ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রয়োজনে চোরাগোপ্তা হামলা, ঝটিকা মিছিল, নাশকতা

প্রকাশিত: ১১:১২, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

প্রয়োজনে চোরাগোপ্তা হামলা, ঝটিকা মিছিল, নাশকতা

শংকর কুমার দে ॥ কারাবন্দী সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য রাজপথে নামার নির্দেশ দিয়েছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, এটা গোয়েন্দা সংস্থার দাবি। এ জন্য প্রয়োজনে চোরাগোপ্তা হামলা, ঝটিকা মিছিল, গুজব ছড়িয়ে নাশকতা সৃষ্টির পটভূমি তৈরি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার মতো কর্মসূচী নিয়ে মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। লন্ডন থেকে টেলিফোনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দেয়ার পর প্রতিবাদ জানাতে বিক্ষোভ মিছিল শুরুর মাধ্যমে রাজপথের আন্দোলনের জন্য মাঠে নামতে শুরু করেছে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠন। বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠন আন্দোলনের নামে যাতে নাশকতা ও সহিংসতা ছড়াতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এ খবর জানা গেছে। গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে তার বিশ্বস্ত ও ঘনিষ্ঠ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে বলেছেন, বিশ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াত-শিবির যদি আন্দোলনে অংশ না নেয় তাহলে একাই বিএনপিকে আন্দোলনের জন্য মাঠে নামতে হবে। আদালতের রায়ের অপেক্ষা না করেই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচীর নামে আন্দোলনের জন্য মাঠে নেমে পড়েছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন। বিদেশী প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর কূটনৈতিক মহলের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছে বিএনপি। বিদেশী শক্তির সঙ্গে লবিং করা হচ্ছে যাতে বিএনপি সরকার বিরোধী আন্দোলনে সমর্থন ও সাহায্য পায়, এমন দাবি গোয়েন্দা সংস্থার। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই সরকার বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য ইতোমধ্যেই বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তারেক রহমান কথাও বলেছেন। কিভাবে সরকারের পতন ঘটানো যাবে তার জন্য কি ধরনের আন্দোলনের কৌশল নিতে হবে, গতিপ্রকৃতি কি হবে এবং আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথ ও পদ্ধতি কি হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এরপর থেকেই বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ নড়েচড়ে বসেছেন। রাজপথে আন্দোলনের কর্মসূচী দেয়া হচ্ছে। বিএনপির নেতৃবৃন্দ ইতোমধ্যেই সরকার বিরোধী কড়া ভাষায় কথা বলে তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন বলে গোয়েন্দা সংস্থার দাবি। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির নীতিনির্ধারক মহলের সাম্প্রতিক সময়ের বৈঠকে, বিশেষ করে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া বলেছেন, সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য একটি বড় ধরনের আন্দোলন করে বিদেশী প্রভাবশালী রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রদূতদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায়। আর এর মধ্য দিয়ে কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে বেগবান করার ছক কষছে বিএনপি। পরিকল্পনা অনুযায়ী লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া সারাদেশে নেতাকর্মীদের আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, লন্ডনে পলাতক তারেক রহমানের সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পর পরই বিএনপির প্রভাবশালী নেতারা কড়া ভাষায় বক্তব্য দিতে শুরু করেছেন। এমনকি আদালতের রায় পক্ষে গেলে কি হবে আর পক্ষে না গেলে কি হবে সেটাও আলোচনা করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। আদালতের রায় পক্ষে না আসলে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে বিএনপিকে একদফা আন্দোলনে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তারেক রহমান। এই নির্দেশ পেয়েই দলের একটি অংশ ধাপে ধাপে আন্দোলনকে না বাড়িয়ে কিংবা পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ না করেই হঠাৎ করেই চূড়ান্ত আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করে যাচ্ছে। এই ধরনের আন্দোলন গড়ে তোলার আরেকটি কারণ হচ্ছে, বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা যাতে দলত্যাগ না করেন এবং কোনভাবেই বিএনপিতে যাতে ভাঙ্গন ধরাতে না পারে সেটা চিন্তা করেই আন্দোলনের জন্য মাঠে নামার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার দাবি।
×