ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গ্লামার গার্ল ইন্দ্রানী নিশি

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ১৯ মার্চ ২০২০

গ্লামার গার্ল ইন্দ্রানী নিশি

দেশের ৬ বিভাগের ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৯ হাজার নারী শিক্ষার্থীকে নিয়ে হয়ে গেল ‘আরটিভি ডাবর ভাটিকা ক্যাম্পাস স্টার সিজন ২-এর জমকালো আসর। নাচ, গান ও অভিনয় নিয়ে সাজানো হয়েছিল এবারের প্রতিযোগিতাটি। ক্যাম্পাসের স্টার বলে কথা। প্রত্যেকটি ক্যাম্পাসে সব সময়ই থাকে স্টারের ছড়াছড়ি। কেউ বিভাগ পর্যায়ে সব থেকে বেশি নম্বর পেয়ে পাস করেছে কেউবা আবার শ্রেষ্ঠ বিতর্কিত ছিলেন, আবার কেউ ভাল গান করেন কেউবা আবার জাতীয় দলের হয়ে খেলেন। এ রকম নানামুখী প্রতিভা ঘুরে বেড়ান ক্যাম্পাসজুড়ে। সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে এসে নিজেদের তৈরি করেন আগামী দিনের উপযোগী করে। এদের মধ্য থেকে শুধু নাচ, গান ও অভিনয় বিভাগে স্টার খুঁজে বের করলেন আরটিভি ও ডাবর ভাটিকা। প্রাথমিক পর্যায়ে বাছাইয়ের পর ৯০ জনকে নিয়ে মূল পর্ব শুরু হয়ে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে বিজয়ী হয়েছেন একজন। আর সেই নক্ষত্র হলেন ইন্দ্রানী নিশি। তার এই রোমাঞ্চকর পথচলা নিয়ে কথা হয় আনন্দকণ্ঠের সঙ্গে। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন Ñমলয় বিকাশ দেবনাথ আনন্দকণ্ঠ : নিজের সম্বন্ধে সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেন। ইন্দ্রানী নিশি : আমি ইন্দ্রানী নিশি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এ্যান্ড পারফর্মেন্স স্টাডিজ বিভাগের স্নাতক সম্মান চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। আমার জন্ম চিত্রা নদীর পাড়ের ছোট্ট শহর নড়াইলে। সংস্কৃতমনা পরিবারে বেড়ে ওঠায় ছোটবেলা থেকেই গান, চিত্রাঙ্কন আর আবৃত্তি নিয়েই বেড়ে ওঠা। প্রথম শ্রেণীতে পড়ার সময় রংপুর টাউন হলের মঞ্চে প্রথম অভিনয় করি। এর জন্যে মা ও বাবার অবদান সবচেয়ে বেশি। তারা পড়াশোনার পাশাপাশি সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায় বিচরণকে অনেক উৎসাহ দিতেন। আনন্দকণ্ঠ : অভিনয় শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন জাগে কীভাবে? ইন্দ্রানী নিশি : ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি প্রবল আগ্রহ জন্মায়। তাই স্নাতক শ্রেণীতে আমি থিয়েটার নিয়ে পড়তে এই বিভাগে পরীক্ষা দিই এবং সুযোগ পাই। পড়াশোনার বিষয় থিয়েটার হওয়ার সুবাদে গান, নাচ, আবৃত্তি আর অভিনয় নিয়ে পুরোদমে চর্চা আরম্ভ হয়। এখানে এসে অভিনয়ের খুঁটিনাটি আরও ভালভাবে শিখতে থাকি। বিভাগের সকল শিক্ষকের আন্তরিক প্রচেষ্টা, তাদের দক্ষতা ও জ্ঞান যেভাবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিলিয়ে দেন শুধু সঠিকভাবে নিতে পারলেই যথেষ্ট। প্রয়োজন শুধু পরিশ্রম, একাগ্রতা আর আত্মবিশ্বাস। স্বপ্ন দেখতে থাকি নিজেকে পুরোদস্তুর একজন শিল্পী হিসেবে গড়ে তুলতে। আনন্দকণ্ঠ : আপনি কীভাবে এ প্রতিযোগিতায় যুক্ত হলেন? ইন্দ্রানী নিশি : ফেসবুকসহ নানা প্রচারমাধ্যমে ‘ আরটিভি ডাবর ভাটিকা ক্যম্পাস স্টার সিজন ২-এর কথা জানতে পারি। এখানে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হিসেবে নাচ, গান ও অভিনয় নির্ধারিত ছিল। তাই নিজের আগ্রহ, পরিবার ও বন্ধুদের উৎসাহে আমি অংশগ্রহণ করি। বাংলাদেশের ৬ বিভাগের ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৯ হাজার নারী শিক্ষার্থী অনলাইন, এসএমএস ও স্পট রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে এতে অংশ নেয়। আনন্দকণ্ঠ : প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হওয়ার পর বিজয়ী হওয়া পর্যন্ত গল্পটি বলুন? ইন্দ্রানী নিশি : প্রাথমিক বাছাইয়ের পরে আমরা ৯০ জন প্রতিযোগিতার মূল পর্বের জন্য নির্বাচিত হয়ে আমরা দারুণ এক জার্নি শুরু করি। তারপর নাচ, গান, অভিনয় এবং নতুন করে শেখা র‌্যাম্প মডেলিংয়ের ভিত্তিতে বিভিন্ন পর্বে প্রতিযোগিতা দ্বারা চূড়ান্ত পর্বের জন্য নির্বাচিত হই। সে এক চমৎকার অভিজ্ঞতা। এখানে প্রতিপর্বে আমাদের নিয়মিত বিচারক নাদিয়া ম্যাম, সজল স্যার এবং কণা ম্যামের পাশাপাশি ছিলেন অনেক গুণী অতিথি বিচারকম-লী। তারা সব সময় আমাদের যোগ্যতা ও গুণগুলো শাণিত করতে সাহায্য করেছেন। র‌্যাম্প মডেলিংয়ের খুঁটিনাটি শিখেছি বুলবুল টুম্পা ম্যামের কাছে। এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে আমি খুবই আনন্দিত পাশাপাশি এও বলছি, এর মধ্য দিয়ে আমরা অনেক শিখেছি। একটি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হবে একজন এটাই স্বাভাবিক। তবে প্রত্যেকেই অনেক কিছু পেয়েছি যা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য পাথেয় হয়ে থাকবে। আনন্দকণ্ঠ : বিজয়ী হয়ে আপনার কেমন লাগছে? ইন্দ্রানী নিশি : চূড়ান্ত পর্বে বিজয়িনীর মুকুট পরার অনুভূতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতোন নয়। সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই আর আমার পিতা-মাতার প্রতিও। তাদের কারণেই আমি আজ এখানে আসতে পেরেছি। ধন্যবাদ জানাই আরটিভিকে এত সুন্দর আয়োজনের মাধ্যমে একটি অনুষ্ঠান উপহার দেয়ার জন্য। বিশেষ ধন্যবাদ জানাই আমার বিভাগীয় শিক্ষক ইস্রাফিল শাহিন স্যারকে এবং সঙ্গে প্রতিযোগিতার প্রযোজক শিবলী জিয়া ভাইকে। আনন্দকণ্ঠ : এখন আপনি পড়াশোনার পাশাপাশি কী করছেন? ইন্দ্রানী নিশি : বর্তমানে আমি আরটিভিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করেছি, যেমন- ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল এক্সট্রা’, ‘প্রবাস বিনোদন’, ‘প্রবাসের গল্প’ এবং ‘আরটিভি তারকালাপ’। এ ছাড়া আরটিভিতে প্রতি রবি ও সোমবার প্রচারিত ‘সময়ের গল্প’ ধারাবাহিকের বিশেষ একটি পর্ব ‘সেলফোন’ নাটকে অভিনয় করেছি যেখানে আমি অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন ভাইয়ের বিপরীতে অভিনয় করেছি। ইচ্ছে আছে সামনে এ রকম আরও ভাল ভাল কাজ করার আর সেই প্রয়াসেই নিজেকে গড়ে তুলছি। আনন্দকণ্ঠ : তরুণ প্রজন্ম নিয়ে কিছু বলুন? ইন্দ্রানী নিশি : তরুণরাই সমাজ পরিবর্তনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। স্বাধীনতার মাস এই মার্চ মাস। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে যে দিকনির্দেশনা ছিল তারই ফলাফল স্বাধীন বাংলাদেশ। আমরা যারা তরুণ তাদের উদ্দেশে বলি, বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে। তাঁর সংগ্রামী চেতনাকে আমাদের অন্তরে লালন করতে হবে। পড়াশোনার পাশাপাশি সংস্কৃতিচর্চা চালিয়ে যেতে হবে। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে হবে। মুক্তবুদ্ধির চর্চা না করলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়া যাবে না। এখন সময় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের। জ্ঞানভিত্তিক শিল্পচর্চায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে এ প্রজন্ম একটি নতুন দিগন্ত তৈরি করতে যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মের হাত দিয়েই আমাদের সংস্কৃতি চর্চায় ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। আমিসহ সকল তরুণদের বলি, আসুন পুরাতনের সঙ্গে নতুনের মিথস্ক্রিয়ায় সুখী, সমৃদ্ধ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে চলি।
×