ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শেবাচিমের চিকিৎসকরা নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত

প্রকাশিত: ০২:০০, ২০ মার্চ ২০২০

শেবাচিমের চিকিৎসকরা নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ করোনাভাইরাস থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য (নিরাপত্তা নিয়ে) চিন্তিত হয়ে পরেছেন দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকেরা। ইতোমধ্যে নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে পরিচালক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন শেবাচিমের চিকিৎসকরা। বিভাগীয় শহর বরিশালে করোনাভাইরাসের পরীক্ষাগার না থাকায় এ আতঙ্ক আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। শুক্রবার সকালে স্মারক লিপি গ্রহণ করার সত্যতা স্বীকার করে শেবাচিমের উপ-পরিচালক ডাঃ মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্মারক লিপিতে চিকিৎসকেরা পাঁচ দফা দাবীর কথা তুলে ধরেছেন। দাবীগুলো হল-প্রত্যেক চিকিৎসকের জন্য পিপিই সরবরাহ করতে হবে, দর্শনার্থী নিয়ন্ত্রন ও চিকিৎসকেদের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতী করা, জরুরী ভিত্তিতে শুন্য পদ পূরনসহ পর্যাপ্ত চিকিৎসক পদায়ন, জরুরী বিভাগে রোগীদের স্ক্রিনিং আউট করে শুধুমাত্র উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন রোগীদের আইসল্যুশনের ব্যবস্থা করা, সবধরনের সাইন্টিফিক সেমিনার, সভা ও সমাবেশ বন্ধ ঘোষণা এবং বায়োমেট্রিক হাজিরা সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখা। আন্তঃবিভাগ চিকিৎসক পর্ষদের সভাপতি ডাঃ সুদীপ কুমার হালদার বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে কলেজের শতাধিক সিনিয়র চিকিৎসকের দিকনির্দেশনায় মিডলেভেলের শতাধিক চিকিৎসক ও দেড় শতাধিক ইন্টার্ন চিকিৎসক প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার রোগীর চিকিৎসা প্রদান করছেন। কিন্তু তাদের জন্য ব্যক্তিগত নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই। এছাড়া বিভাগীয় শহর বরিশালে করোনাভাইরাসের কোন পরীক্ষাগার নেই। তিনি বলেন, হাঁচি-কাশিসহ সবধরনের সংক্রমণ নিয়ে রোগীরা হাসপাতালে ঢুকছেন। তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। নূন্যতম নিরাপত্তাহীন অবস্থায় চিকিৎসকদের ওই রোগীদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। তাই জরুরী বিভাগে রোগীদের স্ক্রিনিং আউট করে শুধুমাত্র উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন রোগীদের আইসল্যুশনের ব্যবস্থা করার নিয়ম চালু করতে হবে। আউটডোর ডক্টরস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ নুরুন্নবী চৌধুরী তুহিন বলেন, নৈতিক কারণে আমারা ডেঙ্গু পরিস্থিতির সময় দায়িত্ব পালন করেছি। তখনো একই অবস্থাছিলো। তখন আমাদের (চিকিৎসকদের) মধ্যে বেশ কয়েকজন অসুস্থ্য হয়েছিলেন। কিন্তু করোনাভাইরাস ডেঙ্গুর চেয়ে ভয়াবহ হওয়া সত্বেও আমাদের নূন্যতম নিরাপত্তা নেই। তাই আমরা আমাদের বিভিন্ন দাবী তুলে ধরেছি। খুব দ্রুততার সাথে এ সব দাবী পূরণ করা না হলে আমরা আমাদের পরবর্তী কর্মসূচী গ্রহন করবো। এদিকে হাসপাতালের সর্বস্তরের চিকিৎসকদের উল্লেখিক দাবীর সাথে একাত্বতা প্রকাশ করেছেন কলেজের অধ্যক্ষসহ সিনিয়র চিকিৎসক এবং হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাঃ মুহাম্মদ আব্দুল রাজ্জাক। তিনি বলেন, চিকিৎসকদের দাবীগুলো খুবই যৌক্তিক। আমাদের হাসপাতালে করোনভাইরাস প্রতিরোধে চিকিৎসকদের জন্য তেমন কোন নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। বিষয়টি নিয়ে আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রনালয়ের যোগযোগ করেছি। উল্লেখ্য, বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের নতুন ভবনে সম্পূর্ন পৃথকভাবে স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশে করোনাভাইরাস ইউনিট চালু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে করোনা সন্দেহে (নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত) এক ব্যক্তি ওই ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। কিন্তু হাসপাতালের অন্যান্য ইউনিটতো দূরের কথা করোনাভাইরাস ইউনিটে রোগী সেবার জন্য চিকিৎসক ও নার্স এবং স্টাফদের নিরাপত্তার পিপিই নেই। ফলে আতঙ্কে রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
×