ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নাটোরের গুরুদাসপুরে ইটভাঁটির শ্রমিককে শিকলে বেঁধে নির্যাতন

প্রকাশিত: ০৬:১০, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

নাটোরের গুরুদাসপুরে ইটভাঁটির শ্রমিককে শিকলে বেঁধে নির্যাতন

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর ॥ অভাবে পড়ে গত বর্ষা মৌসুমে দাদনের ১৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন ইটভাঁটার শ্রমিক রাম বসাক (৩৫)। ৪ মাস ইট ভাঁটিতে শ্রম বিক্রি করে সেই টাকা পরিশোধও করেন তিনি। কিন্তু শ্রমিক সর্দার সিরাজুল ইসলাম ইটভাঁটির মালিকের কাছ থেকে নেওয়া দাদনের টাকা পরিশোধ না করায় তিনদিন ধরে শিকলে বেধে নির্যার্তন করা হয় শ্রমিক রাম বসাককে। পরে অভিযোগ পেয়ে ইটভাঁটির ম্যানেজার স্বপন ও কর্মচারী আবু সামাকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের গুরুদাসপুরের শাহাপুরের মেসার্স এএসবি বিক্সস নামের একটি ইটভাঁটিতে। নির্যাতনের শিকার রাম বসাক পাশর্^বতী সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ছুটু বসাকের ছেলে। গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাহারুল ইসলাম ও ভুক্তভোগীর বাবা জানান, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের শ্রমিক সর্দার সিরাজুল ইসলাম গুরুদাসপুরের শাহাপুরের মেসার্স এএসবি বিক্সস নামের ইটভাঁটির মালিক আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুর রহিম মোল্লার কাছ থেকে দাদনের ১৫ লক্ষ টাকা গ্রহন করেন। গত বর্ষা মৌসুমে সেখান থেকে দাদনের ১৫ হাজার টাকা গ্রহন করেন রাম বসাক। গত ৪ মাস শ্রম বিক্রি করে দাদনের সেই টাকা পরিশোধও করেন রাম। অন্যদিকে শ্রমিক সর্দার সিরাজুল ইসলাম ১৫ লক্ষ টাকার মধ্যে শ্রম বিক্রির মাধ্যমে ৯ লক্ষ টাকা পরিশোধ করে পালিয়ে যায়। এদিকে সিরাজুলকে না পেয়ে মালিক আব্দুর রহিম মোল্লার ছেলে আলমগীর মোল্লা ও তার ভাতিজা ছাবলু ওই ইটভাঁটির একটি কক্ষে রাম বসাককে গত ৩দিন ধরে শিকলে বেঁধে আটকে রেখে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ করা হয়। অন্যদিকে বাকী টাকা আদায়ে সিরাজুলকে আটক করতেই রামকে আটকে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেন ইটভাঁটির মালিক রহিম মোল্লা। পরে আজ শনিবার সকাল ১০ টার দিকে ভুক্তভোগীর বাবা ছুটু বসাক গুরুদাসপুর থানায় অভিযোগ করলে দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রামকে উদ্ধার করে এবং ইটভাটার ম্যানেজার স্বপন ও কর্মচারী আবু সামাকে আটক করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগীর বাবা ছুটু বসাক জানান, সেই টাকা পরিশোধ হলেও ছেলেকে তিন দিন ধরে শিকলে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়েছে। ভাঁটির কাজ করার জন্য শ্রমিক সর্দার সিরাজুল ইসলাম অগ্রিম ১৫ লাখ টাকা নিয়ে ছিলেন। এরমধ্য শ্রমিকের কাজ করার মাধ্যমে ৯ লাখ টাকা পরিশোধ করে পালিয়েছেন। তবে যাকে শেকলে বেঁধে রাখা হয়েছে তিনি শ্রমিক হলেও সর্দারকে ধরতেই তাকে আটকে রাখা হয়েছে। গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাহারুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে রাম বসাক উদ্ধার করা হয়েছে। এঘটনায় ভাটার ম্যানেজা ও এক কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে।
×