স্টাফ রিপোর্টার ॥ এক বছর আগে রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে হতাহতদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা। সেই সঙ্গে পুরনো ঢাকা থেকে রাসায়নিক ও দাহ্য পদার্থের গুদাম সরিয়ে নিরাপদ জায়গায় স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
শুক্রবার ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনে পাঁচটি সামাজিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘ঐক্যবদ্ধ সকল সামাজিক সংগঠনের’ ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে হতাহতদের স্বজনরা এসব দাবি জানান।
গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি ওয়াহেদ ম্যানশনের আগুনে ঘটনাস্থলেই ৬৭ জনের মৃত্যু হয়। পরে দগ্ধদের মধ্যে আরও চারজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সব মিলিয়ে ৭১ জনের মৃত্যু হয়। এমন ঘটনার পর পুরনো ঢাকা থেকে কেমিক্যালের গুদাম সরানোর নির্দেশ দেয়া হয়।
শুক্রবার সংগঠনটির আহ্বায়ক ও নিহত দুজনের স্বজন এমএ রহিম বলেন, চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির এক বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে। অথচ হতাহতদের পরিবারগুলোর কোন খোঁজখবর নেয়া হয়নি কোন তরফ থেকেই। তারা কোন সরকারী সহায়তাও পাননি। দগ্ধদের মধ্যে অসহায় পরিবারগুলো দিন দিন ভিটা-বাড়ি বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। আর্থিকসহ অন্যান্য সহায়তা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেন তিনি।
আগুনে আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা ও নিহতদের পরিবারের চিকিৎসা ও পড়াশোনার ব্যয় বহন, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে ও ক্ষতিগ্রস্ত ওয়াহেদ ম্যানশন মেরামতের সুযোগ দিয়ে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার সুযোগ করে দেয়ার দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
বৃহস্পতিবার নিহতদের ৩১ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ও যোগ্যতা অনুসারে চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন।
বাংলাদেশ প্লাস্টিক ব্যবসায়ী সমিতি নিহতদের পরিবারগুলোকে ৫০ হাজার টাকা করে সহযোগিতা করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুরনো ঢাকা থেকে ঝুঁকিপূর্ণ ও ক্ষতিকর কেমিক্যালের গুদাম দ্রুত সরিয়ে ফেলার দাবি জানানো হয়। তারা বেশি টাকার লোভে কেমিক্যালের গুদাম হিসেবে বাড়ি ভাড়া বা বাড়ির কোন রুম ভাড়া বা দোকান ভাড়া না দেয়ার জন্য বািড়ওয়ালাদের প্রতি আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে প্লাস্টিক ব্যবসায়ী সমিতির তরফ থেকে দাবি করা হয়, অগ্নিকাণ্ডের পর পুরনো ঢাকার বিভিন্ন গুদাম থেকে ক্ষতিকর ৩২ ধরনের কেমিক্যাল সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এখন যেগুলো আছে সেগুলো ক্ষতিকর নয়। তারপরও যদি সরকার মনে করে কোন কেমিক্যাল সরানো দরকার তাতে তাদের কোন আপত্তি নেই। সংবাদ সম্মেলনের পর হতাহতদের পরিবার-স্বজনসহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্তকে নিয়ে ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনে একটি মানববন্ধন করা হয়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: