ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইটভাঁটি : দূষণে দুর্বিষহ

প্রকাশিত: ০৭:৪০, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 ইটভাঁটি : দূষণে দুর্বিষহ

পরিবেশ দূষণ আর প্রতিবেশ বৈরিতায় রাজধানীজুড়ে চলছে দুর্বিষহ জীবনযাত্রা। দূষণের ভয়াবহতায় বিপন্ন হয়ে পড়েছে নগরজীবন। কারখানার কেমিক্যাল বর্জ্যে ঢাকার নদী-নালা-খালের সব জলাধার বিষাক্ত হয়ে আছে। বর্জ্য মিশ্রিত পানি শুধু বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু আর শীতলক্ষ্যা নদীকে বিষাক্ত করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি, রাজধানী সংলগ্ন ৩০টিরও বেশি গ্রামের কৃষিক্ষেত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন সেসব এলাকার তিন ফসলি জমিও সারা বছর অনাবাদি পড়ে থাকে। বিষময় বর্জ্যরে ধকলে বোরো ধানের আবাদ পর্যন্ত করা যাচ্ছে না। ফলে জমি-ফসলের উপর নির্ভরশীল লক্ষাধিক কৃষক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, পরিবারগুলোতে নেমে এসেছে অভাবের যন্ত্রণা। এদিকে শব্দ ও বায়ুদূষণে হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট-এ্যাজমাসহ জটিল রোগের শিকার হচ্ছেন নগরবাসী। ঢাকা মহানগরীতে মানুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দূষণ। কিন্তু বাড়েনি প্রয়োজনীয় গাছপালা আর সবুজ বেষ্টনী; বরং কমেছে। রমনা, শাহবাগ, তেজগাঁও, বনানী, গুলশান, বাড্ডা, মানিক মিয়া এভিনিউসহ ঢাকার অন্যান্য রাস্তাঘাট, পার্ক ও উদ্যান থেকেও বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বৃক্ষ। এককালের ছায়া-সুনিবিড় ঢাকা এখন খাঁ খাঁ মরুভূমি যেন। গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইএসএসের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে রাজধানীর সবুজ উধাও হওয়ার ভয়াবহ চিত্র। গাছপালার অভাবে ঢাকার আবহাওয়া ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলেন, ঢাকা আসলে বসবাসের উপযোগী নয়। ঢাকায় পরিবেশের প্রাণ সবুজ বৃক্ষ আর নেই। যেটুকু আছে তা-ও কিছু অংশ বিদেশী গাছ। শুধু গাছ লাগালে হবে না, ঢাকায় দেশী প্রজাতির গাছ লাগিয়ে ব্যাপকভিত্তিক বনায়ন প্রয়োজন। ফলে ক্রমশ হুমকির মুখে পড়ছে জনস্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্য। বায়ুদূষণের শতকরা ৩৫ ভাগ দায়ী অপরিকল্পিত ইটভাঁটি। জনবসতিপূর্ণ এলাকার ৫ মাইলের মধ্যে কোনো ইটভাঁটি নির্মাণ না করার নিয়ম থাকলেও তা কেউ মানে না। সরকারী হিসাব অনুযায়ী দেশে মোট ইটভাঁটির সংখ্যা ১ লাখ ২৬ হাজার ৫১০টি। এর মধ্যে অবৈধ ইটভাঁটির সংখ্যা ১ লাখ ৫১০টি। সবচেয়ে বেশি ইটভাঁটি রয়েছে ঢাকায়। ঢাকা বিভাগে ২৬ হাজার ইটভাঁটির মধ্যে বৈধ মাত্র ৫ হাজার ৫১০টি। সিংহভাগ ইটভাঁটিই গড়ে উঠেছে রাজধানীর মতো ঘন জনবসতিকে ঘিরে। প্রতিমাসে জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদফতর ও বিভিন্ন প্রশাসনিক সংস্থাকে মোটা অঙ্কের মাসোহারা দিয়ে ইটভাঁটিগুলো সচল রাখা হয়। চট্টগ্রাম থেকে
×