ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রণব মজুমদার

গল্প ॥ অনাথের ডাক্তারগিরি

প্রকাশিত: ১১:০১, ২৭ মার্চ ২০২০

গল্প ॥ অনাথের ডাক্তারগিরি

পাল বাজারের আদালত মুখের গলিটা বেশ সরু! দুটো রিক্সা একসঙ্গে আসা যাওয়া করতে ভারি কষ্ট হয়! এ গলিতে যদি একটা ঠেলাগাড়ি ঢুকে তাহলে রাস্তা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গলিটার নাম বকুলতলা রোড। সড়কের প্রথমভাগে দু’পাশে বেশিরভাগই কাঁচামালের আড়ত। আরও আছে গিরিশ সাহার বিখ্যাত মিষ্টির দোকান প্যারাডাইস, উকিল বিমল বোসের বৈঠকখানা, মালেক মিজির রেশন দোকান ও কিছু খাবার হোটেল। আর আছে নামকরা ডাক্তার কে কে মজুমদারের ডিসপেনসারি নীলিমা ডেন্টাল হল। দিনের অধিকাংশ সময় এ রাস্তায় ক্রেতা বিক্রেতার ভিড় লেগে থাকে। দু’জন রিক্সাওয়ালার মধ্যে প্রচ- ঝগড়া! - তুই শালা, আমার লুঙ্গি টান দিলি ক্যা? - আমার রিক্সা ঠেলা দিলি কিল্লিগ্যা? আমার মাল পইড়া গ্যাছে! হমদ্দির পুত আমারে চিনস? আমি লন্ডনঘাটের কেংটা রইস্যার ভাগিনা! তরে আইসকা খাইছি! যে রিক্সাওয়ালা ধাক্কা মেরে পটল ফেলে দিয়েছে সে রইস্যা মাস্তানের কথা শুনে ভয় পেয়ে চুপসে গেল। বস্তা থেকে ভেজা রাস্তায় পটল গড়াগড়ি খাচ্ছে! দুই রিক্সাওয়ালার মধ্যে হাতাহাতি পর্যায়ে চলে গেল! চেঁচামেচির শব্দ শুনে পাশের নীলিমা ডেন্টাল হলের কম্পাউন্ডার এবি মজুমদার ছুটে এলেন! ধমক দিয়ে বললেন ‘হামারজাদা তোগ জ্বালায় ডাক্তারবাবুও রোগী দেখতে পাচ্ছে না!’ - কি পাইছস তোরা? পটলগুলো বস্তায় তুলে দিয়ে এবি রিক্সা দুইটিকে দুই আড়তে পাঠিয়ে দিলেন। এবি মানে অনাথ বন্ধু। পালবাজারের যে কোন সমস্যা সমাধানে এই এবি পারুক আর না পারুক স্বেচ্ছায় এগিয়ে যাবে। বড় ভাই কে কে মজুমদার অর্থাৎ কালী কৃষ্ণ মজুমদার শহরের বড় চিকিৎসক। রোগীদের মুখ ও চেহারা দেখে চিকিৎসা দেন। ওষুধের চেয়ে পথ্যকেই বেশি গুরুত্ব দেন তিনি! এ চিকিৎসকের ভাল গুণ হলো অসহায় গরির রোগীদের বিনামূল্যে সেবা দেয়া। টাকা পয়সা না থাকলে কোন কোন রোগী নিজের চাষের ফসল কিংবা গাছের ফল ফলাদি দিয়ে এখানে চিকিৎসা নেন। মহকুমা শহরে এলএমএফ চিকিৎসক একমাত্র কে কে বাবুই। ফর্সা গায়ের রং। লোমশ শরীর। নিজের বড় পরিবারে আর্থিক টানাটানি থাকলেও উপার্জনের অর্থ অসহায়দের বিলিয়ে বেড়ান। শহর ছাড়াও পুরনো বাজার, ফরিদগঞ্জ, হাইমচর, রামগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, শাহারাস্তি ও মতলব থেকে রোগী আসে নীলিমা ডেন্টাল হলে। ব্যথা উপশম, দাঁত তোলা, বাঁধানো ছাড়াও সাধারণ রোগের চিকিৎসা দেন জনহিতকর ডাক্তার কে কে। সমাজকল্যাণ কাজের জন্য যেদিন চিকিৎসালয়ে ডাক্তার বাবু আসেন না সেদিন তার সহকারী এবিই চিকিৎসক বনে যায়! ডাক্তার বাবু না থাকলে এবি রোগী দেখেন। পরে সে রোগী দ্বিতীয়বার যখন এসে কে কে মজুমদারের কাছে সমস্যা নিয়ে দ্বারস্থ হন তখনই ধরা পড়ে যায় এবির কা- কারখানা! এ নিয়ে ডাক্তার বাবুর সঙ্গে কম্পাউন্ডার এবির বচসাও হয় মাঝে মাঝে। বড় ভাই এবিকে প্রায়ই বলেনÑ ‘ভালমত আগে কাজ শিখ অনাথ! কিন্তু অনাথ বড়দার কথা গায়ে মাখে না। মতলব বরদিয়া থেকে মধ্য বয়স্কা মহিলা রোগী হাজেরা সুলতানা এলো। বকুলতলা রোডের কাঁচামালের আড়তদার লুতু পাটওয়ারীর দূর সম্পর্কের মামাতো ছোট বোন হাজেরা। স্বামীকে নিয়ে এসেছেন! ডাক্তার বাবু ছিলেন না সেদিন দুপুরে। প্রচ- দাঁতের ব্যথা! ব্যথার যন্ত্রণায় তিন রাত ঘুমতে পারে না হাজেরা। চল্লিশোর্ধ এ মহিলা চার মাসের দুধের বাচ্চাকে ননদের কাছে রেখে বেবি ট্যাক্সি করে চলে এসেছেন। নব্য ডাক্তারের অনুমতি পেয়ে দন্ত চিকিৎসার উঁচু নিচু করা চেয়ারে বসলো যন্ত্রণায় কাতর হাজেরা। তারে ঝুলানো লাইট মাথার সামনে নেয়া হলো। তারপর মুখ দেখে এবি বললেন ‘রোগীর কেইস জটিল!’ মাড়ি ফুলে গেছে! ওপরের দুই দাঁত খেয়ে ফেলেছে! দাঁত দুটোই ফেলতে অইবো! দুই শ’ টাকা লাগব! আঁতকে উঠলেন স্বামী! - কি কন ডাক্তার বাবু? এত্তো টেকা! - আচ্ছা আমনের লগে কতো আছে? - আশি টেকা। - ঠিক আছে এক শ’ দিয়েন - আচ্ছা ঠিক আছে প্রচ- ব্যথায় কাতরাচ্ছে রোগী। অনাথ বন্ধু জিজ্ঞাসা করলেন হাজেরা কিছু খেয়েছে কিনা। স্বামীর উত্তর - না! পাশের আড়ত ঘরের নিজাম ও স্বামীকে দিয়ে প্যারাডাইস থেকে ছোট্ট কাঁচের গ্লাসে গাভীর দুধ আনালেন অনাথ। সঙ্গে দু’টি বাবুল বিস্কুট। বিস্কুট ভিজিয়ে খুব কষ্টে দুধ খেল হাজেরা। অনাথ বন্ধু ডাক্তারখানার মুলির বেড়ার ওপরে লাগানো ঘড়ি দেখলেন। তারপর একটি পাইরালজিন ট্যাবলেট খাওয়ালেন রোগীকে। বললেন, ‘১৫ মিনিট হয়ে গেছে।’ মুখ অবশের ওষুধ কম্বাইন্ডিক ইনজেকশনের ভেতরে ঢোকানো হলো। তা দেখেই হাজেরার চিৎকার! স্বামী এসে তাকে জাপটে ধরল। নড়াচড়ার মধ্যেই তুলা ঠেসে ধরে এবি হাজেরার মুখের ওপরের মাড়িতে ইনজেকশনের সুই ঢুকিয়ে দিলেন। অস্বস্তিতে রোগী হাজেরা! কিছুক্ষণ পর সে মিহি গলায় বলল, আমার মুখ বারি অইয়া আইতাছে! Ñকি অইলো ডাক্তার বাবু? অর মুখ ফুলতাছে কা? Ñ আরে না কিছু না। এত ভয় পান কা? রোগীকে আবার দন্ত চিকিৎসার নির্ধারিত চেয়ারে বসানো হলো। অনাথ বন্ধু কাকের মুখের মতো লোহার একটা যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটিকে ডেটল তুলা দিয়ে মুছে নিলেন। তারপর রোগীর মুখের কাছে তা আনলেন। হাজেরা কিছুতেই মুখ খুলতে চাচ্ছে না। অনেক পীড়াপীড়িতে মুখ হা করল। যন্ত্রটা মুখে ভরে দিয়েই টেনে আনলেন একটি দাঁত। ফেলে দিলেন নিচে রাখা বালতিতে। একসঙ্গে দুটি দাঁত তোলা যায় না। বিয়য়টি কম্পাউন্ডার অনাথ গুরু ও বড়দা কালী কৃষ্ণের কাছে শুনেছেন। তাই এবি হাজেরার আরেকটি দাঁত তোলা সাহস করল না। নীলিমা ডেন্টাল হলে ডাক্তার কালী কৃষ্ণ মজুমদার দাঁত তোলায় ২০ থেকে ২৫ টাকা রাখেন। এখানে প্রতি দাঁতের অস্থায়ী ফিলিং ৩০ থেকে ৪০ টাকা। স্থায়ী ফিলিং ৫০ হতে ৭০ টাকা আর মুখ দেখে দিলে ১০ টাকা নেন কে কে। গরিব রোগীদের চিকিৎসার জন্য কোন মূল্য নেই। কিন্তু অনাথ বন্ধু মজুমদার অনাথের বন্ধু নন। বড় ভাইয়ের ঠিক উল্টো। রেশন শপ মালিক মালেক মিজি প্রায় বিকেলেই এই ডিসপেন্সসারি আসেন। ডাক্তার বাবুর সঙ্গে নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। ডাক্তার জ্ঞানে প-িত বলে ওনার কাছ থেকে উপদেশ ও পরামর্শ নেন তিনি। মালেক মিজি প্রায়ই আক্ষেপ করে বলেন, ‘কালী বাবুর মতো অইলি না অনাথ। ডাক্তার বাবুর কথা শুনে কাজ কর। কাম অইবো।’ অনাথের ২ ছেলে ও ২ মেয়ে। স্ত্রী মায়া রানী বড় ছেলেকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে চলে গেছে। ডাঃ কালী কৃষ্ণের স্ত্রী কুমিল্লার জমিদার পিতার একমাত্র কন্যা নীলিমা। বেশ দয়ালু। কাশিমপুর গ্রামে বাড়ির কাছে স্কুল নেই। দেবর অনাথের মাতৃহীন ছেলেমেয়েদের তাই নিজের কাছে নিয়ে এসেছেন। পড়াশোনা করাচ্ছেন তাদের। বউয়ের জন্য বিরহ অনাথের! পালের বাজারের ভেতরের দোকানে গিয়ে সে প্রায়ই মদ গিলে আসে। এ জন্য অতিরিক্ত অর্থ তার দরকার হয়। বড়দার অনুপস্থিতিতে এবি প্রায়ই ডাক্তার সেজে রোগী দেখে। গোপনে সে চৌধুরী আর্ট থেকে তিন লাইনের একটি সিল বানিয়ে রেখেছে। তাতে প্রথমে বড় করে লেখা অভিজ্ঞ দন্ত চিকিৎসক। পরের লাইনে ডাঃ এবি মজুমদার এবং নিচে নীলিমা ডেন্টাল হল লেখা। রোগী হাজেরার ক্ষেত্রে সেই সিল ব্যবহার করলেন অনাথ বন্ধু। ৫ ইঞ্চি লম্বা ও ৩ ইঞ্চি পাশ সাদা কাগজের ওপরে সিল মেরে ব্যবস্থাপত্র লিখলেন। পাইরালজিন ট্যাবলেট ৩ দিন (ব্যথা থাকলে) এবং পারদের গুঁড়া জলে মিশিয়ে মুখ ধোয়া ২ দিন। রোগী চলে গেল নীলিমা ডেন্টাল হল ছেড়ে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। হেমন্তের সন্ধ্যা তাড়াতাড়ি হয়ে যায়। অনাথ কালী কৃষ্ণের ডাক্তারখানায় তালা মেরে বের হয়ে গেল বকুলতলা রোড ছেড়ে। পালের বাজারের ভেতরে সুরিখানা। সেখান থেকে ঘণ্টা দেড়েক পর বের হলো সে। ডান হাত মুষ্টিবন্ধ করে দু’ আঙ্গুলের মাঝখানে রমনা সিগারেট তার। অনাথ তা মুখে নিয়ে টানছে। ধোঁয়া ছাড়ছে আর প্রলাপ করছে। - কুত্তার বাচ্চা কাউরে ছাড়ুম না। মনিরা তরেও ছাড়ুম না! আমার জীবনডারে শেষ করছস! কি খতি করচি তোর? তরে গোয়াই শালা! হমদ্দির পুত! মাতলামি দেখে পাশের দোকান থেকে বন্ধু দীনেশ ছুটে এলো। মাতাল অনাথকে ধরল। অনাথের একটি হাত দীনেশ তার কাঁধে রাখল। তারপর তাকে ছেছড়াতে ছেছড়াতে পালের বাজারে মূল ফটকে নিয়ে গেল। - ক্যান ছাইপাষ খাছ? দীনেশ রিক্সা ডেকে বলল - ওই মিয়া কোরাইল্লা রোড দত্ত বাড়ি যাইবা? - হ। তয় এক টাকা বেশি দিতে অইবো। দীনেশ রিক্সাওয়ালাকে ৩ টাকা দিয়ে দু’জন ধরাধরি করে রিক্সায় তুলে দেয়। ক’দিন পর রৌদ্রময় সকালে ডাক্তার বাবু কে কে মজুমদার তার ডিসপেন্সারিতে বসে পূর্বদেশ পত্রিকা পড়ছিলেন। উকিল বিমল বোস আদালতে যাওয়ার সময় নীলিমা ডেন্টাল হলে প্রায়ই আসেন। আজও এলেন চা খেতে। বৈঠকে এসে যোগ দিলেন পাল বাজারের বড় আড়তদার নূরু পাটওয়ারী। নূরুর ছেলের শ্বশুরবাড়ি বরিশাল শহরে। আজ রাতে তার ছেলে স্টিমারে করে বরিশাল যাবে। - গাজী স্টিমার অহন বেশ রাত কইরা ঘাটে ভিড়ে! ডাক্তারবাবুকে বললেন নূরু। - ব্রিটিশ আমলের স্টিমার! আর কত টানবো? বরো অইচে না। তুমি কি পারো আগের মতো হাঁটা চলা করতে? যে কোন ব্যাপারেই অনাথরে ডাহ! তমার গদিতেও হেরে লইয়া যাও। - অনাথ কই? - বাজারের বিতরে গ্যাছে! বিমল বোস আদালতে চলে গেলেন। নূরু পাটওয়ারী আস্তে আস্তে ফজলুর রহমানের গদির দিকে রওনা হলেন। বললেন অনাথ যেন বিকেলে আমার সঙ্গে একটু দেখা করে। ভরদুপুরে ডাক্তারখানার সামনে মোড়ায় বসে আছেন ডাক্তারবাবু। একটি এ্যানামেলের বাটিতে তিনি প্লাস্টার গুলছিলেন। মনে মনে ভাবলেন গ্র্রাম থেকে অনাথকে তার কাছে আনা ঠিক হয়নি। সব উল্টাপাল্টা কাজ করে বেড়ায় সে। এ জন্য নীলিমা ডেন্টাল হলের স্বত্বাধিকারী ডাক্তার কালী কৃষ্ণ মজুমদারকে প্রায়ই লোকজনের কথা শুনতে হয়। আড়তদার খোকা একদিন ডাক্তার বাবুকে অনুযোগের সুরে বলছিল অনাথের কা- কারখানার কথা। - জানেন বাবু আমি না থাকলে সেদিন অনাথকে মেরেই ফেলতো! কাঁচা দাঁত ফেলে কী ভয়ানক কারবার! রোগীর আত্মীয় যেনতেন লোক না। বলছে ‘দেইখ্যা নিমু!’ আমনে কিন্তু অরে চাইয়া রাইখেন। পিতার মৃত্যুর সময় অনাথ ১০ বছরের বালক। বাবা কালীকে বলেছিলেন বড় ভাই তুই। ওকে নিজে কাছে রাখিস। বাবার কথা রেখেছে কালী কৃষ্ণ। নিজের বয়স হয়েছে। আছে উচ্চ রক্তচাপ। এ সময় বিশ্বস্ত একজন সহযোগী প্রয়োজন। ভাই বোন ছাড়া কে সহযোগী হতে পারে? ডাক্তারবাবু হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে তার চেয়ারে বসলেন। ঠিক মিনিট তিনেক পরে খোকাবাবুর আড়ত থেকে কুলি ইব্রাহিম ছুটে এলো। হাঁপাচ্ছিলো ইব্রাহিম। তার সঙ্গে কুলি কালু। ডাক্তারবাবুকে কিছু বলতে সাহস পাচ্ছে না সে। - কিরে কি অইছে ক ইব্রাহিম? - অনাথ ডাকতররে পুলিশে ধইরা নিয়া গ্যাছে! আমিও হেরে থানায় নিয়া যাইতে দেখছি! হেয় বলে কোন বেটির কাঁচা দুইডা দাঁত ফালাইয়া দিচে। হেই বেডির ভাই থানায় কাম করে। ইব্রাহিমের কথা শুনে ডাক্তারবাবু চেয়ার থেকে পড়ে গেলেন টেবিলে। বেশ কষ্টে দু’জনে মিলে সুঠামদেহী ডাক্তারকে তুললেন। তারপর টেবিলের পাশে চৌকিতে ডাক্তারবাবুকে ইব্রাহিম আর কালু শুইয়ে দিলো। ডাক্তারবাবুর আশপাশের কাছের মানুষ অনেকেই ছুটে এলো। বন্ধু ফজলুর রহমানও এলেন। পাশে বসলেন তিনি। কালু ডাক্তারবাবুর হাত পা ম্যাসেজ করছে। আর ডাক্তার বাবুর মাথায় জল ঢালছে ইব্রাহিম ।
×