ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আশ্রমে গান্ধীর পরিবর্তে মোদির নাম লিখে বিতর্কে ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

আশ্রমে গান্ধীর পরিবর্তে মোদির নাম লিখে বিতর্কে ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক ॥ সাবরমতী আশ্রমে গেলেন। মালা দিলেন গান্ধীর প্রতিকৃতিতে। এমনকি, চরকা কাটার চেষ্টাও করলেন। তবে আশ্রমের ভিজিটর্স বুকে গান্ধীর কথা না লিখে শুধু বন্ধু নরেন্দ্র মোদির কথাই লিখলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যার জেরে বিতর্কের মুখে পড়তে হল ট্রাম্পকে। গান্ধীর স্মৃতিবিজড়িত আশ্রমে ট্রাম্প আসবেন কিনা, সফরের আগের দিন পর্যন্তও তা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। কিন্তু নয়াদিল্লীর তরফে ওয়াশিংটনকে জানিয়ে দেওয়া হয়, আমদাবাদে এসে সাবরমতীতে না গেলে ভারতে ভুল বার্তা যাবে। গান্ধী আশ্রমে যেতে রাজি হন ট্রাম্প। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিমানবন্দর থেকে সোজা পৌঁছন সাবরমতীতে। তার কয়েক মিনিট আগেই পৌঁছে যান নরেন্দ্র মোদিও। খদ্দরের উত্তরীয় পরিয়ে তাঁদের স্বাগত জানানো হয়। আশ্রমে জুতো পরে ঢোকার অনুমতি নেই। বারান্দায় ওঠার আগে জুতো খুলে রাখেন ট্রাম্প। মোজা পরে নেন মেলানিয়া। গাইড ছাড়া নিজেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডিকে আশ্রম ঘুরিয়ে দেখান মোদি। সব মিলিয়ে পনের মিনিট। আশ্রমের যে ঘরটিতে মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধী ও তাঁর স্ত্রী কস্তুরবা থাকতেন, সেই হৃদয়কুঞ্জে যান ট্রাম্প-মেলানিয়া। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সাবরমতীর গুরুত্ব বোঝান মোদি। পরে মালা হাতে আশ্রমের বারান্দায় টাঙানো গান্ধীর ছবির সামনে দাঁড়ান প্রধানমন্ত্রী। মালার এক প্রান্ত নিজের হাতে রেখে অন্য প্রান্ত তুলে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের হাতে। ছবিতে মালা পরান দু’জনে মিলে। গান্ধীর ছবিতে নমস্কার করে ট্রাম্প-মেলানিয়াকে নিয়ে মোদী পৌঁছন বারান্দায় রাখা চরকার সামনে। আশ্রমিক মহিলারা চরকা ও খাদির গুরুত্ব বোঝান ট্রাম্পকে। হাতে তুলো নিয়ে চরকা কাটারও চেষ্টা করেন ট্রাম্প। প্রশ্ন করতেও দেখা যায় তাঁকে। পরে আশ্রমের বারান্দার মেঝেকে কিছু ক্ষণ পাশাপাশি বসে থাকেন তিন জন। ভারত সরকারের তরফে গান্ধীর বিখ্যাত তিন বাঁদরের মূর্তি উপহার দেওয়া হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে। সেই তিন বাঁদর, যারা খারাপ কথা বলে না, শোনে না। এমনকি, খারাপ কিছু দেখেও না। মোদিই মূর্তিগুলির উপরের পর্দা সরিয়ে বিষয়টি বোঝান। কৌতূহলের সঙ্গে সেগুলি দেখেন ট্রাম্প-মেলানিয়া। এগুলি ভাল ভাবে দেখার জন্য সামনে এগিয়ে আসতেও দেখা যায় ট্রাম্পকে। আশ্রমের তরফে গান্ধীর আত্মজীবনীর কপি, পেনসিলে আঁকা গান্ধীর ছবি ও একটি চরকা উপহার দেওয়া হয় ট্রাম্পকে। শেষ পর্বে ট্রাম্পের দিকে ভিজিটর্স বুক এগিয়ে দেন মোদি। সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট যা লিখেছেন, তাতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। তিনি লিখেছেন, ‘‘এই দারুণ সফরের জন্য আমার আসাধারণ বন্ধু প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ধন্যবাদ।’’ ক্ষোভ প্রকাশ করে কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারির টুইট ‘‘গান্ধী কে ছিলেন, সেটা উনি জানেন তো?’’ ট্রাম্পের এই লেখার সঙ্গে অনেকে তুলনা টেনেছেন গা্ন্ধী কে নিয়ে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মন্তব্যের। ২০১০ সালে ভারতে এসে ওবামা লিখেছিলেন, ‘‘গান্ধীর স্মৃতিচিহ্ন দেখার সুযোগ পেয়ে আশা আর অনুপ্রেরণায় মন ভরে গেল। তিনি ভারতের নয়, গোটা বিশ্বের নায়ক।’’ বিতর্কের পরে মোতেরা স্টেডিয়ামে পৌঁছে বক্তৃতায় সাবরমতী প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন ট্রাম্প। তাঁর কথায়, ‘‘এখান থেকে কিছু দূরে গান্ধীর আশ্রমে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। ওখান থেকেই লবণ পদযাত্রা শুরু করেছিলেন গান্ধী।’’ সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×