ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আজ জামিন শুনানি

খালেদার মেডিক্যাল রিপোর্ট সুপ্রীম কোর্টে

প্রকাশিত: ১১:১১, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

খালেদার মেডিক্যাল রিপোর্ট সুপ্রীম কোর্টে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিষয়ক প্রতিবেদন সুপ্রীমকোর্টে পৌঁছেছে। বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওই প্রতিবেদন সুপ্রীমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন সুপ্রীমকোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এ্যাডভান্স (উন্নত) ট্রিটমেন্টের জন্য খালেদা জিয়া সম্মতি দিয়েছেন কি না, সম্মতি দিলে চিকিৎসা শুরু হয়েছে কি না এবং শুরু হলে কি অবস্থায় তা জানাতে বিএসএমএমইউ উপাচার্যকে নির্দেশ প্রদান করে হাইকোর্ট। বুধবারের মধ্যে এ প্রতিবেদন সুপ্রীমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ে পাঠাতে বলা হয়। এ বিষয়ে আদেশের জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য রয়েছে। গত রবিবার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া দুদকের দায়ের করা দুই মামলায় ১০ ও ৭ বছরের কারাদ-ে দ-িত হয়েছেন। আপীলে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের কারাদ- বেড়ে ১০ বছর এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিশেষ আদালতে ৭ বছরের কারাদ-ে দ-িত হয়েছেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেরুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার পর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরান কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়াকে রাখা হয়। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন। গত রবিবার এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানিতে বলেন, আগের আবেদন আর এখনকার আবেদনের বক্তব্য একই। নতুন কিছু নেই। আপীল বিভাগ আদেশ দিয়েছিল খালেদা জিয়ার অনুমতি নিয়ে তার বায়োলিজক এজেন্ট নামের থেরাপি দিতে। খালেদা জিয়া অনুমতি না দেয়ায় ওই চিকিৎসা শুরু করা যাচ্ছে না। বোর্ড তার অনুমতির অপেক্ষায় আছে। তার চিকিৎসার জন্য যে ওষুধের কথা বলা হচ্ছে তা দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে। আর কোন কোন ক্ষেত্রে অবনতি হয়েছে তা এখনকার আবেদনে এমন কিছু বলা হয়নি। এই আবেদন করা হয়েছে শুধুমাত্র আদালতকে বিব্রত করার জন্য। অন্যদিকে শুনানিকালে জয়নুল আবেদীন বলেন, আমরা এ আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলাম। আদালত তা খারিজ করে দেয়ায় আপীল বিভাগে আবেদন করা হয়। আপীল বিভাগও খারিজ করে দেয়। তবে মেডিক্যাল বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী এ্যাডভান্স চিকিৎসার নির্দেশনা দেয়। কিন্তু দিন দিন তার অবস্থার অবনতি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের বেশি কিছু চাওয়ার নেই। আমরা মানবিক কারণে জামিন চাচ্ছি। জামিন পেলে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে চান। এ কারণেই আমরা এ মুহূর্তে তার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মেডিক্যাল রিপোর্ট চাইতে আবেদন করেছি। ১৮ ফেব্রুয়ারি এই আবেদনটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দায়ের করে খালেদার আইনজীবী সগীর হোসেন লিয়ন। এর আগে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এ মামলায় তার জামিন আবেদন পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দিয়েছিল আপীল বিভাগ। তবে আবেদনকারী (খালেদা জিয়া) যদি সম্মতি দেন তাহলে বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী তার এ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। ২০১৮ সালের ফেরুয়ারিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদ- পেয়ে বন্দী রয়েছেন খালেদা জিয়া। আপীলের পর হাইকোর্টে যা বেড়ে ১০ বছর হয়। পরে ২০১৮ সালের ১৮ নবেম্বর খালাস চেয়ে আপীল বিভাগে খালেদা জিয়া জামিন আবেদন করেন। তবে সেই আবেদন এখনও আদালতে উপস্থাপন করেননি তার আইনজীবীরা। বিএনপি স্থায়ী কমিটির বৈঠক কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে দলের স্থায়ী কমিটি। বুধবার রাতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার মামলার সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে এ বৈঠকে আলোচনা করেন স্থায়ী কমিটির নেতারা। আজ বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে শুনানির তারিখ রয়েছে। বৈঠকে লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপিতে আলোচনায় অংশ নেন। তবে বৈঠক শেষে বিএনপির পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের ব্রিফ করা হয়নি। জানা যায়, বৈঠকে খালেদা জিয়ার মামলার বিষয় ছাড়াও জামিন না হলে দলের পরবর্তী কর্মসূচী কি হবে সে ব্যাপারে কথা হয়।
×