ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফিটনেসহীন যান চলাচল বন্ধে টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ

প্রকাশিত: ১০:২৮, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

  ফিটনেসহীন যান চলাচল বন্ধে টাস্কফোর্স  গঠনের নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশন নেই এমন সব যানবাহন চলাচল বন্ধ ও নতুন সড়ক আইন-২০১৮ বাস্তবায়নে দেশের প্রত্যেক জেলায় টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এদিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেড ( আই এল এফএস এল ) আর্থিক পরিস্থিতি জানতে প্রতিষ্ঠানটির স্বাধীন চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খালেদকে ডেকেছে আপীল বিভাগ। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি তাকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে নির্বাহী পরিচালকের নিচে নন বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন একজন কর্মকর্তাকেও ওইদিন হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। রবিবার আপীল বিভাগ ও হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেছে। ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশন নেই এমন সব যানবাহন চলাচল বন্ধ ও নতুন সড়ক আইন-২০১৮ বাস্তবায়নে দেশের প্রত্যেক জেলায় টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এই টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসকদের দ্বারা টাস্কফোর্স গঠন করতেও বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসকরা প্রয়োজন মনে করলে এতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও বিআরটিএ প্রতিনিধিসহ অন্যদের অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। আদালত জানিয়েছে, এই টাস্কফোর্স সব গাড়ির কাগজপত্র যাচাই করতে পারবে এবং ফিটনেসবিহীন ও রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়ি জব্দ, চালককে গ্রেফতার, জরিমানা ও গাড়ি ডাম্পিং করতে পারবে। এছাড়া এ আদেশের অগ্রগতি প্রতিবেদন আগামী তিন মাস পর হাইকোর্টকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ১ জুন মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী এ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না। অন্যদিকে, বিআরটিএর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মঈন আলম ফিরোজী ও রাফিউল ইসলাম। এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি বিআরটিএ ও বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ওই প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিআরটিএ আদালতকে জানায়, তারা জনবল সঙ্কটের কারণে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে পারছে না। তাই তারা টাস্কফোর্স গঠনের আবেদন করে। বিআরটিএ তাদের প্রতিবেদনে আরও জানায়, ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৬ লাখ ৫ হাজার ৭৬৪টি পরিবহন ফিটনেস সনদ নিয়েছে। পুলিশের প্রতিবেদনে জানানো হয়, তারা হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক প্রত্যেক ফিলিং স্টেশন ও পেট্রোল পাম্পগুলোতে ফিটনেসবিহীন গাড়িতে জ্বালানি সরবরাহ না করতে নোটিস দিয়েছে এবং তারা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। প্রসঙ্গত, ৭১ হাজার ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ে ২০১৯ সালের ২৩ মার্চ একটি জাতীয় ইংরেজী দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এসব আদেশ দেয়। প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। ইব্রাহিম খালেদকে ডেকেছে আপীল বিভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) আর্থিক পরিস্থিতি জানতে প্রতিষ্ঠানটির স্বাধীন চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খালেদকে ডেকেছে আপীল বিভাগ। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি তাকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে নির্বাহী পরিচালকের নিচে নন বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন একজন কর্মকর্তাকেও ওইদিন হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপীল বিভাগ রবিবার এ আদেশ দিয়েছে। আইএলএফএসএল-এর করা এক আবেদনে এ আদেশ দেয় আদালত। আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এ্যাডভোকেট আহসানুল করিম, ব্যারিস্টার খায়রুল আলম চৌধুরী। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত এ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। এই শুনানিকালে আদালত উদ্বেগ প্রকাশ করে বলে, ব্যাংকসহ দেশের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা দেখে আদালত চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না। আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ করে বলে, আপনারা আর্থিক খাতকে বাঁচান।
×