ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সংঘাতে রক্তাক্ত দিল্লিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৯

প্রকাশিত: ২৩:২৮, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

সংঘাতে রক্তাক্ত দিল্লিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৯

অনলাইন ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফরের মধ্যে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন নিয়ে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে শুরু হওয়া সংঘাত আরও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। গত রবিবার সংঘাত শুরুর পর থেকে এই তিন দিনে এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ১৯ জন নিহত হয়েছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে। এনডিটিভি জানিয়েছে, এই সংঘাতে আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ; হতাহতদের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান উভয়েই রয়েছে। দফায় দফায় সংঘর্ষে মঙ্গলবার রণক্ষেত্রে রূপ নিয়েছিল দিল্লির মুসলমান অধ্যুষিত উত্তর-পূর্বাঞ্চল। বিবিসি বলছে, দিল্লিতে এমন সহিংসতা গত কয়েক দশকেও দেখা যায়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মঙ্গলবার কয়েকটি এলাকায় সান্ধ্য আইন জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। বিভিন্ন স্থানে মেট্রো স্টেশন বন্ধ রাখা হয়েছে। উত্তেজনা যেন না ছড়ায়, সেজন্য বেসরকারি টেলিভিশনগুলোকে সংঘাতের খবর প্রচারের ক্ষেত্রে সাবধান করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এদিকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এই উন্মত্ততা বন্ধ করে হিন্দু-মুসলিম উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) পাস করার পর থেকে ভারতের মুসলমানরা ক্ষোভে ফুঁসছে। এই আইন বাতিলের দাবিতে নানা কর্মসূচিও চালিয়ে যাচ্ছিল তারা। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি আইনের পক্ষে কর্মসূচি নিয়ে নামলে দেখা দেয় সংঘাত। রবিবার সংঘাত শুরুর পরদিনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার প্রথম ভারত সফর শুরু করেন। সেদিনই নিহত হন এক পুলিশ কনস্টেবলসহ চারজন। মৌজপুর, ব্রহ্মপুরী, ভজনপুরা চক, গোকুলপুরীসহ বিভিন্ন এলাকায় মঙ্গলবার নতুন করে ব্যাপক সংঘাত বাঁধে বলে ভারতের সংবাদ মাধ্যমের খবর। মৌজপুরে এক সাংবাদিককে লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়ার খবরও এসেছে। এক সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও একজন। মৌজপুরে একাধিক গাড়ি ও দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গোকুলপুরীর বাজারে আগুন দেওয়া হয়েছে। পুড়েছে বহু দোকান। দুপুরে সিএএবিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ভজনপুরা চক। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বহু দোকান। ভজনপুরা, চাঁদবাগ ও কারাওয়ালনগরের রাস্তায় লাঠি ও রড হাতে দাপিয়ে বেড়িয়েছে মানুষ। সহিংসতা দমনে ব্যর্থতার জন্য পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যাপক সমালোচনা চলছে। সংঘর্ষ চরম আকার ধারণ করায় সোমবারই দিল্লির একাধিক মেট্রো স্টেশন বন্ধ রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবারও জাফরাবাদ, মৌজপুর-বাবরপুর, গোকুলপুরী, জোহরি এনক্লেভ ও শিব বিহার স্টেশন বন্ধ রাখা হয়। উত্তর-পূর্ব দিল্লির সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে।
×