ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

লিয়াকত হোসেন খোকন

দূষণমুক্ত নগরী চাই

প্রকাশিত: ০৭:৩৯, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 দূষণমুক্ত নগরী চাই

ঢাকাসহ বড় বড় নগরীর দূষণ নিয়ে বহু লেখালেখি হলেও কোন কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাকে দূষণমুক্ত করার জন্য কত আশ্বাসের পর আশ্বাস শুনে শুনে আমরা অস্থির। কিন্তু ওই আশ্বাস পর্যন্তই- তাই বলতে বাধ্য হচ্ছি, আশায় আশায় দিন গেল, তবুও ঢাকা নগরীকে দূষণমুক্ত নগরী হিসেবে দেখা হলো না। মোদ্দা কথা, ঢাকাকে দূষণমুক্ত করার ব্যাপারে কোন উদ্যোগ, লক্ষণ, প্রচেষ্টা- এর কোনটাই দেখা যাচ্ছে না। দূষণমুক্ত না হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ- ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আজ রাস্তার এখানে, পরদিন রাস্তার ওখানে ভবন নির্মাণের সামগ্রী যেমন- ইট, বালু, সিমেন্ট, ইটের কুচাসহ বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখা এবং তা বাতাসের সঙ্গে মিশে ব্যাপকভাবে দূষণ মাত্রা ছড়িয়ে দিচ্ছে গোটা নগরীর সর্বত্রই। এর সঙ্গে পাড়ামহল্লা- অলি-গলি দখল নিয়ে হকাররা মাছ কাটে, মুরগি কাঁটাকাঁটি করে ময়লা আবর্জনার স্তূপ রাস্তায় ফেলে রাখে; এমনকি রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রস্রাবও করে থাকে- এর দুর্গন্ধ এবং সেইসঙ্গে যানবাহনের কালো ধোঁয়া তো আছেই- যা কিনা দূষণের মাত্রাকে আরও অনেক অনেক বাড়িয়ে দিচ্ছে। দূষণের মাত্রা বেড়ে গিয়ে মানুষের মধ্যে ফুসফুসের রোগ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর নগরীর শিশুদের উপর কী প্রভাব ফেলছে তা প্রমাণিত হয়েছে একাধিক সমীক্ষায়। তাছাড়া ঢাকা নগরীতে প্লাস্টিক-পলিথিনের জঞ্জালে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে অলিতে গলিতে, রাস্তাঘাটে, বিভিন্ন খালে-পয়ঃপ্রণালিগুলোতে এ কারণে প্রায়শই নগরীর পয়ঃপ্রণালিগুলো বন্ধ হয়ে যায় প্রায়- প্রায়। যে জন্য বছরের বিভিন্ন এলাকা যেভাবে জলমগ্ন হয়ে থাকে দিনের পর দিন, তার পরিণতি ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব। ঢাকা নগরীর পরিবেশ দূষণজাত এই সমস্যাগুলো দীর্ঘকালীন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সরকারী ও পরিবেশ সম্পর্কিত বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগ এবং নাগরিকদের সচেতন দায়িত্ববোধের প্রসার ছাড়া ঢাকাসহ বড় বড় নগরীতে দূষণমুক্তি নিশ্চিত করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। অনুরোধ জানাব, ঢাকা নগরীর প্রধান রাস্তা-ফুটপাথ ও অলিগলি হতে প্রথমে হকারদের উচ্ছেদ করতে হবে; রাস্তাঘাটে ও নিকটস্থ জলাশয়ে- পতিত স্থানে যাতে কেউ ময়লা-আবর্জনা না ফেলে রাখেন- এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া; আর যারা ভবন নির্মাণ করবেন তাদের নির্মাণ সামগ্রী যাতে তারা নিজ নিজ এলাকার মধ্যে রাখেন- এ ব্যাপারে তাদেরকে জোরপূর্বক বাধ্য করতে হবে। কথা না শুনলে তাদের শাস্তির আওতায় আনা আবশ্যক। তাহলে কেউ আর রাস্তা দখল করে ইট, বালুসহ নির্মাণ সামগ্রী রাখার সাহস পাবে না। রাস্তাসহ বিভিন্ন খোলা জায়গায় বালুসহ বিভিন্ন ধরনের ময়লা-আবর্জনার স্তূপ নির্মূল করা গেলেই দূষণের মাত্রা কমিয়ে আনা সম্ভব। আর এর বাস্তবায়ন হলেই দূষণের ভয়াবহতা থেকে ঢাকা নগরীসহ বড় বড় নগরীর বাসিন্দারা রেহাই পাবে। রূপনগর, ঢাকা থেকে
×