বেশ ক’বছর হলো দেশে মোবাইল ফোনে নিজেই নিজের ছবি তোলার চল গড়ে উঠেছে। এর নাম হয়েছে সেলফি। শুধু অল্পবয়সীরাই নয়, বয়স্ক মানুষও এখন সেলফি-সংস্কৃতির শিকার। মানুষ আত্মপ্রেমের চূড়ান্ত পরাকাষ্ঠা দেখাচ্ছে সেলফি তুলে। এই আদিখ্যেতা মানুষকে ভুলিয়ে দিচ্ছে স্থানকালপাত্র জ্ঞান। তাই ক’দিন পরপরই সেলফি তুলেতে গিয়ে জীবননাশের খবর সংবাদপত্রের জায়গা করে নিচ্ছে। সেলফি তুলেতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় স্কুলছাত্রটির মৃত্যুর জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করব, কিন্তু পাশাপাশি দুঃখ করে একথাও বলতে হবে যে, কতখানি কা-জ্ঞানবর্জিত হলে একজন শিক্ষার্থী এভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেলফি তোলার পরিকল্পনা করতে পারে! এটি কি বাহাদুরি প্রদর্শনের বাতিক? নাকি সেলফি সংস্কৃতিতে অভিনবত্ব আনার ভয়ঙ্কর প্রয়াস! এভাবে আর কত মানুষ সেলফির বলি হবে? এমন ভয়ঙ্কর শখে অবশ্যই লাগাম টানতে হবে।
কানে হেডফোন নিয়ে পথ চলা এখন যেন ফ্যাশনে দাঁড়িয়ে গেছে। যিনি কানে হেডফোন লাগিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন, তার মনোযোগ কি থাকে সড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন গতির যানের দিকে? এতে তার ঝুঁকিই বাড়ে। রেললাইনে সেলফি তুলতে গিয়ে যে তরুণের দুঃখজনক মৃত্যু হলো তাকে একজন প্রত্যক্ষদর্শী চিৎকার করে সাবধান করে দিচ্ছিলেন এই বলে যে বিপরীত দিক থেকেও আরেকটি ট্রেন আসছে। কিন্তু কানে হেডফোন লাগানো থাকলে কী করে তার কানে পৌঁছুবে সেই সাবধানবাণী! এমন অপমৃত্যু, তথা জীবনের মর্মান্তিক পরিণতি থেকে মানুষ যদি শিক্ষা না নেয় তাহলে কিভাবে তাদের বাঁচানো সম্ভব? আমরা আশা করব পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এ ব্যাপারে সচেতন করার ব্যবস্থা নেয়া হবে। গণমাধ্যমেরও দায়িত্ব রয়েছে সতর্ক ও সচেতন করার।
খুলনা থেকে
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: