবত থাকবে। ভারতে করোনাভাইরাসে অন্তত চারজন মারা গেছে। এর আগে করোনাভাইরাসে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে ভারতের কর্ণাটক, দিল্লী­ও মহারাষ্ট্রে। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে ইতোমধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৩ জনে। উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ুতে নতুন করে কয়েকজন সংক্রমিত হয়েছেন। গোটা দেশের হিসাবে মহারাষ্ট্রে করোনাভাইরাস সংক্রমণ এখন পর্যন্ত সর্বাধিক। গবেষকদের আশঙ্কা আগামী চতুর্থ এবং পঞ্চম সপ্তাহে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে। -ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল অবলম্বনে
×