ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

’২৪ সালের মধ্যেই আমরা মালয়েশিয়া সিঙ্গাপুরের ওপরে যাব ॥ অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:৪৪, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 ’২৪ সালের মধ্যেই  আমরা মালয়েশিয়া  সিঙ্গাপুরের  ওপরে যাব ॥  অর্থমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে যাদের আবাসনের ব্যবস্থা নেই, ঘরবাড়ি নেই তাদের জন্য আবাসন তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সবাইকে ঘরের ব্যবস্থা করে দেবেন। এটা আমেরিকাতেও সম্ভব নয়, গোটা ইউরোপেও সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। একইসঙ্গে তিনি জানান, ২০২৪ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরের ওপরে যাবে। রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) নতুন কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠান উপলক্ষে ‘উন্নয়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন সংসদে আমি প্রথম আসি, তখন বাজেটে ১০০ কোটি টাকা ভর্তুকি রাখা হয়েছিল কৃষকের জন্য। সেখানে আরও কিছু সামাজিক নেট রাখা হয়েছে। এটা তখন আমাদের মতো দেশের জন্য ছিল খুবই সাহসী সিদ্ধান্ত। এবার তিনি ঘোষণা দিলেন যাদের আবাসনের ব্যবস্থা নেই, ঘরবাড়ি নেই তাদের জন্য আবাসন তৈরি। তিনি সবাইকে ঘরের ব্যবস্থা করে দেবেন। এটা আমেরিকাতেও সম্ভব নয় গোটা ইউরোপেও সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দিয়েছেন এবং তিনি এটা দেখভাল করবেন। এটা পৃথিবীর কোন দেশে নেই। এটা প্রধানমন্ত্রী দেখভাল করবেন। এর চেয়ে বড় শক্তিশালী ভূমিকায় কোন দেশের প্রধানমন্ত্রী অবতীর্ণ হতে পারেন, এটা কল্পনা করতেও ভয় লাগে। তিনি সেটা ডেলিভার করবেন, সেটা আমাদের সবাইকে বিশ্বাস রাখতে হবে যোগ করেন অর্থমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বে বাংলাদেশকে ওপরের দিকে নিয়ে যেতে চাই। এজন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। ইতিহাসের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ইতিহাস কখনও মলিন হয় না। যেমনটা শুরু করেছিলেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। তিনি একটি দারিদ্র্যমুক্ত, ক্ষুদামুক্ত দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তখন রাস্তাঘাট ছিল না, ছিল যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ। যদি জাতির পিতা বেঁচে থাকতেন তাহলে অনেক বিশ্বের মানচিত্রের ওপরে থাকতাম। অর্থনীতি অনেক উন্নত হতো। জাতির পিতার রেখে যাওয়া কাজই এখন করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারই দেখানো পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, দেশকে সারাবিশ্বে অনেক সমাদৃত করেছেন। সেন্টার ফর ইকোনমিক্স রিসার্চের তথ্য তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২৪ সালের মধ্যেই আমরা মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরের ওপরে যাব। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরেই ২০৩০ এর স্বপ্ন পূরণ হবে এবং ২০৪১-এর স্বপ্নও বাস্তবায়ন করতে পারব। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হবে। সকলেই ফোর্থ ইন্ট্রাট্রিয়াল রেভ্যুলুশনের যত চাহিদা শিক্ষা খাতে, সেগুলো তারা মোকাবেলা করতে পারবে। সেগুলোকে ব্যবহার করে জাতিকে আরও সামনে নিয়ে যাবে। বিশ্বাস করি, এ কাজগুলো সময়ের ব্যাপার। আলোচনা সভার আয়োজক ডিজেএফবি সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনারা অত্যন্ত দক্ষ, দীর্ঘদিন আপনাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে আমার। আপনাদের এ যাত্রা শুভ হবে। আমি বিশ্বাস করি, আপনাদের সংগঠন অনেক সুন্দরভাবে কাজ করবে। দেশের মানুষকে বিকশিত করুক। এটাই আমাদের দোয়া। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, তৃণমূলে ৭০-৮০ ভাগ মানুষ যারা বসবাস করেন, তারা উন্নয়ন চান। শুধু কথার উন্নয়ন নয়, দেখতে চান চোখে। সেতু কালভার্ট ইমিডিয়েটলি দেখতে চান তারা। ঘরে বিদ্যুত তারা এই বেলায় চান। ভাতা বা অবলম্বন, পরিষ্কার পানির স্বপ্ন এগুলোই তারা চান। অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার আহ্বান জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করুন। আমার পক্ষ থেকে সম্পূর্ণরুপে সাহায্য-সমর্থন পাবেন। আমরা সবাই চাই, তথ্যপ্রবাহ অবাধ হোক। এতে আমাদের লাভ, শুধু আপনাদের লাভ না। আপনারা যে ক’দিন আমাদের সঙ্গে কাজ করবেন আমি বলছি, সম্পূর্ণ শতভাগ অবাধ সহযোগিতা দেয়া হবে। ডিজেএফবির সভাপতি এফ এইচ এম হুমায়ূন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের কার্যনির্বাহী সদস্য সুশান্ত সিনহা। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ সাইফুল আলম ও এএফপির বাংলাদেশের ব্যুরো চীফ শফিকুল আলম। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব নূরুল আমিন, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সদস্য (সচিব) আবুল মনসুর মোঃ ফয়জুল্লাহ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) বেগম ফাতিমা ইয়াসমিন প্রমূখ।
×