ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পানি-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে আন্দোলন : ফখরুল

প্রকাশিত: ০৭:৩৭, ৩ মার্চ ২০২০

পানি-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে আন্দোলন : ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পানি-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে আন্দোলন হবে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণের যে উত্তাল তরঙ্গের সৃষ্টি হবে সেখানে আপনারা ভেসে যাবেন। মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পানি-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে ৮ বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। পাওয়ার প্লান্টের নামে যে লুটপাট করেছে, তার ভর্তুকি দেয়ার জন্যই এই দাম বৃদ্ধি। মানুষের পকেট কেটে বছরে ৫১ হাজার কোটি টাকা ভর্তকিকি দিতে হচ্ছে। এ ছাড়া এ সরকারের আমলে পানির দাম ১০ বার বাড়লেও সে পানি মুখে দেয়া যায় না, খাওয়া যায় না। তিনি বলেন, আজকে এ সরকার সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশের অর্থনীতি, ব্যাংকিং সেক্টর, শিক্ষাব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য খাত ধ্বংস করেছে। আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি বলতেও কিছু নেই। তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের, আজকে দেশে বিচার বিভাগ, উচ্চ আদালত সঠিক বিচার করতে পারে না। সরকারকে উদ্দেশ করে ফখরুল বলেন, এই মুহুর্তে পানির দাম যেটা বাড়িয়েছেন সেটা প্রত্যাহার করুন, বিদ্যুতের দাম যেটা বাড়িয়েছেন সেটা প্রত্যাহার করুন, গ্যাসে দাম যেটা বাড়িয়েছেন সেটাও প্রত্যাহার করুন। অন্যথায় জনগনের উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে, কাঁপড়ের দাম বাড়ছে, বাড়ি ভাড়া বাড়ছে তখন আবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে, পানির দাম বাড়িয়ে নি¤œবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষকে চরম অসহায়াত্বের মধ্যে ফেলে দিয়েছে সরকার। ফখরুল বলেন, কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঠিক স্বাস্থ্য রিপোর্ট না দেয়ার জন্য সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের চিকিৎসকদের বাধ্য করেছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। ২৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার যে রক্ত পরীক্ষা হয়েছে সেখানে তাঁর ফাস্টিং সুগার ১৪ দশমিক ৫, যা চিন্তা করা যায় না। ১৪ দশমিক ৫ যদি তার সুগার হয় তাহলে সেটা তার হার্টে, কিডনিতে বা ফুসফুসে এফেক্ট করতে পারে। এতকিছুর পরেও দুর্ভাগ্য আমাদের, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকরা সরকারের চাপে সত্য রিপোর্ট দিতে পারলেন না। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে ২ বছর হয়ে গেল সরকার রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। অনেকে বলে, সরকার ইচ্ছা করে এটাকে জিইয়ে রেখেছে। কারণ, এতে তাদের লাভ হয়, পশ্চিমা বিশ্ব থেকে সমর্থন পাওয়া যায়। আর বিদেশ থেকে যে সাহায্য-সহযোগিতা আসে তার থেকে ভাগ-বাটোয়ারা করা যায়। ফখরুল বলেন, বলেন, এ সরকারের জনগনের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই। কারণ, তারা জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়নি, তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় এসছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলছেন, বিদ্যুতের দাম অতি সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি দেশের জনগনকে উদ্দেশ করে বলেছেন তারা যেন এটা নেন। কিন্তু ১২ বছর ধরে জনগনের ওপর যে অত্যাচার-নিপীড়ন-নির্যাতন-হত্যার যে স্টিমরোলার চলছে তাতে জনগন এটা কখনও মেনে নেবে না। এ সরকারকে একদিন জনগনের কাছে জবাবদিহি করতে হবে, কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। ফখরুল বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছেন, ভারতের আমাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক’। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কই যদি হবে তাহলে এনআরসি তৈরি করে বাংলাদেশী বংশোদ্ভুতদের ভারত জোর করে ফেরত পাঠিয়ে দিতে চাচ্ছে কেন? তিনি বলেন, এ সরকার পুতুল সরকার, তাদের দিয়ে জনগনের আশা-আকাংঙ্খা পূরণ হবে না। তাই আমাদের স্বাধীনতার মাসে আমরা বলতে চাই, এই স্বাধীনতাকে তারা(সরকার) রক্ষা করতে পারবে না, এই স্বাধীনতাকে তারা বিক্রি করে দিচ্ছে। আমরা একাত্তর সালে যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি। আমাদের অবশ্যই রুখে দাঁড়াতে হবে, আমাদেরকে জেগে উঠতে হবে। আমরা জনগনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবো এই হোক আমাদের শপথ। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা, এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, দলের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভুইয়া জুয়েল, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।
×