ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন

প্রকাশিত: ১০:৫৫, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

  ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী ২৯ মার্চ রবিবার অনুষ্ঠিত হবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। একইদিনে বগুড়া-১ এবং যশোর-৬ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রবিবার বিকেলে নির্বাচন কমিশন সচিব মোঃ আলমগীর এই সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তিনি জানান, সিটি নির্বাচন ও উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে আগ্রহীদের ২৭ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবারের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার নিকট তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা ১ মার্চে মনোনয়নপত্র বাছাই করবেন। ৮ মার্চ প্রত্যাহার শেষে ৯ মার্চ থেকে এই নির্বাচনে প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারে নামবেন। এ যাবতকালে প্রায় সব নির্বাচনেই সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে ৪টা পর্যন্ত গ্রহণ করা হলেও এবারই প্রথম চট্টগ্রাম সিটি ও বগুড়া ও যশোর-৬ আসনের উপনির্বাচনে সকাল ৯টা থেকে ৫টা ভোট নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইসি সচিব সাংবাদিকদের বলেন, সকাল ৮টায় মানুষ সাধারণ ঘুম থেকে উঠে ভোট দিতে যায় না। একইদিক বিবেচনা করে এবার ভোট গ্রহণ ১ ঘণ্টা পরে শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে সবগুলো কেন্দ্রে ইভিএম মেশিন ব্যবহার করে ভোট গ্রহণ করা হবে। অপরদিকে বগুড়া ও যশোরের উপনির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট নেয়া হবে। বেলা ৩টায় চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন ও বগুড়া যশোরের একটি আসের উপনির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিতে কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মোঃ রফিকুল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, কবিতা খানম ও সচিব মোঃ আলমগীরসহ ইসির শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কমিশনের ৬১তম এই সভায় নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হয়। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ হাসানুজ্জামান। অপরদিকে বগুড়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বগুড়া-১ আসনের এবং যশোর-৬ আসনের জন্য যশোর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচন কমিশন সচিব বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা রোজা বিবেচনায় নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন ২৯ মার্চ ধার্য করা হয়েছে। আগামী এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষাসহ এই পরীক্ষা শেষ হবে ৫ মে। এছাড়া পবিত্র রমজান মাস রয়েছে। এগুলো বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে ২৯ মার্চ এই নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। ইভিএমে ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে সহায়তাকারী হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এজেন্টরা গোপন কক্ষে অবস্থান করেছে। এটা প্রতিরোধে এবার কী ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে ইসি সচিব বলেন, এ ধরনের কাজ করার সুযোগ নেই। নির্বাচন করা একক কারো দায়িত্ব নয়। এটার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের (ইসি), যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন সেসব প্রার্থীর, তাদের সমর্থকদের, ভোটারের এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। সবাই যদি যার যার দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে এই ধরনের ঘটনা ঘটার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে সব দলই অংশ নেবেন বলে আমরা আশাবাদী। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু ভোট করার জন্য যা যা দরকার কমিশন তা করবে। সকল ভোটারকে বলব- নির্ভয়ে, নিশ্চিতে আপনার যে অধিকার রয়েছে তা প্রয়োগ করবেন। ২০১৫ সালে ঢাকার দুই সিটির সঙ্গে নির্বাচন হলেও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নতুন পর্ষদের দায়িত্ব পালন পরে শুরু হয়েছিল। সেজন্য ফেব্রুয়ারি মাঝামাঝি থেকে ১৮০ দিন গণনা শুরু হয়। চট্টগ্রাম সিটির মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের জুলাইয়ে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আইন অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ছয়মাসের মধ্যে বা ১৮০ দিনের যে কোন সময় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এছাড়া আইন অনুযায়ী মেয়র পদে থেকে মেয়র নির্বাচনে অংশ নেয়া যাবে না। পদ থেকে পদত্যাগ করেই নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। তবে কাউন্সিলর পদে থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া যাবে। সিটি নির্বাচন আইন অনুযায়ী শুধু মেয়র পদে ভোট হবে দলীয় ভিত্তিতে। ইসির নিবন্ধিত কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হতে হলে অবশ্য আগে দল থেকে মনোনয়ন নিতে হবে। দল যাকে মনোনয়ন দেবে রিটার্নিং কর্মকর্তা সেই প্রার্থীর অনুকূলেই দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেবেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে ৩শ’ ভোটারের সমর্থনযুক্ত স্বাক্ষর জমা দিতে হবে। তবে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের জন্য কোন দলের মনোনয়নের প্রয়োজন নেই। এদিকে গত ১৮ জানুয়ারি সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নানের মৃত্যুতে বগুড়া-১ এবং ২১ জানুয়ারি সংসদ সদস্য ও সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুতে যশোর-৬ আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়। সংসদীয আসনের নির্বাচনে নিয়ম অনুযায়ী আসন শূন্য ঘোষণার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে। এদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য তৎপরতা শুরু করেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম সিটিতে মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য প্রার্থী মনোনয়ন সম্পন্ন করেছে। বিএনপির এখনও প্রার্থী চূড়ান্ত না করলেও দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আর কোন নির্বাচন তারা বর্জন করবে না। এদিকে গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনর নির্বাচনেও বিএনপি অংশ নেয়। তবে নির্বাচনে তারা আওয়ামী লীগের প্রার্থীর নিকট পরাজিত হলেও নির্বাচন ছিল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ।
×