ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শ্রীপুরে আড়াই বছরেও বয়স্কভাতার চেক ভাঙ্গাতে পারেননি বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম

প্রকাশিত: ০৯:০২, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

শ্রীপুরে আড়াই বছরেও  বয়স্কভাতার চেক ভাঙ্গাতে পারেননি বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুরের শ্রীপুরে অসহায় এক বৃদ্ধ প্রায় আড়াই বছর ব্যাংক ও সমাজ সেবা অফিসে ধর্ণা দিয়েও তার বয়ষ্ক ভাতার চেক ভাঙ্গাতে পারেন নি। উল্টো সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্বব্যবহার করেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম (৭০)। বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম জানান, তার হিসাব নম্বর ১১০৭৫। ২০১৮সালের ৯ আগস্ট এবং ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল শ্রীপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে ইস্যূকৃত বয়স্কভাতার দুইটি চেক পেয়েছেন তিনি। তার ওই চেকের টাকা তুলতে তিনি ৭বার সমাজসেবা অফিস ও স্থানীয় সোনালী ব্যাংকে যোগাযোগ করেন। কিন্তু চেকের টাকা তিনি তুলতে পারেননি। ব্যাংকে গেলে কর্মকর্তারা বলেন সমাজসেবা অফিসের তালিকার সঙ্গে তার পাস বইয়ের তথ্যের গড়মিল থাকা তাকে টাকা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তিনি সমাজসেবা অফিসে গিয়ে ওই তথ্য ঠিক করে দিতে বললে ওই অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার সঙ্গে দূর্ব্যবহার করেন। অপর সুবিধাভোগী স্থানীয় আমেনা বেগম প্রায় একই ধরণের অভিযোগ করে বলেন, সমাজ সেবা অফিসের দেয়া পাস বইয়ের সঙ্গে ব্যাংকে পাঠানো তালিকায় লেখা তার স্বামী আর পিতার নামের তথ্যে গড়মিল রয়েছে। ফলে ব্যাংকে গেলেও টাকা তুলতে পারছেন না তিনি। এরকম নানা সমস্যার অভিযোগ করেন স্থানীয় দক্ষিণ ভাংনাহাটি এলাকার মোন্তাজ উদ্দিন। তিনি অভিযোগ করেন, ওই অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে প্রচন্ড গাফিলতি রয়েছে। তারা ঠিকমত অফিস করেন না। তাই প্রতিনিয়তই নানা রকমের ভুল হচ্ছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে আমাদের বৃদ্ধদের। নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন বয়ষ্করা। রবিবার শ্রীপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে, নানা সমস্যার কারণে প্রায় অর্ধশত বৃদ্ধ/বৃদ্ধা ভিড় জমিয়েছেন। হৈচৈ করছেন এসব ভুক্তভোগীরা। স্থানীয় কেওয়া (পূর্ব) এলাকার রমিজাসহ রহিমা দূর-দূরান্ত থেকে বয়স্ক ব্যক্তিরা সকালে গিয়ে তাদের সমস্যা সমাধান করার কথা বললে বৃদ্ধ/বৃদ্ধাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করছেন ওই অফিসে কর্মরত কয়েক সমাজকর্মী। তারা কয়েকজনকে অফিস থেকে জোর করে বের করে দেন। এসময় শ্রীপুর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তাও অফিসে ছিলেন না। শ্রীপুরের সমাজসেবা আফিসে আগত বয়স্ক লোকদের সঙ্গে দূর্ববহারের কথা অস্বীকার করে সমাজকর্মী নাসির উদ্দিন বলেন, অফিসের কাগজ-পত্রে (তালিকার) বয়স্কদের তথ্যের ত্রুটি চিহ্নিত করা হচ্ছে। ওইসব সমস্যা দ্রুত সমাধান করা হবে। কিন্তু দুই/তিন বছর আগের ত্রুটিও ঠিক না হওয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি। এব্যপারে জেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা এসএম আনোয়ারুল করিম জানান, শ্রীপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মঞ্জুরুল ইসলাম রবিবার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় সোমবার আমি নিজে সেখানে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখব এবং কারো গাফিলতি থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×