ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মুসলিমদের ১৯৪৭ সালেই পাকিস্তান পাঠানো উচিত ছিল ॥ ভারতীয় মন্ত্রী

প্রকাশিত: ২২:২৪, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

মুসলিমদের ১৯৪৭ সালেই পাকিস্তান পাঠানো উচিত ছিল ॥ ভারতীয় মন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক ॥ আবারও মুসলিম-বিদ্বেষী মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ভারতের পশুপালন, দুগ্ধ ও মৎস্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। তিনি এবার বলেছেন, ভারতের সব মুসলিমদেরই ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান পাঠিয়ে দেয়া উচিত ছিল। আজ পূর্বসূরীদের সেই ‘ভুলের’ খেসারত দিতে হচ্ছে তাদের। গত বুধবার বিহারের পুর্নিয়ায় এক সভায় এ কথা বলেন নরেন্দ্র মোদির অত্যন্ত আস্থাভাজন এ নেতা। তিনি বলেন, আমাদের সময় এসেছে জাতির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার। ১৯৪৭ সালের আগে (মোহাম্মদ আলী) জিন্নাহ একটি মুসলিম রাষ্ট্রের চেষ্টা করেছিলেন। সেটা ছিল আমাদের পূর্বসূরীদের বড় ভুল, আজ আমরা সেই ভুলের মাসুল দিচ্ছি। তখন যদি মুসলিম ভাইদের ওখানে (পাকিস্তান) পাঠানো এবং হিন্দুদের এখানে (ভারত) নিয়ে আসা হতো, তাহলে আজ আর এই পরিস্থিতিতে থাকতাম না। ভারতবাসী যদি এখানে আশ্রয় না পায় তো আর কোথায় যাবে? বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরোধিতায় চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই এসব কথা বলেন এই বিজেপি নেতা। এই আইনে ২০১৫ সালের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া অমুসলিমদের ভারতের নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, এই আইনের মাধ্যমে ভারতের নাগরিকত্বপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে ধর্মের পরীক্ষা দাঁড় করানো হয়েছে যা দেশটির সংবিধানবিরোধী। সিএএ ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির মাধ্যমে ভারতে মুসলিমদের টার্গেট বানানো হচ্ছে বলে দাবি তাদের। যদিও সরকার পক্ষের দাবি, প্রতিবেশী দেশে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার অমুসলিমদের সাহায্য করতেই এই আইন করা হয়েছে। বিজেপি নেতা গিরিরাজ সিং এর আগেও বহুবার বিভিন্ন বক্তব্যের মাধ্যমে মুসলিমদের প্রতি তার বিদ্বেষ প্রকাশ করেছেন। মাত্র চারদিন আগেই তিনি উত্তর প্রদেশের ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় দারুল উলুম দেওবন্দকে ‘সন্ত্রাসের উৎস’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির হিসাবে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাস হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ভারতের রাজনৈতিক নেতারা অন্তত ৬৫বার মুসলিম-বিদ্বেষী বক্তব্য দিয়েছেন। এর মধ্যে ৬১বারই তা এসেছে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতাদের মুখ থেকে। তাদের মধ্যে আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। সম্প্রতি মোদি বলেছেন, সিএএ-বিরোধী সহিংস আন্দোলনকারীদের পোশাক দেখেই চেনা যায়। অন্যতম বিক্ষোভস্থল দিল্লির শাহিনবাগের আন্দোলনকারীদের ভোটের মাধ্যমে ‘বৈদ্যুতিক শক’ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন অমিত শাহ। আর প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর তো সরাসরি গুলিই করতে বলেছেন তথাকথিত ‘বিশ্বাসঘাতকদের’। তবে এসব বক্তব্য প্রত্যাহারের চেয়ে বরং এর পক্ষেই সাফাই গাইতে দেখা গেছে বিজেপি নেতাদের। গিরিরাজ সিংয়ের বুধবারের মন্তব্যের জবাবে দেশটির বামপন্থী নেতা কানহাইয়া কুমার বলেছেন, তিনি (মন্ত্রী) পাকিস্তানের প্রচারণাতেই বেশি সময় পার করছেন। এজন্য তাকে ভিসা মন্ত্রী করা আর তার জন্য লাহোরে একটি ট্র্যাভেল এজেন্সি খুলে দেয়া উচিত। সূত্র: এনডিটিভি।
×