ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

‘আন্তর্জাতিক চারুকলা উৎসব নীলফামারী’ ২৬ ফেব্রুয়ারি শুরু

প্রকাশিত: ১০:২২, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 ‘আন্তর্জাতিক চারুকলা উৎসব নীলফামারী’  ২৬ ফেব্রুয়ারি শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিল্পকলা চর্চার মাধ্যমে রুচিশীল, সংস্কৃতিমনস্ক ও মানবিক প্রজন্ম গড়ে তোলা ও কয়েক প্রজন্মের শিল্পীদের মধ্যে পারস্পরিক মেলবন্ধন গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে প্রতিবছরের মতো এবারও আয়োজিত হচ্ছে দেশের শিল্পকলার বিশাল আয়োজন ‘আন্তর্জাতিক চারুকলা উৎসব ২০২০ নীলফামারী’। ‘প্রকৃতিই জীবন, সুন্দর জীবনের জন্য শিল্প’ স্লোগানে চার দিনব্যাপী এ উৎসব শুরু হচ্ছে ২৬ ফেব্রুয়ারি নীলফামারী জেলার নীলসাগর দীঘির পাড়ে। তৃতীয়বারের মতো এ উৎসবের আয়োজন করেছে ‘চারুকলা উৎসব নীলফামারী উদ্যাপন পরিষদ’। এ উৎসব উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুস, কিউরেটর ও বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হারুন-অর-রশীদ, যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম রানা প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়- এই আয়োজনে বাংলাদেশের বরেণ্য শিল্পীদের মধ্য থেকে অংশ নিচ্ছেন রফিকুন নবী, মনিরুল ইসলাম, সৈয়দ আবুল বারাক আলভি, ফরিদা জামান, রণজিত দাশ, আফজাল হোসাইন, মোহাম্মদ ইউনুস, জামালউদ্দিন আহমেদ, মোস্তাফিজুল হক, রোকেয়া সুলতানা, আহমেদ শামসুদ্দোহা, মুস্তফা খালিদ পলাশ, নিসার হুসাইন, শেখ আফজাল হোসাইন, মুনিরুজ্জামান, শিশির ভট্টাচার্য, মোঃ মাকসুদুর রহমান, মোহাম্মদ ইকবাল, শামিম সুবরানা, আনিসুজ্জামান আনিস, প্রেমা নাযিয়া আন্দালিব, তরুণ ঘোষ, মোঃ আব্দুল মোমেন, রেজা আসাদ আল হুদা অনুপম, সুশান্ত কুমার অধিকারী, আশরাফুল হাসান, অনুকূল মজুমদার, আব্দুস সাত্তার তৌফিক, বিশ্বজিত গোস্বামী, চৌধুরী গোলাম মুজতাবা, সাদিক সৌরভসহ দেশের ১৪০ শিল্পী উৎসবে অংশ নেবেন। দেশের বরেণ্য ও তরুণ শিল্পীরা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিপাইন, রুমানিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, জার্মানি, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের ১৫ জন স্বনামধন্য শিল্পী উৎসব অলংকৃত করবেন। তাদের সান্নিধ্য ও সহযোগিতায় নীলফামারী জেলার ২০ বিদ্যালয়ের দুশতাধিক শিক্ষার্থী টানা চার দিন শিল্পকর্ম নির্মাণের সুযোগ পাবেন। উৎসবে শিক্ষার্থীদের শিল্পকর্ম নির্মাণের বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী সরবরাহ করা হবে। আয়োজকরা জানান, এই উৎসবে থাকছে আর্ট ক্যাম্প, কনটেম্পোরারি আর্ট প্রজেক্ট, সেমিনার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কারুশিল্প মেলা ও লোক সংস্কৃতির বৈচিত্র্যময় উপস্থাপন। ২৭ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টায় উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। সভাপতিত্ব করবেন সংসদ সদস্য সংস্কৃতিজন আসাদুজ্জামান নূর। ২৯ ফেব্রুয়ারি শিল্পী ও শিক্ষার্থীদের শিল্পকর্মের প্রদর্শনী হবে। সেখানে অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের শিল্পকর্ম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে প্রদর্শিত হবে ২৫ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, শিল্পকে বিকেন্দ্রীকরণের জন্য এই আয়োজন। রাজধানী থেকে বের হয়ে সারাদেশে শিল্পকে ছড়িয়ে দেয়াই এই আয়োজনের লক্ষ্য। এর মাধ্যমে অসুন্দরকে দূর করে সুন্দরকে ধারণে নতুন প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হবে। হারুন-অর-রশীদ বলেন, শিল্পের একটি জাদু রয়েছে। শিল্পচর্চার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম ইতিবাচক কাজের দিকে ধাবিত হবে, এটিই আমাদের উদ্দেশ্য। এ উৎসবের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের শিল্পী বানানো নয়, বরং পরবর্তী প্রজন্ম যেন শিল্পমনা হয়-এটিই মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন, সারাদেশ থেকে আমরা শিল্পীদের এখানে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তাদের মধ্যে বরেণ্য ও বয়োজ্যেষ্ঠ শিল্পীরাও রয়েছেন। তাদের মতো এত বড় মাপের শিল্পীদের একসঙ্গে এক আয়োজনে নিয়ে যাওয়া অনেক বিরল একটা ঘটনা। আমরা মনে করি যে শুধু ছবি আঁকাটাই শিল্পীদের জীবনের একমাত্র অংশ নয়, প্রতিটি মুহূর্তই আসলে শিল্প ও সংস্কৃতির সঙ্গে বাঁচা উচিত। স্থানীয় সংসদ সদস্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অধ্যাপক হারুন-অর-রশীদ বলেন, এই পুরো আয়োজনটি তারই সহযোগিতায় আমরা করছি। আমরা আমাদের শৈল্পিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নীলফামারীর জনগণ তথা অংশগ্রহণকারী শিশু-কিশোরদের মনের গভীরে প্রকৃতি ও শিল্পের প্রতি প্রগাঢ় ভালবাসা জন্মানোর মধ্য দিয়ে সুন্দর পরিবেশের পক্ষে দাঁড়াতে চাই।
×