ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সীতাকুণ্ডে উদ্বোধনের অপেক্ষায় “মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র”

প্রকাশিত: ০৪:৪৭, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

সীতাকুণ্ডে উদ্বোধনের অপেক্ষায় “মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র”

নিজস্ব সংবাদদাতা, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) ॥ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় আত্মত্যাগের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীদের স্বরণে “মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র”নামে একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের অর্থায়নে ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মীত এই ভাস্কর্যটি আগামী মার্চ মাসের ১৬ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে দৃষ্টিনন্দন শহীদদের স্বরণে এই মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গলীর। এছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সাবেক গৃহায়ন ও গণপূত মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং যুদ্ধকালীন সেক্টর কমান্ডার ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এমপি, স্থানীয় এমপি আলহাজ্ব দিদারুল আলম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এ.সালামসহ রাষ্ট্রীয় অতিথিবৃন্দ। জানা যায়, ১৯৭১ সালের ১২ই ডিসেম্বর সীতাকুণ্ড উপজেলার ছোট দারোগারহাট থেকে কুমিরা এলাকায় ভারতীয় মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী সম্মুখ যুদ্ধের প্রস্ততি নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান গ্রহণ করেন এবং দেশ প্রেমিক জনসাধারণের সহযোগিতায় ঐ দিন রাত ১০টা থেকে পাক হানাদার বাহিনীর উপর আক্রমন পরিচালনা করেন। এই সম্মুখ যুদ্ধ ১২ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত হয়ে ১৭ ডিসেম্বর সীতাকুণ্ড পাক হানাদার মুক্ত হয়। বীরত্বপূর্ণ এই যুদ্ধে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী অসংখ্য সদস্য শহীদ হন। সীতাকুণ্ড সদরে চন্দ্রনাথ মন্দিরগামী এলাকায় মিত্রবাহিনীর পঞ্চাশের অধিক শহীদ জওয়ানের মরদেহ দাহ করা হয় এবং মুক্তিবাহিনীর শহীদদের বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় দাফন করা হয়। উপজেলার ছোট দারোগারহাট থেকে কুমিরা পর্যন্ত শহীদদের স্বরণে ইতিমধ্যে কুমিরা মহাসড়কের পাশে দৃষ্টিনন্দন স্মৃতি ৭১ নামে কয়েকটি ভাস্কর্য দিয়ে স্বরণ করেছেন। এরই অংশ হিসেবে ভারতীয় মিত্র বাহিনীদের সম্মান জানাতে প্রথমে পৌরসদর গজারিয়া ডিঘীর পাড়ে তৎকালীন ভারতীয় সহকারি হাই কমিশনার ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এ.সালাম এই মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র নামে ভাস্কর্যটি ভিত্তি প্রস্থর করেন। কিন্তু ঐ স্থানে পরবর্তীতে জেলা পরিষদের নিয়োগকৃত ঠিকাদার কাজ করতে গেলে আপত্তি আসে। এরপর দীর্ঘ এক বছর কাজ বন্ধ থাকার পর একাধিক মতবিনিময় করে বর্তমান স্থান মন্দির সড়ক দুই নং ব্রীজ সংলগ্ন সীতা মন্দিরের পাশে উপরে সড়কের পাশে নির্মাণ করা হয়েছে। যেটি উদ্বোধনের আগে চন্দ্রনাথধামে আগত পর্যটন ও শিব চতূদর্শী মেলা আসা পূনার্থীদের নজর কাঠছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য আ.ম.ম দিলশাদ জানান,“তিন দফায় প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে নির্মীত এই মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র নামে ভাস্কর্যটি ১৯৭১ সালে শহীদ মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীদের সম্মান জানানো মূল লক্ষ্য। বিশেষ করে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর অনেক সদস্য সীতাকুণ্ডে ছোট দারোগারহাট থেকে কুমিরা পর্যন্ত সম্মুখ যুদ্ধে প্রাণ হারান। শহীদদের এই আত্মত্যাগের প্রতি বিনম্্র শ্রদ্ধা জানাতে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে “মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র” নামের এই ভাস্কর্যটি আমরা স্থাপন করা হয়েছে।”
×