ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মামলায় দোষী সাব্যাস্ত, তারপরও স্বপদে বহাল শূটিং কোচ ফয়েজ!

প্রকাশিত: ০৮:২৮, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

মামলায় দোষী সাব্যাস্ত, তারপরও স্বপদে বহাল শূটিং কোচ ফয়েজ!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিয়ম হচ্ছে কোন ব্যক্তি কোন মামলায় যদি দোষী প্রমাণিত হন, তাহলে তিনি তার বর্তমান কর্ম প্রতিষ্ঠানে স্বপদে আর বহাল থাকতে পারবেন না। অথচ বাংলাদেশ শূটিং স্পোর্ট ফেডারেশন এই নিয়ম মানছে না! বিস্ময়কর হলেও ঘটনা সত্যি। আর যার প্রসঙ্গে এই ভূমিকার অবতারণা, তিনি হচ্ছেন শূটিং কোচ আসবাব আলী ফয়েজ। কিছুদিন আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ফয়েজ। যার ফলে নেপালে অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের আগে কন্টিনজেন্ট থেকে বাদ দেয়া হয় তাকে। এমনকি ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়ে বিকেএসপিতে চাকরি করলেও স¤প্রতি তাকে অব্যাহতিও দেয়া হয়। সেই আসবাব আলী ফয়েজ কোন এক অদৃশ্য ক্ষমতাবলে এখনও বহাল তবিয়তেই রয়েছেন বাংলাদেশ শূটিং স্পোর্ট ফেডারেশনে! সদ্যসমাপ্ত এসএ গেমসে বাংলাদেশ শূটিং দলের কোচ ছিলেন এই ফয়েজ। বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) ফয়েজের অনুকূলে সরকারী আদেশপত্রও (জিও) এনেছিল। কিন্তু দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ফয়েজের নাম শেষ মুহূর্তে বাদ দেয়া হয়। এজন্য এসএ গেমসে আর কোচ হিসেবে দলের সঙ্গে যেতে পারেননি ফয়েজ। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং সরকার যখন এই সিদ্ধান্ত নেয়, ঠিক তখন উল্টো পথেই হাঁটছে শূটিং ফেডারেশন। কেননা এখনও ফয়েজকে তারা স্বপদেই বহাল রেখেছে। এছাড়া ফেডারেশনের কাউন্সিলর হিসেবেও এখন আছেন তিনি! ফয়েজ বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরও (বিকেএসপি) কোচ ছিলেন। ক্রীড়াবিদদের একমাত্র ক্রীড়া বিজ্ঞানের জায়গা বিকেএসপি। সেখান থেকেই তাদের বেসিক সুদৃঢ় হয় তাদের। জানা গেছে, সেই প্রতিষ্ঠানে ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে কোচের চাকরি নেন ফয়েজ। বিকেএসপিতে ভুয়া সার্টিফিকেট দেয়ার বিষয়টি উঠে আসে সম্প্রতি। তদন্ত করে এর সত্যতাও পাওয়া যায়। ফলে আর কালবিলম্ব না করে বিকেএসপি থেকে তাকে অব্যাহতিও দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। অথচ আশ্চর্য-বিকেএসপি এবং সরকার কঠোর অবস্থানে গেলেও শূটিং ফেডারেশন ঠিক এর বিপরীত অবস্থানে! কাউন্সিলর অপসারণের এখতিয়ার নির্বাহী সভার না থাকলেও সভাপতির রুলিং বা বিশেষ পরিস্থিতিতে সাধারণ সদস্যদের অনুমতি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার রয়েছে। শূটিং সংশি¬ষ্ট সাবেক অনেক কর্মকর্তা ও শূটাররা বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। একজন কোচ খেলোয়াড় গড়েন। অনৈতিকভাবে কোচ হলে তিনি খেলোয়াড়দের কি শিক্ষা দিয়েছেন? আর খেলোয়াড়রাই তার কাছ থেকে কিভাবে শিক্ষা গ্রহণ করবে? শূটিং অঙ্গনে আমরা এ রকম দুর্ণীতিপরায়ণ অসৎ ব্যক্তিকে আর চাই না। শূটিং ফেডারেশন কেন দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে না, এজন্য আমরা বিস্মিত। ফেডারেশনের উচিত এমন অভিযুক্তকে অপসারণ করে শূটিং অঙ্গণে দ্রুত খেলার পরিবেশ ফিরিয়ে আনুক। এই ব্যাপারে ফেডারেশনের সভাপতি নাজিমউদ্দিন চৌধুরী বলেন, শূটিং ফেডারেশনের কোচ নন ফয়েজ। শূটিংয়ে আমাদের কোচ হলেন রিংকি। আমরা শুনেছি জাল সনদপত্র দিয়ে তিনি নাকি বিকেএসপির চাকরি নিয়েছিলেন। এরপর দুদক থেকে মামলা হয়েছে। ফয়েজ আমাদের শূটিংয়ের একজন কাউন্সিলর। এর বাইরে আর কিছুই নন।
×