ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোস্তাফা জব্বার

মৃত্যুর চাইতে ভয়ঙ্কর করোনার ক্ষতি

প্রকাশিত: ০৭:১৬, ২৩ মার্চ ২০২০

 মৃত্যুর চাইতে ভয়ঙ্কর করোনার ক্ষতি

বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরতো বটেই বিশ্বের এমন কোন জনপদ এখন খুঁজে পাওয়া যাবে না যাদের কাছে করোনাভাইরাস এখন পরিচিত নয়। কালে কালে বহু রোগ দুনিয়া কাঁপিয়েছে-তবে গত একশ’ বছরে করোনাভাইরাসই সম্ভবত বিশ্বের সর্বাধিক আলোচিত মহামারী। বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ এই মহাবিপদ থেকে দেশবাসীকে রক্ষার জন্য সকল প্রকারের সাবধানতা অবলম্বন করে যাচ্ছে। দিন দিন মানুষের সচেতনতাও বাড়ছে। যদিও আমরা অঞ্চলভিত্তিক কোয়ারাইনটাইন জাতীয় কোন চরম পদক্ষেপ নিইনি তবুও মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান থেকে জনসমাগম বর্জন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা ও অন্যান্য জনসমাগম নিয়ন্ত্রিত করার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের অতি সতর্ক অবস্থানও স্পষ্ট করেছি। আমাদের সৌভাগ্য যে আমাদের দেশে এখনও এই ভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করেনি। তবে ভয়টা দিনে দিনে বাড়ছে। আগামীতে এই ভাইরাস কোন পর্যায়ে আমাদের আক্রমণ করে সেটি বিবেচনার বিষয় হবে। তবে করোনা ভাইরাসে দুনিয়ার অবস্থা ভয়ংকর। চীনে একটি পুরো প্রদেশকে কোয়ারাইন্টাইন করা, ইটালীর মতো পুরো দেশটাকেই কোয়ারান্টাইন করা, ইরানে জুম্মার নামায বন্ধ করা, মক্কাশরীফে তাওয়াফ বন্ধ করা, আমেরিকা-স্পেন-ডেনমার্কের বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া ইত্যাদি অনেক কিছু বিশ্ব ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যতিক্রমী ঘটনা। করোনার জন্যই এবার বিশ্বের অন্যতম সেরা ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রদর্শনী মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস বাতিল হয়। করোনার প্রভাবে আলোচনা সভা, মেলা, সম্মেলন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি বন্ধ হবার হিসাব কষে শেষ করা যাবে না। মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও মহামারী আকারে এর বিস্তারের দিকটি বিবেচনা করলে আতঙ্কিত হতেই হয়। যদিও সারা বিশ্বের হিসাব অনুসারে এই ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের অনুপাতে মৃত্যুর হার মোটেই ভয়ঙ্কর নয় তথাপি ভ্যাকসিন না থাকায় বা যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় ভয়ের পরিমাণটা বেড়েছেই। এরই মাঝে প্রতিদিনই নতুন নতুন পদক্ষেপ দিয়ে সারা দুনিয়াটাকেই যেন একটি কোয়ারান্টাইন শিবির বানিয়ে ফেলা হচ্ছে। আমি নিজে মনে করি আজকের অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হবে না। এই ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত চীন পরিস্থিতি সামাল দিয়ে ফেলেছে। ওরা মানুষের শরীরে প্রতিষেধকও টেস্ট করছে। আমেরিকা করোনা চিকিৎসার ওষুধ সফলভাবে টেস্ট করেছে। স্বাস্থ্যসহ সকল বিষয়েই মানুষের গবেষণা করার সক্ষমতা এখন যা তাতে প্রতিষেধক বা চিকিৎসা দুটোরই সমাধান দুনিয়ার কোন না কোন প্রান্ত থেকে সহসাই আমরা পাব। এরই মাঝে কোরিয়া ও কিউবার ওষুধ দিয়ে করোনার চিকিৎসা করা যায় বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশেও করোনা পরীক্ষা করার কিট তৈরি হয়েছে। এটিও প্রত্যাশিত যে মানুষ এর প্রতিষেধক ও চিকিৎসা দুটোই হয়তো আবিষ্কার করতে সক্ষম হবে। তবে করোনার চিকিৎসা বা প্রতিষেধক যদি আসেও বা এটির হাত থেকে শারীরিকভাবে যদি আমরা বেঁচেও যাই তথাপি করোনার অন্য প্রভাবটা আতঙ্কিত করতে পারে। বস্তুত করোনার জন্য দেশ-প্রদেশ-শহর-মিল কারখানা বন্ধ হতে থাকায় এর অন্য প্রভাবগুলো নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা হচ্ছে। কেউ কেউ মনে করছেন যে, এই ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা যাই হোক এর বহুমুখী প্রভাব দুনিয়াকে এমনভাবে সহ্য করতে হবে যা এর আগে কখনও হয়তো মোকাবেলা করতে হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে যে, করোনার ফলে এবার বিশ্বের জিডিপি অর্ধেকে নেমে যেতে পারে। চীনের পরিস্থিতি আমরা প্রায় সবাই জানি। চীনের জন্য বাংলাদেশের পোশাক শিল্প থেকে শুরু করে উৎপাদন ও আমদানিমুখী বহু কর্মকা- জটিল অবস্থায় পড়েছে। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে করোনার প্রভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে যে ধস নামে তা তূলনাহীন। বিশেষজ্ঞরা এরই মাঝে বলতে শুরু করেছেন যে, করোনার স্বাস্থ্য ঝুঁকির চাইতে অন্য প্রভাব ধারণার বাইরে। ব্রিটিশ পত্রিকা ইনডিপেনডেন্ট ১২ মার্চ ২০ ওমর হাসানের এক লেখায় উল্লেখ করেছে, ‘জনগণের কাছে করোনাভাইরাসের স্বাস্থ্য ঝুঁকির চাইতে এর আর্থিক ঝুঁকি বেশি। এই ভাইরাস সরাসরি যদি আপনার জীবনে আঘাত হানে তবে সেটি হয়তো আপনাকে কর্মচ্যুত করা বা ব্যবসায়ে দেউলিয়া বানানোতে গিয়ে ঠেকবে। কিন্তু বেঁচে থাকার পরও করোনার প্রভাবে আপনার জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠতে পারে। হয়ে যেতে পারেন নিঃস্ব। শেয়ারবাজার থেকে ট্রিলিয়ন ডলার গায়েব হয়ে যাবার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি পরিস্থিতি মোকাবেলায় সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করেন তবে হয়তো তার পুনর্নির্বাচনে জয়ী নাও হতে পারেন। করোনাভাইরাসকে ট্রাম্পের বড় দুর্বলতা বলেও চিহ্নিত করা হচ্ছে। আজ পর্যন্ত করোনাভাইরাস সারা দুনিয়ায় প্রায় ৩ হাজার ৪৯ জন প্রাণহানি ঘটিয়েছে। এর মাঝে ৩১ জন আমেরিকানও আছেন। কিন্তু এই ভাইরাস কোটি কোটি মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে নিঃস্ব করে দেবে, বিশেষ করে এর ফলে যখন শেয়ারবাজারে ধস নেমেছে তার পর থেকে। এরই মাঝে রাশিয়া ও সৌদি আরবের মাঝে তেলযুদ্ধ শুরু হয়েছে ও সিরিয়ায় আরও শরণার্থী সঙ্কট দেখা দিয়েছে।’ ২০ মার্চের তথ্য অনুসারে প্রাণহানির সংখ্যা ১০ হাজার অতিক্রম করেছে। এই প্রথম ইতালীর মৃত্যুর সংখ্যা চীনকে ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, করোনাভাইরাসের জন্য টিকা আবিষ্কারের চাইতেও জরুরী হচ্ছে অর্থনীতির টিকা দেয়া। আমরা জানি যে রোগ হলে চূড়ান্ত পরিণতি হতে পারে মৃত্যু। তবে বেঁচে থেকে যদি খাবার জুটানো না যায়, যদি পাওনা পরিশোধ করা না যায় বা যদি ঋণগ্রস্ত হতে হয় বা সন্তানের শিক্ষার ব্যবস্থা বা অন্য অসুখের চিকিৎসার সংস্থান না করা যায় তবে সেই অবস্থাটি মোটেই সুখদায়ক নয়। এরই মাঝে করোনার চাপ গিয়ে পড়েছে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের ওপর। আমেরিকার শেয়ারবাজারের কথাই ধরুন। করোনার ফলে শেয়ারবাজারে যখন ধস নামল তখন সাধারণ মানুষ শত শত কোটি টাকা মুহূর্তে হারিয়ে ফেলল। আমেরিকার জন্য এটি বড় চ্যালেঞ্জ। মুক্তবাজার অর্থনীতির অন্য দেশগুলোরও একই দশা। শেয়ারবাজার বস্তুত এসব দেশের অর্থনীতির ভিত্তি। এটি রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। করোনার ঘটনার মতো ঘটনায় শেয়ারবাজারে ধস নামে আর সর্বস্বান্ত হয় সাধারণ মানুষ। আমাদের শেয়ারবাজারের পতনের ফলাফলও বস্তুত নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্তকেই সবার আগে আঘাত করে। বিশ্বের মুক্তবাজার অর্থনীতির দেশগুলোকে তাই করোনাভাইরাসকে মোকাবেলা করার চাইতেও জরুরী হয়ে পড়েছে করোনাসৃষ্ট অর্থনৈতিক বিপর্যয় প্রতিরোধ করা। এরই মাঝে শেয়ারবাজারের বাইরে শিল্প ও বাণিজ্য ব্যাপকভাবে সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের মতোই কাঁচামালের সঙ্কটে পড়েছে আরও বেশ কিছু খাত। এই অবস্থাটি কার্যত সারা বিশ্বের। চীননির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থা আবার কবে সচল হবে তার ওপর নির্ভর করবে বিশ্বের ক্ষতিটা কত ব্যাপক হবে। চীনের কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বহু প্রতিষ্ঠানই দেউলিয়া হবার অবস্থায় পড়েছে। অন্যদিকে চীন করোনাভাইরাসের সবচেয়ে চাপে থাকার পরও অন্তত মুক্তবাজার অর্থনীতির দেশগুলোর মতো আকস্মিকভাবে পতনের মুখে পড়েনি। তবে যে ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ এখনও চীন মোকাবেলা করছে, তাদের উৎপাদন ব্যবস্থা বা অর্থনীতি যে সঙ্কটে পড়েছে তা কাটিয়ে উঠতে চীনকেও নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। ইনডিপেনডেন্ট মন্তব্য করেছে ‘বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রকৃত প্রভাব পড়ার আগেই ডাক্তারদের পাশাপাশি অর্থনীতিবিদদের এখন করোনার দায়িত্ব নেয়া উচিত।’ ওমর হাসান তার নিবন্ধে সতর্ক করেন যে বিশ্বের নবম বৃহত্তম অর্থনীতি ইতালীর একটি চরম মন্দায় পড়াটা কেবল সময়ের ব্যাপার। এর ফলে একদিকে ইউরোপ ক্ষতিগ্রস্ত হবে অন্যদিকে ইউরোপের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ী অংশীদার আমেরিকাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এটি খুব সহজেই বলা যায় যে আমেরিকা-ইউরোপের মন্দা সারা বিশ্বকেই আন্দোলিত করবে। দুনিয়াকে এখন ২০০৮ সালের সেই মহামন্দার কথা ভাবতে হচ্ছে। এবার সঙ্কটটা আরও গভীর হবে-কারণ ১২ বছর আগে চীন বিশ্ব অর্থনীতিতে যে ভূমিকা পালন করতো এবার তা বহুগুণ বেড়ে গেছে। সৌদী-রুশ তেল যুদ্ধ, সিরিয়ার শরনার্থী সংকট, চীনের উৎপাদন ব্যবস্থা ইত্যাদি সব কিছুই আগামী দিনের বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি করবে। (https:/www.independent.co.uk/voices/coronavirus-deaths-trump-stock-market-pandemic-economy-bankrupt-italy-a9394891.html?fbclid=IwAR3Jqb3r0-uAiPlaBS4ARGgx-bPn-4RxWyTsUAEqQJeFDVy5rcqsOYxwNF0) আমরা করোনাকেন্দ্রিক বিশ্ব অর্থনীতির অতি ক্ষুদ্র একটি অংশ হলেও এবার আমাদের সচেতনভাবে অবস্থা মোকাবেলা করতে হবে। ২০০৮ এর বিশ্ব মন্দাকে আমরা বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে উন্নয়ন কাকে বলে তা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি। আমি নিজে বিশ্বাস করি এবারও আমরা আমেরিকা বা অন্যান্য মুক্ত বাজার অর্থনীতির দেশগুলোর মতো সঙ্কটাপন্ন হব না। চীন-ইউরোপ-আমেরিকাকে করোনা যেভাবে কাবু করতে পেরেছে এবং তাদের অর্থনীতিতে যতটা সঙ্কট তৈরি করছে তার কোনটাই বাংলাদেশে ঘটবে বলে মনে করার কোন কারণ নেই। কিন্তু বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের নীতি নির্ধারক, অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, উৎপাদক সবাইকেই তাদের স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করতে হবে। বাংলাদেশের জন্য অতি জরুরী বিষয় হয়ে দাঁড়াবে চীন কিভাবে তার পুরো অর্থনীতি ও উৎপাদন ব্যবস্থাকে গুছিয়ে নেয়। চীনের জন্য সুখবর হলো এরই মাঝে তারা করোনাকে প্রায় নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছে। এটি ধারণা করা যেতে পারে যে চীন অতি দ্রুত তার উৎপাদন ব্যবস্থা সচল করবে ও বিশ্ব অর্থনীতির পতনের চাকাটাকে তার মতো করে কিছুটা থামাতে পারবে। আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের শ্রমজীবী মানুষগুলোকে কর্মক্ষম রাখা। অনেক দেশ এখন ভিসা বন্ধ করার পাশাপাশি যাতায়াতও বন্ধ করেছে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছি। তাদের ফিরে যাবার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে ওঠতে পারে। পোশাক শিল্পে অর্ডার বাতিলের অবস্থা এরই মাঝে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। কাঁচামাল ও অর্ডার সঙ্কটে পোশাক শিল্পে বড় ধরনের ধস নামতে পারে। দেশের ব্যবসা বাণিজ্য করোনার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দেশের পর্যটন শিল্প এরই মাঝে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। দিন মজুর-শ্রমজীবী-পরিবহন শ্রমিক ও নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত সবার জন্যই দিনে দিনে সঙ্কটাপন্ন অবস্থা তৈরি হচ্ছে। ঢাকার রাজপথ অনেকটাই ফাঁকা। দেশের অন্যত্রও প্রায় একই অবস্থা। দোকানপাটে বেচাকেনার অবস্থা ভাল নয়। অর্থ বছরের শেষ সময়টাতে কাজকর্মের বা প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি কমে গেল অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে না এটি বলাই যায় না। আমরা প্রত্যাশা করব করোনা আমাদের জন্য হুমকিটা বাড়াবে না- গণসংক্রমণ হবে না বা আমাদের চীন-আমেরিকা-ইউরোপের মতো অচল হয়ে পড়তে হবে না। ঢাকা ২০ মার্চ ২০২০ লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাসের চেয়ারম্যান- সাংবাদিক, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক [email protected], www.bijoyekushe.net.bd, www.bijoydigital.com
×