ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

*দিল্লিতে সহিংসতা

গৃহহীন মুসলিমদের আশ্রয় দিল হিন্দুরা

প্রকাশিত: ০১:৪৮, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

গৃহহীন মুসলিমদের আশ্রয় দিল হিন্দুরা

অনলাইন ডেস্ক ॥ ভারতের উত্তর-পূর্ব দিল্লির অশোকনগরে মসজিদে হামলা-অগ্নিসংযোগ করেছে বাহিরাগতরা। তারা বেছে বেছে শুধু এলাকার মুসলিমদের বাড়ি ও দোকানপাটে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয় হিন্দুরা জানিয়েছেন, তারা বহিরাগতদের কাউকে চেনেন না এবং এমন পরিস্থিতিতে গৃহহীন মুসলিমদের পাশে থাকবেন সবাই। গত মঙ্গলবার অশোকনগরের মুসলিম পরিবারগুলোর ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এর আগে অন্তত এক হাজার জনের একটি গ্রুপ এলাকায় ঢুকে একটি মসজিদে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় মসজিদটিতে অন্তত ২০ জন নামাজ পড়ছিলেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী খুরশির আলম বলেন, ‘আমি মসজিদে ছিলাম। হঠাৎ একটি বড় গ্রুপ সেখানে ঢুকে স্লোগান দিতে শুরু করে। আমরা প্রাণ বাঁচাতে দৌঁড়ে পালাই।’ এই গ্রুপটিই পরে মসজিদে আগুন ধরিয়ে দেয়। মোহাম্মাদ তায়েব নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘তারা দুপুর দেড়টার দিকে মসজিদের ছাদে উঠে তিরঙ্গা (ভারতের জাতীয় পতাকা) উত্তোলন করে ও একটি গেরুয়া পতাকা টানিয়ে দেয়।’ বুধবার সকালে ওই পতাকা সরিয়ে দেন স্থানীয়রা। স্থানীয়রা জানান, তারা দাঙ্গাকারীদের বারবার ক্ষয়ক্ষতি না করতে অনুরোধ জানান। কিন্তু তারা কারও কথা শোনেনি। এদের সবাই বহিরাগত ছিল। অশোকনগরের বাসিন্দা রাজেশ খাত্রী বলেন, ‘গ্রুপটির বেশিরভাগেরই মুখ ঢাকা এবং হাতে লোহার রড ছিল। অল্প সময়ের মধ্যেই তারা দোকানপাটে আগুন দিতে শুরু করে। ভয় ছিল, আমাদেরও হত্যা করা হতে পারে। দোকানপাটে অগ্নিসংযোগের পর দুর্বৃত্তরা মুসলিমদের বাড়ির দিকে যায়। ভুক্তভোগী মোহাম্মদ রশিদ বলেন, ‘এ এলাকায় মাত্র ছয়টি মুসলিম পরিবার বসবাস করে, ওই লোকগুলো সেটা জানত। কারণ তারা আর কোনও বাড়িতে হামলা করেনি। তারা একটা জিনিসও ছাড়েনি, সব লুট করে নিয়ে গেছে। এখন আমরা সবাই গৃহহীন।’ ‘যখন ভাবছিলাম আমাদের রাস্তায় থাকতে হবে, সেসময় সাহায্য করতে আসে এলাকার হিন্দু বন্ধুরা। তারা আমাদের তাদের বাড়িতে উঠতে দিয়েছে। আমরা এ এলাকায় ২৫ বছর ধরে আছি, একবারের জন্যেও তাদের সঙ্গে বাদানুবাদ হয়নি।’ নীরাজ কুমার নামে এলাকার আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘দাঙ্গাকারীদের একজনকেও আমরা চিনি না। তারা দুইবার হামলা করেছে। একবার দুপুর ১টার দিকে, আরেকবার বিকেল ৪টার দিকে। বছরের পর বছর ধরে আমরা এখানে শান্তিপূর্ণভাবে আছি, কেউ কখনও কাউকে আঘাত করিনি।’
×