ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চসিক নির্বাচন

মেয়র পদে লড়াই হবে রেজাউল ও শাহাদাত

প্রকাশিত: ১১:২৫, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

মেয়র পদে লড়াই হবে রেজাউল ও শাহাদাত

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর বিপরীতে ধানের শীষের প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। আওয়ামী লীগ আগেভাগে প্রার্থিতা ঘোষণা করলেও বিএনপির স্থায়ী কমিটি তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে সোমবার রাতে। প্রধান দু’দলের অংশগ্রহণে চসিক নির্বাচন বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে আশা করছে নগরবাসী। কাল বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দানের শেষ দিন। এরমধ্যেই মেয়র ও কাউন্সিলর পদে সাড়ে ৩ শতাধিক আগ্রহী প্রার্থী নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করছেন। এদিকে, আচরণবিধি পর্যবেক্ষণে শীঘ্রই নামছেন ১৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট। সুন্দর একটি নির্বাচন উপহার দিতে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি থেকে কে প্রার্থী হচ্ছেন তা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় ভোটের লড়াই নতুন মাত্রা পেয়েছে। রেজাউল করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডা. শাহাদাত হোসেন মহানগর বিএনপির সভাপতি। দু’দলের কাউন্সিলর প্রার্থীদের তালিকাও এর মধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ-বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য দল এবং স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করতে অনেকেই মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি উভয় দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা যায়, দলীয় মনোনয়নের বাইরেও কাউন্সিলর পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকছে। দল থেকে কঠোর সতর্কতা থাকলে অন্তত ডজনখানেক ওয়ার্ডে মনোনয়নবঞ্চিতরা বিদ্রোহী ি সেবে প্রার্থী হতে পারেন। এরমধ্যেই তারা মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে মাঠ পর্যায়ে তৎপরতাও শুরু করেছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন দল হওয়ায় এ দলে বিদ্রোহের আলামত সুস্পষ্ট। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা কমিটির সভায় বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার বিরুদ্ধে সতর্কবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে। তবে দলীয় সূত্র এও বলছে যে, চসিক নির্বাচনে ভোটার বাড়ানোও একটি চ্যালেঞ্জ। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন এবং চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে ৩০ শতাংশেরও কম। এবার ভোটের হার যেন বাড়ে সে ব্যাপারে তৎপর হওয়ার নির্দেশনাও রয়েছে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে ভেবে অনেকেই দলের একাধিক প্রার্থী না চাইলেও মোট প্রার্থী বেশি হওয়ারকে ইতিবাচক হিসেবে দেখতে চান। কেননা, প্রার্থী বাড়লে তাদের তৎপরতায় ভোটারও বাড়বে। এদিকে, বিএনপি মুখে এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না বললেও ভেতরে ভেতরেও ভাল প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে বলে প্রতীয়মান। কেননা, এরমধ্যেই পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, ইভিএমে ভোটার ছাড়া ভোট দেয়া যায় না। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ঢাকা ও চট্টগ্রামের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল দিনভর কেন্দ্রে প্রভাব রেখেও কাস্ট ভোট বাড়াতে পারেনি। বিএনপির টার্গেট যত বেশিসংখ্যক নিজেদের ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করা। তাছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মহানগর বিএনপির সভাপতিকে প্রার্থী করায় রাজনৈতিক মহলে ধারণা, বিএনপি চসিক নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। বিএনপির ভোটাররা যদি কেন্দ্রে যায় তাহলে নির্বাচন বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সকল প্রস্তুতিই নিয়েছে কমিশন। সোমবার রাতের মধ্যেই প্রার্থীদের শুভেচ্ছা ও দোয়া কামনা সংবলিত পোস্টারগুলো সরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু সে পোস্টারগুলো মঙ্গলবারও ঝুলে থাকতে দেখা যায়। নির্দেশনা যেন প্রতিপালিত হয় সে জন্য মাঠে নামানো হচ্ছে ১৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট। তারা পর্যবেক্ষণ করবেন আচরণবিধি ঠিকভাবে পালিত হচ্ছে কিনা। চসিক নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান জানান, এর মধ্যে যে পোস্টার ব্যানারগুলো লাগানো হয়েছে সেগুলো অপসারণ করতে বলা হয়েছে। ১৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন মাঠপর্যায়ে পর্যবেক্ষণে। বুধ বা বৃহস্পতিবারের মধ্যেই ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ সম্পন্ন হবে। ভোটের প্রচারে কোন ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা যেন না ঘটে সে জন্য কোন মিছিল বা শোডাউন করা যাবে না। এবারের নির্বাচনে পলিথিন মোড়ানো বা লেমিনেটেড পোস্টার লাগানো যাবে না। আচরণবিধি লঙ্ঘিত হওয়ার লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে কিংবা ম্যাজিস্ট্রেটদের দৃষ্টিতে এ ধরনের কোন প্রমাণ ধরা পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×