ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নীলফামারীর পরচুলা কারখানায় নারী শ্রমিকদের গণহিস্টিরিয়া

প্রকাশিত: ০৪:১১, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

নীলফামারীর পরচুলা কারখানায় নারী শ্রমিকদের গণহিস্টিরিয়া

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ নীলফামারীর একটি কারখানায় প্রায় অর্ধশতাধিক নারী শ্রমিক খিঁচুনিতে আক্রান্ত হওয়ার পর কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা সদরের টুপিরমোড় এলাকায় চীনা কোম্পানী এভারগ্রিন বিডি লিমিটেডের পরচুলা তৈরীর কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকদের মধ্যে এ রোগ দেখা দেয়। চিকিৎসকদের ধারণা তারা গণ হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। নারী শ্রমিকরা জানায় পরচুলা কোম্পানীটিতে প্রায় ২ হাজার নারী ও ৩শত পুরুষ শ্রমিক কর্মরত। সকালের দিকে নিজ তলার নারী শ্রমিকরা খিঁচুনি রোগে আক্রান্ত হতে থাকে। শুধু পরচুলা ফ্যাক্টরীর নিচ তলার শ্রমিকরা আক্রান্ত হয়। এক শ্রমিক খিঁচুনি দিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১০ মিনিটের মধ্যে আরো ১৫-২০ জন একই উপসর্গে আক্রান্ত হয়। পরে নিচ তলার সকল শ্রমিকদের মধ্যেও একই উপসর্গ দেখা দেয়। শ্রমিকদের অভিযোগ পরচুলার কাজ করার সময় হঠাৎ করে কিছু চুলের মধ্যে এক ধরনের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ওই গন্ধের গ্যাসে তারা মাথা ঘুরে মেঝেতে পড়ে যায়। শ্রমিকদের অভিযোগ তারা অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাদের ফ্যাক্টরীর বাহিরে বের হতে দেয়া হচ্ছিলনা। ভেতর থেকে খবর কি বাহিরে ছড়িয়ে পড়লে এলাকার মানুষজন ফ্যাক্টরীটি ঘেরাও করে ইটপাটকে ছুঁড়তে থাকে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে শ্রমিকদের হাসপাতালে প্রেরনের ব্যবস্থা করে। নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসার্টটেন ডাঃ আশিকুর রহমান জানান, আজ শনিবার সকাল ১১টা হতে এভারগ্রিন বিডি লিমিটেডের পরচুলা তৈরীর কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসতে থাকে। কেউ কেউ অজ্ঞান অবস্থায় এসে ভর্তি হলেও তাদের জ্ঞান ফিরেছে। তিনি বলেন, দুপুর ১টা পর্যন্ত ২৯ জন নারী শ্রমিক ভর্তি হয় হাসপাতালে। তাদের সকলকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। আমাদের ধারণা তারা গণ হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। সিভিল সার্জন রনজিত কুমার জানান, অনেক শ্রমিক বাড়ি চলে গেলেও দুপুরের পর দেখা যায় আতংঙ্কে অনেক নারী শ্রমিক বাড়ি থেকে এসে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এটি প্যানিক সৃস্টি করেছে। এভারগ্রিন বিডি লিমিটেডের পরচুলা তৈরীর কারখানায় ডিজিএম কাজি ফেরদৌসুল আলম বলেন, “অসুস্থ শ্রমিকদের উপসর্গ একই রকম। এক সঙ্গে এতো শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমরা নিজেরাও হতচকিত হয়ে পড়ি।” এমন প্যানিক কেন সৃস্টি হলো বুঝতে পারছিনা আমরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে অসুস্থ নারী শ্রমিকদের চিকিৎসার সকল ব্যয়ভার কোম্পানী করবে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রুহুল আমিন জানান, শ্রমিকরা স্বাভাবিক রয়েছে। কিছু বহিৃরাগতরা পরিস্থিতি উত্তেজিত করার অচেষ্টা করেছিল। আমরা তাৎক্ষনিকভাবে তা নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হই।
×