ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গণহত্যা দিবসে শহীদ বেদীতে জাতির শ্রদ্ধা নিবেদন

প্রকাশিত: ১১:০৭, ২৬ মার্চ ২০২০

গণহত্যা দিবসে শহীদ বেদীতে জাতির শ্রদ্ধা নিবেদন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিশ্বের চারিদিকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। বাংলাদেশও এর থেকে মুক্ত নয়। মহামারী আকারে রূপ নেয়া এই ভাইরাস মোকাবেলায় সকল ধরনের সভা-সমাবেশ এবং গণজমায়েতের কর্মসূচী বাতিল করা হয়েছে। মানুষকে ঘর থেকে বের না হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে বারংবার। তাই কৃতজ্ঞ বাঙালী জাতি ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে শহীদ বেদীতে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, প্রতীকী ব্লাক আউট কিংবা আলোর মিছিল বের করতে পারেনি। সশরীরে উপস্থিত না থাকতে পারলেও হৃদয়ের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের এতটুকুও কমতি ছিল না। কেউবা ঘরেই মোমবাতি প্রজ্বালন করে, এক মিনিট নীরবতা পালন, ঘরেই মিলাদ ও দোয়া করে, কেউ নিরাপদে দূরত্বে থেকেই বুধবার শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে গোটা জাতি শ্রদ্ধা আর অবনতমস্তকে স্মরণ করে সেই মানুষদের, যারা একাত্তরের ২৫ মার্চের ভয়াল কালরাতে পাকিস্তানীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হয়েছিলেন। প্রতিবছরের মতো এবার এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে জাতিকে পালন করতে হয়েছে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস। একাত্তরের যে দিনটিতে দেশের স্বাধীনতাকে ঠেকাতে পাকিস্তানের হানাদারবাহিনীরা চালিয়েছে ইতিহাসের এক বর্বরোচিত গণহত্যাযজ্ঞ। হানাদাররা তাদের নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরেই একাত্তরের ২৫ মার্চ কালো রাতে লাখ লাখ স্বাধীনতাকামী মানুষকে নিষ্ঠুর ও পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করেছিল। করোনাভাইরাসের কারণে এবার মশাল প্রজ্বালন, আলোর মিছিল, এক মিনিটের ব্লাক আউট কিংবা বিভীষিকাময় সেই কালরাতের স্মৃতিচারণ ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের সকল কর্মসূচী বাতিল করা হয়। কিন্তু স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ ঢাকাসহ সারাদেশেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে, অনেকে ঘরে বসেই অন্ধকারের শক্তি স্বাধীনতাবিরোধী ও গণহত্যাকারীদের ঘৃণা জানাতে মোমবাতি জ্বালিয়েছেন। সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে যেকোন মূল্যে রূখে দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। শুধু গণহত্যা দিবসেই নয়, করোনার বিস্তৃতি ঠেকাতে আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের সকল কর্মসূচীও স্থগিত করা হয়েছে। সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন, শিশু-কিশোর সমাবেশ, বঙ্গভবনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানসহ সব রাষ্ট্রীয় কর্মসূচী বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু পুরো জাতি তার গভীর হৃদয় থেকেই শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন এবং আজ বৃহস্পতিবার স্বাধীনতা দিবসেও বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন অবনতমস্তকে। গণজমায়েত নিষিদ্ধ থাকলেও অনেকেই একা একা হাতে ফুল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং সেখানে মোমবাতি প্রজ্বালন করতে দেখা গেছে। আনুষ্ঠানিক কোন কর্মসূচী পালিত না হলেও নানাভাবে স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণার জোর দাবি জানিয়েছেন।
×