ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সিনেমা হল বন্ধ শূটিংও...

প্রকাশিত: ১১:৫১, ১৯ মার্চ ২০২০

সিনেমা হল বন্ধ শূটিংও...

দিন দিন জীবনঘাতী ভাইরাস করোনার প্রভাব ব্যাপক থেকে ব্যাপকতর হচ্ছে। এরইমধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে স্থল-জল এবং আকাশ পথের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কোন কোন দেশ তো একেবারেই বিচ্ছিন্ন! সামাজিক রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সঙ্কটের পাশাপাশি মানুষের চিত্তকর্ষের মাধ্যমেও এই ভাইরাস ভয়াল থাবা বসিয়েছে। বিশ্বব্যাপী ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেয়ে প্রতিক্ষীত বহুল আলোচিত সিনেমার প্রদর্শনী। কোন কোন দেশ বন্ধ করে দিয়েছে তাদের বিনোদন কেন্দ্রগুলো। সারা বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভার দেরিতে হলেও ইতোমধ্যে বন্ধ করা হয় রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচী। গত ১৭ মার্চ ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে আগে থেকে নির্ধারিত বেশিরভাগ কর্মসূচী স্থগিত করা হয়। স্কুল-কলেজ আগামী ৩১ মার্চ বন্ধ রাখার ঘোষণা এসেছে। গতকাল ১৮ মার্চ থেকে দেশের সকল সিনেমা হল বন্ধের ঘোষণা এসেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির পক্ষ থেকে। বছর বছর যখন সিনেমার সংখ্যা কমে যাচ্ছে এবং নতুন বছরে এ পর্যন্ত মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম। তখন এ সপ্তাহে মুক্তি পাবার কথা ছিল আলোচিত সিনেমা শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ-২, গেল সপ্তাহে ছিল ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ মাসের শেষে কথা ছিল ‘বিশ্বসুন্দরী’ মুক্তির। কিন্তু, ভয়াল করোনাভাইরাসের প্রভাবে এসব সিনেমা যথা সময়ে মুক্তি অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পরেছে, সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আনন্দকণ্ঠের সঙ্গে কথা হয় চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি কাজী শোয়েব রশিদের সঙ্গে। তার কছে জানতে চাওয়া হয় সার্বিক পরিস্থিতি কিভাবে তারা দেখছেন? জবাবে শোয়েব রশিদ বলেন, যেখানে সরকার জনস্বার্থে সবধরনের সভা-সমাবেশ স্থগিত করেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সব স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে সেখানে সিনেমা হলের অভ্যন্তরে একে অপরের গায়ে গা ঘেষে সিনেমা দেখার পরিবেশ কিভাবে আমরা অব্যাহত রাখি। অবস্থার অবনতি হলে দায়িত্ব কে নেবে! যে কারণে আমরা সবার সঙ্গে বসে আগামী ২ এপ্রিল পর্যন্ত হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এমনিতে আমাদের এই শিল্পের বর্তমান যে পরিস্থিতি তাতে করে আরও নেতিবাচক অবস্থা সৃষ্টি করবে না? শোয়েব রশিদ; আমি মনে করি না। অবস্থার দ্রুত উত্তরণ ঘটবে। এছাড়া সরকারের সঙ্গে আমাদের বিস্তারিত কথা হয়েছে, এই শিল্প নিয়ে। অনেক ইতিবাচক আশ্বাস সরকার আমাদের দিয়েছে। কেমন সে ইতিবাচক আশ্বাস তার দু-একটি আমাদের বলুন? শোয়েব রশিদ; আপনারা তো আগে থেকেই জানেন, সরকার চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করেছে। সেটি বাস্তবায়নে যা যা করা দরকার তা তারা করবেন। অন্যদিকে এতদিন ব্যক্তিগত পর্যায় সিনোমা হলের বিদ্যুত বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে এটা যাতে ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে পড়ে সে ব্যবস্থা তারা করবেন। এছাড়া এই শিল্পখ্যাতে ঋণ দেয়ার একটা কথা চলছে। তবে, আমরা ঋণের ব্যাপরে আগ্রহী নই। কারণ ঋণ শোধ করে খুব একটা ইতিবাচক ফল পাওয়া যায় না। বরং আমরা চাচ্ছি সিনেমা হলেও উন্নয়ন- যেমন, আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন। অবস্থার উন্নতি না ঘটলে এই সময় তো বাড়বে? হ্যাঁ। তবে, আশ করি অবস্থার দ্রুত উন্নতি ঘটবে। এদিকে সমনে পহেলা বৈশাখ এরপর আবার ঈদ-উল-ফিতর সিনেমার পাশাপাশি ছোট পর্দার অনুষ্ঠান প্রস্তুতিতেও করোনার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। অনেক শিল্পী শূটিংস্পটে যেতে ভয় পাচ্ছেন। তবে নাটকের শূটিং বন্ধের আনুষ্ঠানিক কোন ঘোষণা এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আসেনি। তবে যতদূর ধারণা করছি সবধরনের শূটিং কিছুদিনের জন্য স্থগিত করা হবে। অন্যদিকে পাশের দেশে একাধিক ইন্ডাস্ট্রিতে করোনাভাইরাসের প্রভাবে শূটিং বন্ধ রাখা হয়েছে। এরমধ্যে যেসব সিনেমা বিশ্বব্যাপী মুক্তি পাচ্ছে সেগুলো আশনুরূপ সাফল্য অর্জন করতে পারছে না। যেমনÑ গেল সপ্তাহে বলিউডে মুক্তি পায় আলোচিত সিনেমা ‘এ্যাংরেজি মিডিয়াম’ দীর্ঘ অসুস্থতার পর ইরফান খানে এই সিনেমা নিয়ে অনেকেই ভীষণ আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু, করোনার প্রভাবে খুব একটা সফলতা না পেলেও সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে এই সিনেমা। এই যখন বিশ্বজুড়ে সার্বিক অবস্থা তখন ক্ষুদ্র ভাইরাস আমাদের কোথায় নিয়ে দাঁড় করাবে তা নিশ্চিত করে আপতত বলা মুশকিল। আনন্দকণ্ঠ প্রতিবেদক
×