ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ওস্তাদ মোমতাজ আলী খান সঙ্গীত একাডেমির উদ্যেগে শিল্পী গোলাম আম্বিয়া স্মরণে দোয়া ও আলোচনা

প্রকাশিত: ০৯:৫৩, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ওস্তাদ মোমতাজ আলী খান সঙ্গীত একাডেমির উদ্যেগে শিল্পী গোলাম আম্বিয়া স্মরণে দোয়া ও আলোচনা

অনলাইন রিপোর্টার ॥ ওস্তাদ মোমতাজ আলী খান সঙ্গীত একাডেমি ও কুটি মনসুর ফাউন্ডেশন এর যৌথ উদ্যোগে রামপুরার বনশ্রীতে কুটি মনসুর ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়ে সদ্য প্রয়াত বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের বিশিষ্ট লোকসঙ্গীত শিল্পী সৈয়দ গোলাম আম্বিয়া স্মরণে দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় । সৈয়দ গোলাম আম্বিয়া দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে আক্রান্ত ছিলেন । তিনি ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২০, ধানমন্ডির কিডনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় ১ মিনিট নীরবতা পালন ও দোয়া করার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয় । অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ওস্তাদ মোমতাজ আলী খান সঙ্গীত একাডেমি ও কুটি মনসুর ফাউন্ডেশনের মাননীয় সভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রুপু খান । প্রথমে তিনি লোক সঙ্গীতের অঙ্গনে সৈয়দ গোলাম আম্বিয়ার অবদানের কথা তুলে ধরেন । সৈয়দ গোলাম আম্বিয়া বাংলাদেশ টেলিভিশনের 'বাঁশরী' সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার পাশাপাশি রুপু খান পরিচালিত ও উপস্থাপিত 'মাটির টানে' অনুষ্ঠানে নিয়মিত গান পরিবেশন করতেন । সে সকল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের স্মৃতিময় কথা এবং একসাথে দীর্ঘ পথ চলার কথাগুলো বলতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে উঠেন রুপু খান । অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশনের বিশিষ্ট কন্ঠশিল্পী ও কুটি মনসুর ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি নুরুন নাহার আউয়াল । তিনি বলেন কোন শিল্পী বা কলাকুশলী বিপদ্গ্রস্থ হলে আমি সবার আগে রুপু খানকে ঝাপিয়ে পড়তে দেখেছি । বিশেষ অতিথি চমন আফরোজ বলেন সমাজের প্রতিটি মানুষ যদি রুপু খানের মত সকলের পাশে দাঁড়াতো তাহলে কোন কষ্টই থাকতো না । কুটি মনসুর ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি কুটি মনসুরের বড় সন্তান গীতিকার ও চিত্রগ্রাহক কে এম মজনু বলেন সৈয়দ গোলাম আম্বিয়া ছিলেন অত্যন্ত ভদ্র এবং উচ্চ শিক্ষিত একজন সরকারী কর্মকর্তা । তিনি বিবাহ করে প্রথমেই বউকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের বাসায় এসেছিলেন । এরপর থেকে বাবার লেখা গান গাওয়ার সুত্র ধরে দীর্ঘ ৪০ বছর তাঁর সাথে সম্পর্ক ছিল । তাই তাঁকে আমাদের পরিবারের একজন সদস্য বলেই মনে করতাম । কুটি মনসুর ফাউন্ডেশনের সাধারন সম্পাদক কুটি মনসুরের ছোট ছেলে জাহিদ মনসুর বলেন সৈয়দ গোলাম আম্বিয়ার সাথে কুটি মনসুর পরিবারের আত্মার সম্পর্ক ছিল । তিনি কখনও অর্থহীন হালকা অঙ্গের গান গাইতেন না, তাঁর গাওয়া গানগুলোর মধ্যে ইসলামী, আধ্যাতি, মুর্শিদী ও ভক্তিমূলক গানের সংখ্যাই বেশী দেখা যায়, যে গানগুলো মানুষের জ্ঞানের পরিধি বাড়ায় এবং আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে । তিনি সাধক কুটি মনসুর এবং ওস্তাদ মোমতাজ আলী খানের লেখা গান গাইতেই বেশী সাচ্ছন্দ বোধ করতেন । যুগ্ম সাধারন সপাদক ও কুটি মনসুরের সেজ মেয়ের জামাতা শাহাবুদ্দিন আহমেদ দোলন সৈয়দ গোলাম আম্বিয়ার জীবনের ক্রান্তি লগ্নে তাঁর পাশে থাকার জন্য রুপু খানকে ধন্যবাদ জানিয়ে সাংস্কৃতিক কর্মীদের সাহায্যার্থে দলমত নির্বিশেষে সকলকে এগিয়ে আসার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন । সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও কুটি মনসুরের বড় মেয়ের জামাতা আব্দুল মতিন বলেন সৈয়দ গোলাম আম্বিয়া ছিলেন আমার প্রথম শিক্ষা গুরু । তাঁর কাছে দীর্ঘদিন উচ্চাঙ্গ ও লোকসঙ্গীতে তালিম নিয়েছি । টাঙ্গাইল থেকে প্রথমবার ঢাকায় এসে তাঁর স্নেহময় ছায়াতলে আশ্রয় পেয়েছিলাম । অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন কুটি মনসুরের মেঝ মেয়ের জামাতা বাদশা মিয়া, ছোট মেয়ের জামাতা মোজাহার হোসেন এবং চার কন্যা যথাক্রমে সুরাইয়া মতিন, জেসমিন আক্তার, তাসলিমা আক্তার, শাহীন সুলতানা যুথী সহ আরো অনেকে ।
×