স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ চলে যাওয়ার পর দলটি ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এর বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের বড় বড় রাজনৈতিক দল ব্যক্তি কেন্দ্র্রীক। শীর্ষ নেতার অবর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলো ঘাত-প্রতিঘাতে বিলীন হয়ে যায়। কিন্তু পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চলে যাওয়ার পরে জাতীয় পার্টি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সবার প্রচেষ্টায় দল এখন ঐক্যবদ্ধ এবং শক্তিশালী।
সোমবার জাপা চেয়ারম্যানের বনানী অফিসে নিজের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে জিএম কাদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগামী দিনের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গণমানুষের আস্থা অর্জন করতে কাজ করছে দলটি। মানুষের ভালোবাসায় রাষ্ট্র ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছানো জাতীয় পার্টির জন্য সময়ের ব্যাপার মাত্র।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, নিঃস্বার্থভাবে মানুষের জন্য কাজ করলে অর্থ-বিত্তে মূল্যায়নের আশা করা ঠিক নয়। মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসাই রাজনীতিবিদদের কাম্য হওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, আমি মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এই ভালোবাসার মূল্য দিতে চাই। মানুষের আস্থা অর্জন করে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চাই। দেশের মানুষের কল্যাণে জীবন উৎসর্গ করার ঘোষণাও দেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।
নিজের জন্মদিনের আয়োজনে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মাগফেরাত কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়াও চেয়েছেন তিনি।
অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, পল্লীবন্ধু যখন জেলে, তখন চাকরি ছেড়ে জিএম কাদের রাজনীতিতে এসে তার মুক্তি আন্দোলন বেগবান করেছিলেন। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ আছে। জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ থাকবে। আমরা সবাই মিলে জাতীয় পার্টির ঐক্য ধরে রাখবো। আর ঐক্যবদ্ধ থাকলে জাতীয় জাপার ক্ষমতায় যাওয়া সুনিশ্চিত।
এর আগে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের নিজের জন্মদিনের কেক কাটেন।
এসময় স্ত্রী শেরিফা কাদের, পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু, কো-চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, সোলায়মান আলম শেঠ, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, জহিরুল ইসলাম জহির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গোলাম মোহাম্মদ কাদের পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে ৭২ পাউন্ড ওজনের জন্মদিনের কেক কাটেন। পার্টির চেয়ারম্যানের জন্মদিন উপলক্ষে সকাল থেকেই বনানী অফিসে ছিল নেতাকর্মীদের ভিড়ে জমজমাট। সবাই ফুল নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন চেয়ারম্যানকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য। বেলা ১১টার দিকে গোলাম মোহাম্মদ কাদের স্ত্রী শেরিফা কাদেরকে নিয়ে বনানী অফিসে আসেন। এরপর একে একে শুভেচ্ছা বিনিময় পর্ব শুরু হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী জিএম কাদের বলেন, জনগণের ভালোবাসা পাওয়াই রাজনীতিতে প্রাপ্তি হওয়ার উচিত। যে কোনোভাবে আমি নিজেকে সফল মনে করি। আপনারা যেভাবে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা দেখিয়েছেন, তাতে আমি মুগ্ধ।
জিএম কাদের বলেন, আমি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে প্রয়াত এরশাদের কথা স্মরণ করছি। তিনি দল সৃষ্টি করেছিলেন বলে রাজনীতিতে এসে ভূমিকা রাখার সুযোগ পেয়েছি। মানুষের ভালোবাসা নিয়ে যেন কবরে শায়িত হতে পারি, মানুষের আস্থা আর বিশ্বাসের জায়গা যেন ধরে রাখতে পারি, এটাই আমার শেষ চাওয়া। আসছে ২০ মার্চ প্রয়াত এরশাদের জন্মদিন। সেই জন্মদিন আমরা এভাবে পালন করব না। ওই দিন দোয়া ও দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে করা হবে, জেলা উপজেলাতেও।
