ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শেয়ারবাজারে হাজার কোটি টাকা লেনদেন

প্রকাশিত: ১০:৩০, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

   শেয়ারবাজারে হাজার কোটি টাকা লেনদেন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শেয়ারবাজারে তারল্য প্রবাহ বেড়েই চলেছে। ব্যাংকগুলোর তারল্য প্রবাহ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ ছাড়ের ঘোষণার পর থেকেই বেড়েই চলেছে শেয়ারবাজারে লেনদেনের পরিমাণ। মঙ্গলবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর মাধ্যমে এক বছরের বেশি সময় পর আবারও হাজার কোটি টাকার লেনদেন দেখা গেল। তবে লেনদেন বাড়লেও বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ লাভে থাকা শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নিয়েছেন। যার কারণে সার্বিকভাবে সূচকের নেতিবাচক প্রবণতা বজায় ছিল। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সকাল থেকে সূচকের ইতিবাচক প্রবণতা থাকলেও এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তোলার প্রবণতা দেখা গেছে সকাল থেকেই। বিশেষ করে গত কয়েকদিন ধরে বাড়তে থাকা শেয়ারগুলোতে বিক্রির চাপ বেশি ছিল। ফলে এই দরপতনের মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস সূচক উর্ধমুখী থাকার পর কিছুটা সংশোধন হলো। গত ৫ দিনে শেয়ারবাজারে সূচক প্রায় ৪শ’ পয়েন্ট বাড়ার পর সূচকের পতন ঘটল। দিনের লেনদেন শেষে মূল্যসূচকের পতন হলেও এদিন শুরুতে বড় উত্থান হয়েছিল। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৫৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে হঠাৎ করেই বদলে যেতে থাকে চিত্র। শেয়ার বিক্রির চাপ থাকায় লেনদেনে অংশ নেয়া একের পর এক প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়। ফলে নিম্নমুখী হতে থাকে সূচক এবং দিনের লেনদেন শেষে তা পতনে রূপ নেয়। দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৩২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমে ১৮৮টির। আর ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত থাকে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক আগের দিনের তুলনায় ২৭ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৭৪০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৫৯০ পয়েন্টে উঠে এসেছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সূচকের কিছুটা পতন হলেও এদিন ডিএসইতে সাড়ে ১৩ মাস পর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। দিনভর বাজারটিতে ১ হাজার ২১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর আগে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি ১ হাজার ২৪ কোটি ৬১ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এরপর আর বাজারটিতে হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়নি। সে হিসাবে এক বছরেরও বেশি সময় পর ডিএসইতে হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, টানা বৃদ্ধির পর শেয়ারবাজারে মূল্য সংশোধন হয়েছে। মুনাফা তোলার কারণে কেনাবেচা বাড়ায় লেনদেন আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। এটি শেয়ারবাজারের জন্য ইতিবাচক। প্রধান শেয়ারবাজারে লেনদেন বাড়ার দিনে টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে সামিট পাওয়ারের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪২ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাফার্জহোলসিমের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। ২২ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে খুলনা পাওয়ার। এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- ওরিয়ন ফার্মা, ন্যাশনাল টিউবস, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, গ্রামীণফোন, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, গোল্ডেন হার্ভেস্ট এবং ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যাল। অপর শেয়ারবাজর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই ২৫ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ৫০৪ পয়েন্টে দঁাঁড়িয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৯০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৩টির এবং ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
×