ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তৈরি পোশাক খাত ॥ ২২৫ কোটি ডলারের অর্ডার বাতিল

প্রকাশিত: ০৯:২২, ২৪ মার্চ ২০২০

তৈরি পোশাক খাত ॥ ২২৫ কোটি ডলারের অর্ডার বাতিল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো একের পর এক লকডাউন ঘোষণা করছে। বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করছে পোশাকের ব্র্যান্ডগুলো। এ পরিস্থিতিতে ভোক্তা চাহিদায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। কিন্তু বাজার চাহিদার এ পরিস্থিতিতে নতুন ক্রয়াদেশ দিচ্ছে না ক্রেতারা। এরই মধ্যে দেয়া ক্রয়াদেশগুলোর পরিমাণ কমাচ্ছে। চলমান ক্রয়াদেশগুলোর উৎপাদন থেকে বিরত থাকতে বলছে ক্রেতারা। আবার কর্মক্ষেত্রে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকিতেও আছেন শ্রমিকরা। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পসংশ্লিষ্ট সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) তথ্যমতে, ৮৪৩ কারখানায় প্রায় ২ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার বা ২২৫ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়েছে। জানা গেছে, করোনার প্রভাবে প্রথমে কাঁচামাল সরবরাহ সংকটে পড়তে হয়েছিল পোশাক খাতকে। চীননির্ভর কাঁচামালগুলো আসতে পারছিল না। কারণ করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ধীরগতিতে হলেও কাঁচামাল সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও এখন চাহিদা সংকটে পড়েছে দেশের পোশাক খাত। পশ্চিমা দেশগুলোর ক্রেতারা একের পর এক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় ভোক্তা চাহিদা কমে বিক্রি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে একের পর এক ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিতাদেশ দিচ্ছে ক্রেতারা। বিরূপ পরিস্থিতিতে ক্রেতাদের ক্রয়াদেশ বাতিলের তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে বিজিএমইএ। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে, বিজিএমইএর সদস্য ৮৪৩ কারখানার ২ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার বা ২২৫ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়েছে। এসব ক্রয়াদেশের আওতায় ছিল ৬৯ কোটি ৭ লাখ পিস পোশাক। এসব প্রতিষ্ঠানের আওতায় আছে ১৪ লক্ষাধিক শ্রমিক। ক্রয়াদেশ বাতিল-স্থগিত করা ক্রেতাদের মধ্যে প্রাইমার্কের মতো বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানও আছে। আয়ারল্যান্ডভিত্তিক প্রাইমার্কের পাশাপাশি ক্রয়াদেশ বাতিল-স্থগিত করেছে ইউরোপের ছোট-মাঝারি-বড় সব ধরনের ক্রেতাই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, করোনার কারণে ক্রেতারা ২.২৫ বিলিয়ন ডলারের অর্ডার বাতিল করেছেন। তিনি জানান, আগামী এপ্রিল, মে ও জুন মাসের অর্ডারও বাতিল করছেন ক্রেতারা। রুবানা হক বলেন, তবে পরিস্থিতি যাই হোক, পোশাক শ্রমিকেরা সময় মতো মজুরি পাবেন। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আমাদের আশ্বস্থ করা হয়েছে, সরকার পোশাক শিল্পের পাশে আছে। তিনি বলেন, শ্রমিকদের মধ্যে সংক্রমণ ঠেকাতে শ্রম অধিদপ্তরের নির্দেশনার আলোকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এজন্য গার্মেন্টস শিল্প অধ্যুষিত এলাকায় করোনা পরিস্থিতি নজরদারি ও প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিজিএমইএ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে আশুলিয়া, গাজীপুর, ডিএমপি এলাকা ও নারায়ণগঞ্জের মতো জায়গাকে ৪টি এলাকাভিত্তিক (জোনওয়াইজ) কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া করোনা বিষয়ে যেকোনো তথ্য জানানো বা জানার জন্য বিজিএমইএ উত্তরা অফিসে একটি হটলাইন চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, আপাতত কারখানা বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে শ্রমিকরা যেন করোনায় আক্রান্ত না হয়, তার জন্য সব ধনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
×